মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সকল প্রকার করোনা সংক্রামন আল্লাহ পাক উঠিয়ে নিবেন যদি এ গোলামের একটি অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য শর্ত মেনে নেন। এ ব্যাপারে আপনার সরকারের সঙ্গে যে কোন শর্তে আমি চুক্তিবদ্ধ হতে রাজি আছি। এ গোলামের ক্ষুদ্র ও নগন্য শর্তটি মেনে নেয়ার এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সকল প্রকার করোনা সংক্রামন চলে না গেলে চুক্তিতে বর্ণিত সকল প্রকার শাস্তি আমি বিনা আপত্তিতে মেনে নিব। এ ব্যাপারে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোন আপত্তি করতে পারবে না। বাংলাদেশ থেকে সকল প্রকার করোনা সংক্রামন চলে গেলে এ গোলামের দ্বিতীয় শর্ত মেনে নিলে দুই থেকে চার মাসের মধ্যে সারা পৃথিবীর সকল প্রকার করোনা সংক্রামন আল্লাহ পাক উঠিয়ে নিবেন ইনশাআল্লাহ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপাতত এরূপ কথা শুনতে পাগলের প্রলাপের মত হাস্যকর, উদ্ভট, অস্বাভাবিক, অবাস্তব, অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়, অযুক্তিকর ও অসম্ভব মনে হওয়াই যুক্তিসংগত। কিন্তু সমগ্র সৃষ্টির স্রষ্টা ও মালিকের পক্ষে এ কাজটা করাও কি অসম্ভব? এ কাজটা তো তিনিই করবেন যিনি স্থায়ীকে নাই করতে পারেন, নাইকে স্থায়ী করতে পারেন এবং অসম্ভবকে সম্ভবে পরিনত করতে পারেন। তার কুদরতকে অস্বীকার করা তো প্রক্রান্তরে আল্লাহকেই অস্বীকার করার সামিল। আমি তো তার একজন দাস মাত্র। করোনার হাত থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রান বাঁচাতে এই সুযোগটা গ্রহণ করুন। আমি সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে শতভাগ দৃঢ় হয়ে এই প্রতিজ্ঞা করছি। ফেইসবুকের খোলা চিঠিতে এর চেয়ে বেশী কিছু লিখতে চাই না। তারপরও যদি কেউ প্রশ্ন করতে চায়, যে আল্লাহ অলৌকিকভাবে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের করোনা উঠিয়ে নিতে পারেন তিনি কি আপনার ক্ষুদ্র শর্ত বা চাওয়া পূরণ করে দিতে পারেন না? উত্তর, "অবশ্যই পারেন"। তবে তিনি কারো ইচ্ছায় কোন কাজ করেন না। তিনি নিজের ইচ্ছায় কাজ করেন এবং কাউকে দিয়ে কাজ করান। তিনি পবিত্র কোরআনে বলেছেন, "বল, আল্লাহ সারা বিশ্বের মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান করেন এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব কাড়িয়া নেন"। বর্তমানে কি তিনি তার এ কাজ করছেন না? যে দেশে যে নিয়ম আছে সেই নিয়মের মাধ্যমে তিনি কাজ করছেন। কোন কোন দেশে রাজার মৃত্যু ঘটিয়ে অন্য একজনকে রাজা বানান। আমাদের শেষ নবীকে আল্লাহ রাজত্ব দান করেছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন কায়দায়। সারা জগতের যিনি রহমত সেই নবী আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় রাতের অন্ধকারে চুপিসারে অনেক কৌশল করে মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় হিজরত করেছিলেন। তিনি তো দিনের বেলায়ও হিজরত করতে পারতেন। আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) যার পর আর কোনো নবী আসবে না তার জীবনের ঘটনাবলী থেকে আমাদের সকলের অনেক শিক্ষনীয় বিষয় আছে। তিনি মদিনার তায়েফে ইসলাম প্রচার করতে গেলে তায়েফবাসীরা নবীর ওপর অনেক অত্যাচার, নির্যাতন, এমনকি রক্তাক্ত করে। এদিকে মক্কার কোরাইশ সর্দারগণ নবীজীকে আর মক্কায় ঢুকতে না দেয়ার পণ করে। সে সময় তিনি মক্কার সন্নিকটে নাখলা নামক এক জায়গায় এসে সমাজের নিয়মনীতি