জার্মানীতে অবস্থান করা এক ব্যাটা নাস্তিক বলে স্রষ্টা আকাশ আর পৃথিবীকে ডাক দিলো আর আকাশ ও পৃথিবী গেলো আর তিনি জগৎ বানাইয়া দিলেন।আল কোরআনের একটি আয়াত নিয়ে ব্যাটা নাস্তিক আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা লাইভে এত হাসাহাসি করে খুব কষ্ট লাগে।কথা বলার চেষ্টা করলে কথা বলার সুযোগ দেয় না নিজেই ভগর ভগর করে লাইন কেটে দেয়। আয়াতটি হলো হামিম সিজদা সুরা এর 12 নং আয়াত - “অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ছিল ধূম্রপুঞ্জবিশেষ। অতঃপর তিনি ওকে (আকাশকে) ও পৃথিবীকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এস।’ ওরা বলল, ‘আমরা তো অনুগত হয়ে আসলাম।” পরবর্তী আয়াতে আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে।
প্রিয় পাঠক এই আয়াতের মধ্যে আমি তো হাসির কোন খোরাক পেলাম না। বরং গোপন নিগুঢ় তত্ত্ব পেলাম। যে তত্ত্ব 1400 বছরের পুরানো আল কোরআনে কিভাবে এলো এটাই এখন ভাবার বিষয়? আল কোরআন যদি স্রষ্টার তথ্য না হতো তবে এত গভীর বিজ্ঞান কি করে পেলো সেই 1400 বছর আগে? এই নিয়েই আমি আরো রিতীমতো স্তম্ভ হয়ে যাচ্ছি।
এবার আসুন আমরা আসল কথায় আসি। ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী মারকুইস ডি ল্যাপলাস 1796 খ্রিস্টাব্দে সৌরজগতের উৎপত্তি সংক্রান্ত তার নীহারিকা মতবাদ প্রকাশ করেন। মতবাদটি তার "Exposition of the Solar System"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন। এই মতবাদটি 1755 খ্রিস্টাব্দে ইমানুয়েল কান্টের দেওয়া নীহারিকা মতবাদ এর তুলনায় অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত। মারকুইস ডি ল্যাপারাস ছাড়াও অনেক বিশেষজ্ঞ বলেন, আদিতে পৃথিবী ও সৌরজগৎ অবস্থান ছিল এক ধোঁয়াশার মধ্যে। সেটা ছিল সুবিশাল আকৃতির নীহারিকা। মহাকাশে ঘূর্ণায়মান লক্ষ লক্ষ মাইল ব্যাপী ধুলোর মেঘ একত্র হয়ে এই নীহারিকা গড়ে তুলেছিল। পরে মহাকর্ষ বলের প্রভাবে নীহারিকার মধ্যে বিভিন্ন অণু-পরমাণু যতই পরস্পরের নিকটবর্তী হয়েছে, ততই পরস্পরের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে এবং তাদের গতিশীলতা থেকে উদ্ভূত শক্তি তাপে রূপান্তরিত হয়ে তাদের গতিশীলতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
পরবর্তীতে তাপ বিকিরণের ফলে নীহারিকাটি সংকুচিত হতে থাকে এবং সংকুচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার গতিবেগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। একসময় ঘূর্ণন বেগ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যে সেই নীহারিকার নিরক্ষীয় অঞ্চলে অভিকর্ষজ বল এবং কেন্দ্র বহির্মুখী বল পরস্পর সমান হয়। নীহারিকাটি যখন আরো সংকুচিত হয় তখন নীহারিকার বাইরের বলয় আকার অংশ সংকোচনে অংশগ্রহণ না করে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওজন শূন্য অবস্থায় নিজের জায়গায় স্থির ভাবে ভাসতে থাকে। নীহারিকাটি সংকুচিত হতে থাকায় একাধিক বলয় আকার অংশ বিচ্ছিন্ন হয়। বিচ্ছিন্ন বলয় আকার অংশ একত্রিত এবং ঘনীভূত হয়ে গ্রহের সৃষ্টি হয়। গ্রহগুলির ক্রমশ সংকুচিত হওয়ায় বলয় আকার অংশ বিচ্ছিন্ন হয়। বিচ্ছিন্ন বলয় গুলি একত্রিত হয়ে উপগ্রহের সৃষ্টি করে। নীহারিকার কেন্দ্রীয় অংশ সূর্যরূপে অবস্থান করে।
