চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বসে আছে আনিস। গরুর দুধের চা, উপরে স্বর ভাসছে। ইয়াকুবের স্পেশাল চা। আনিসের খুব পছন্দ।
কিন্তু আনিস চা খাচ্ছে না, তার মাথায় অন্য চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। গতকাল বিকেল থেকে একটা কিছু লিখতে চাচ্ছে কিন্তু পারছেনা। যখনই লিখতে বসে, শব্দগুলো লুকিয়ে পড়ে মস্তিষ্কের ঝুপঝাড়ের আড়ালে। শত চেষ্টা করেও বের করতে পারছেনা। ব্যপারটা তার মধ্যে চরম বিরক্তির উদ্রেক করছে।
আনিস ভাই, ও আনিস ভাই
হুম!
চা খাইতেছেন না কেন?
হুম!
ঠান্ডা হয়ে যাইতেছে তো
হুম, খাই
ইয়াকুব ছেলেটা অনেক ভালো। ছোট একটা চায়ের দোকান চালায়। বেচাকেনা বেশ ভালো। তাকে অনেক সম্মান করে। যখনই আসে অনেক যত্ন করে চা বানিয়ে খাওয়ায়। অনেক ব্যক্তিগত বিষয়েও তার সাহায্য চায়। ছেলেটাকে আনিস বেশ পছন্দ করে।
রাত ১১ টা বাজে। বাসায় ফেরা দরকার। গেট বন্ধ হয়ে গেলে আরেক ঝামেলায় পড়তে হবে। চায়ের দাম দিয়ে আনিস হাটা ধরলো বাসার দিকে।
আকাশ ভেঙে জোৎস্না নেমেছে। জোৎস্না তার অনেক পছন্দ। স্নিগ্ধ আলোয় পথ চলতে বরাবরই ভালো লাগে আনিসের। কেমন একটা সৌম্য ভাব খেলা করে চারপাশে।
হাটতে হাটতেই শুনতে পেলো কে যেন গান গাইছে, জোৎস্নার গান,
"আজ জোৎস্না রাতে, সবাই গেছে বনে"
পাশের বাসার বারান্দায় দাড়িয়ে একটা মেয়ে গান গাইছে। জোৎস্নার আলোয় অপূর্ব মূর্ছনায় ছেয়ে গেলো চারপাশ। সব ভুলে নিবিড় হয়ে শুনছে আনিস।
হঠাৎ সংবিত ফিরে পেলো, কি যেন একটা পরিবর্তন ঘটে গেছে। অস্থির চিত্তে জোৎস্নার বুক চিরে ব্যস্ত পায়ে হেটে চললো বাসার দিকে।
লিখছে আনিস, মাথার ভিতর জট বেধে থাকা, ঝুপঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা শব্দগুলো বের হয়ে আসছে একে একে, জোৎস্না পোহাতে --
জোৎস্নার বাকাঁ আলো জানলার গ্রিল গলে ভাসিয়ে দিচ্ছে সব জড়তা!!!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