অনুযায়ী মক্কার এক সর্দারের নিকট আশ্রয় চেয়ে একজন দূত পাঠান। তিনি আশ্রয় দিতে অস্বীকার করায় দ্বিতীয় আরেক সর্দারের নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে আরেকজন দূত পাঠান। সেও তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করায় তৃতীয় আরেকজন সর্দারের নিকট আশ্রয় চেয়ে দূত পাঠালে তিনি তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হলেন। তার নাম মোৎয়েম। নবীজীর জীবনের এ ঘটনাগুলো আপনারা কিভাবে বিচার করবেন? এমন ঘটনার নজির ওলী আওলিয়াগণের জীবনেও দেখা যায়। "তাজকেরাতুল আওলিয়া" বইটিতে হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) সম্পর্কে লেখক বলছেন যে, তিনি ছাত্র জীবনে প্রচন্ড অভাব অনটনে পড়ে বেশ কয়েক দিন অর্ধাহার ও অনাহারে কাল কাটিয়ে শারীরিক ও মানসিক বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছিলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ পাক তাকে ধার করার পরামর্শ দেন। তিনি আল্লাহকে জানালেন, "আমি ধার করলে তা পরিশোধ করব কিভাবে?" আল্লাহ পাক তাকে জানালেন, "তুমি ধার কর আমি তা পরিশোধ করার ব্যবস্থা করব"। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, আল্লাহ পাক দুনিয়ার নীতির মধ্যে তাকে সাহায্য করেছিলেন। তিনি তো তৎক্ষণাৎ নগদ টাকা বানিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু আল্লাহ পাক তা করেন নাই। হিন্দু শাস্ত্রেও এরকম অনেক ঘটনার কথা উল্লেখ আছে।যেমন, শ্রীকৃষ্ণ তার প্রধান সারথী (ভক্ত) অর্জুনকে বলেছিলেন, "হে অর্জুন! তুমি তোমার স্বজাতির সাথে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ কর"। অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে বললেন, "প্রভু ! এতে অনেক স্বজন নিহত হবে, এটা আমি পারবো না"। শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন, "হে অর্জুন! তুমি যদি এ কাজটা না কর তাহলে ভগবান অন্যকে দিয়ে তাদেরকে নিহত করবেন। কিন্তু ভগবান চান তোমাকে দিয়ে এ কাজ করিয়ে তোমাকে কৃতিত্ব দিতে"। এরপর অর্জুন স্বজাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে রাজি হলেন। এখানেও দেখা গেল যে সৃষ্টিকর্তা কোন কাজ করানোর জন্য জাগতিক নিয়ম ব্যবহার করলেন। সেই চিরঅমর সৃষ্টিকর্তা কি তার কুদরত প্রকাশ করার জন্য এখন জাগতিক নিয়মে কাউকে ব্যবহার করতে পারেন না? যাই হোক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি আপনি যে কেউই তো করোনায় আক্রান্তদের কাতারে সামিল হতে পারি? যিনি আসমান জমিনের মালিক যার হাতে আমার জীবন মরণ তার শপথ করে আমি বলছি, এ গোলামের একটি মাত্র ক্ষুদ্র চাওয়া পূরণ করলেই তিনি এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সকল প্রকার করোনা সংক্রামন উঠিয়ে নিবেন। আমার এই অঙ্গীকার মিথ্যা প্রমানিত হলে আপনি আমাকে জেল, ফাঁস যা কিছু দিতে চান তা আমি মাথা পেতে নিব।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি নিজে এ যাবৎ অনেক সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমার মত এই অতি ক্ষুদ্র, নগন্য, অসহায়, পাপী, তাপী, কাঙ্গালের আরজিটি গ্রহণ করুন। উল্লেখ্য, আমি আমার শর্ত বা চাওয়ার কথাটা শুধুমাত্র আপনার কাছেই বলতে চাই।
বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি আহ্বায়ক সমিতি
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট অদ্বীতিয় খোলা চিঠি
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