নীহারিকা অনুকল্প নামের এই বহুল পরিচিত ও সর্বজনগৃহীত মডেলটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন Emanuel Swedenborg, ইমানুয়েল কান্ট এবং পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস, সেই ঊনবিংশ শতাব্দীতে। পরবর্তীতে বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখার সক্রিয় অংশগ্রহণে মডেলটির উন্নতি ঘটেছে যার মধ্যে রয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব এবং গ্রহ বিজ্ঞান। ১৯৫০-এর দশকে মহাকাশ যুগের সূচনা ঘটা এবং ১৯৯০-এর দশকে বহির্গ্রহ আবিষ্কৃত হতে শুরু হওয়ার পর অনেকেই এই মডেলের পুনর্বিশ্লেষণ বা সমালোচনা করছেন। নতুন আবিষ্কারগুলোকেও এই অনুকল্পের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় কিনা সেটিই তাদের প্রশ্ন।
প্রাথমিক অবস্থা থেকে সৌরজগৎ অনেক বিবর্তিত হয়েছে। কোন গ্রহের চারদিকে আবর্তনরত গ্যাস ও ধূলিকনার চাকতি থেকে তার উপগ্রহ তৈরি হয়ে থাকতে পারে, আবার কিছু উপগ্রহ ভিন্ন জায়গায় উৎপন্ন হয়ে পরবর্তীতে গ্রহের মহাকর্ষীয় বন্ধনে ধরা দিতে পারে।
আমি আয়াতটি আরো একবার তুলে ধরছি। আয়াতটি হলো হামিম সিজদা সুরা এর 12 নং আয়াত - “অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ছিল ধূম্রপুঞ্জবিশেষ। অতঃপর তিনি ওকে (আকাশকে) ও পৃথিবীকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এস।’ আয়াতটিতে ধুম্রপুঞ্জ বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকার কথা বলা হয়েছে। নিম্নের চিত্রের দিকে লক্ষ করুন । A অংশ টুকু লক্ষ করুন। আগুন আগুন ধোয়া ধোয়া। যেটি একটি নীহারিকা। এই নীহারিকা পরবর্তী রুপ B অংশ। অগ্নিময় ধোয়াময় গ্যাসীয় নীহারীকার মাঝে অগ্নিময় হয়ে উঠছে ও সকল দিকে ঠান্ডা হচ্ছে। পরবর্তী C অংশ দেখুন সকল অংশ প্রায় ঠান্ডা হয়ে গেছে শুধু সূর্য অংশটুকুই অগ্নিময়। তারপর দেখুন D অংশটুকু ঠান্ডা হয়ে গ্রহ জন্ম নেওয়া শুরু করেছে । এবং পরবর্তী E অংশে সকল গ্রহের সৃষ্টি হয়ে গেছে এবং গ্রহের গতিশীলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
প্রিয় পাঠক, যে আয়াত টি বিজ্ঞানময় সেই আয়াত নিয়ে ওরা উপহাস করে কি করে বুঝিনা? অনেকদিন ধর্ম নিয়ে লিখি না। কিন্তু এসকল নাস্তিকদের কথা বার্তা খুব কষ্টদায়ক বলে মনে হচ্ছে। তাই লিখতে শুরু করলাম। ওদের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া পর্য্নত আমার কোন নিস্তার নেই। পরবর্তী দিন আরেকজন মুখোশধারী আরেক নাস্তিকের প্রশ্নের জবাব দিবো। ইনশাল্রাহ। আল্লাহ সহায় হোন
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:১২