দীঘির জলে আকাশ দেখছে মেয়েটি। একা, নিঃসঙ্গ। গোধূলির আলো-ছায়ায় এক মায়াবী আবেশ চারপাশে। দীঘির জল ছুঁয়ে আসা বাতাস স্নিগ্ধতার পরশ বুলিয়ে যায় দেহ-মনে। এলো চুলে বাতাসের লুকোচুরির খেলা। কিন্তু মেয়েটি এসবের কিছুই দেখছেনা। দিশেহারা দৃষ্টি সেই দূর অনন্তে ... ...
***
: রাজকন্যা, রাতে একটু আসবা?
: কেন?
: একটা জিনিস দেখাবো
: কি?
: এসো, তখন দেখবা
: না, এখন বলো
: না, এখন বলবো না
: কেন?
: এখন বললে আর মজা থাকবে না
: রাতে কখন?
: ঠিক ১০ টায় এখানে আসবা
: এতো রাতে?
: হুম
: না, এতো রাতে আমি আসতে পারবো না
: কেন, কি সমস্যা?
: রাতে আমার ভয় করে
: ধুর বোকা, ভয় কিসের, আমি আছি না
***
আজকের আকাশটা অনেক সুন্দর, তাই না?
হুম, আকাশ ভর্তি তারা দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে। কেমন যেন একটা নৈস্বর্গিক মায়া আছে। আমার যখন খুব মন খারাপ হয়, আমি তখন রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার মন ভালো হয়ে যায়।
আচ্ছা, এইসব কথা বলার জন্য আমাকে আসতে বলছ? আমাকে না তুমি কি দেখাবা, কই?
দেখাবো, আর একটু ...
*
রাজকন্যা, আকাশের দিকে তাকাও, দেখো -
কি, কিছুই তো দেখি না, কি দেখবো?
হাত তুলে দেখায় ছেলেটা। তারার বৃষ্টি, অনেকগুলো তারা একসাথে খসে পড়ছে ...
.
.
.
.
.
অনেকে বলে, খসে পড়া তারা দেখে কিছু চাইলে তা পাওয়া যায়, সত্যি হয়। আমি বিশ্বাস করি না। তুমি বিশ্বাস করো রাজকন্যা?
মেয়েটির চোখ টলটল করছে, আনন্দের অশ্রু। ভালোবাসার নিবিড় দৃষ্টি। তুমি এতো ভালো কেন?
তুমি ভালো রাজকন্যা, তাই তোমার সব কিছুই ভালো লাগে। মেয়েটি জড়িয়ে ধরলো ছেলেটিকে, ভালোবাসার নিবিড় বন্ধন।
***
রাস্তার পাশে অনেক মানুষের ভিড়, চাপা উত্তেজনা সবার চোখেমুখে। কিছুক্ষন আগে একটি এক্সিডেন্ট হয়েছে, বাস একটি ছেলেকে চাপা দিয়ে পালিয়ে গেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে ছেলেটি শুধু একটি রক্তাক্ত মাংসপিণ্ড মাত্র। অনেকক্ষণ আগেই প্রাণপাখি উড়াল দিয়েছে অনন্তের পথে।
***
... ... দুরের আকাশে একটা/দুটো করে তারা ফুটে উঠছে। দেখতে দেখতে পুরো আকাশ ভরে উঠলো তারায় তারায়। একটি তারা তার মধ্যে একটু বেশীই উজ্জ্বল। মনে হচ্ছে অনেক কাছে, হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। অপলক তাকিয়ে দেখছে মেয়েটি। তারার বুকে অস্পষ্ট এক মুখচ্ছবি, ঠোঁটে মুচকি হাঁসি। মেয়েটি তাকিয়ে দেখছে, সবটুকু ভালোবাসা মিশে যাচ্ছে দীঘির জলে ...

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






