somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৃষ্টির সময়কালে মহাবিশ্ব এর গতি আমাদের বলে দেয় এটি পরিকল্পিত সৃষ্টি।

১৩ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হঠাৎ, একটি আলো হতে দ্রুত গতিতে সম্প্রসারিত হয়। একে বলা হয় কসমিক ইনফ্লেশন। এর স্থায়িত্বকাল 10^-32 সেকেন্ড। এ ক্ষুদ্র সময়েই আমাদের মহাবিশ্ব পূর্বের তুলনায় 10^26 গুণ বড় হয়েছে। কিন্তু এর পর মুহুর্তে তা স্বাভাবিকভাবে প্রসারিত হতে থাকে।
বিগব্যাং এর পর থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রতিটি পর্যায়ে এক পরিকল্পনাকারীর সুষ্ঠ পরিকল্পনার দ্বারা এই মহাাবিশ্ব নিয়ন্ত্রিত। প্রতিটি পদক্ষেপই একটি নিয়ম দ্বারা নির্ধারিত।



প্রকৃতই সৃষ্টির শুরুতে প্রকৃতির মাঝে একটি উদ্দেশ্য নিয়োজিত ছিলো প্রাণীজগত এবং মানুষ। এবং এই মানুষ সৃষ্টির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কারনে সৃষ্টিকূলে এতটা সুশৃংখলা নির্ধারিত রয়েছে। যদি মানুষ সৃষ্টিই স্রষ্টার উদ্দেশ্য না হতো তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই এতটা সুক্ষ সমন্ময় থাকতো না। সুগভীর পরিকল্পনার ছাপ এতটা প্রকট আকারে দেখা দিতো না। গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে বিগব্যাাংগ এর সৃষ্টি হয়েছে একটি বাসযোাগ্য পৃথিবীর জন্য, যা মানুষের বসবাসের উপযোগী। বর্তমানের আধুনিক বিজ্ঞান প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে যে বিগব্যাংগ বা মহাবিস্ফোরনটিও ছিলো হিসেবের নিত্যতা এবং সুক্ষসমন্ময় দ্বারা গড়া একটি মহৎ পরিকল্পনা। বিগব্যাংগ ঘটেছিলো একটি নির্দীষ্ট গতিতে। বিগব্যাং ঘটার পরে মহাবিশ্বটি সম্প্রসারিত হতে থাকে। ষ্ট্যার্ন্ডাড বিগব্যাং মডেল অনুসারে এক মহাক্ষুদ্র আদি ঘনায়িত শক্তি পিন্ড মহাগর্জন করে এক মহাবিস্ফোরনের মাধ্যমে ১০^-৪৩ সেকেন্ড সময়কালে সৃষ্টি করে এই মহাবিশ্ব। সৃষ্টির সময় মহাবিশ্ব ১০^-৩২ k কেলভিন উত্তপ্ত অবস্থায় ছিলো।

অকল্পনীয় শক্তির ঘনায়নে থাকা অবস্থায় এক মহাবিস্ফোরনের সাথে সাথে আশ্চার্য রকম গতিতে মহাসম্প্রসারন হতে শুরু করে। যা আজো পযর্ন্ত সেই মহাসম্প্রসারন চলছে। সেই মহাসম্পসারণটি একটি নির্দীষ্ট গতিতে ঘটেছে বলেই চরম উত্তপ্ত মহাবিশ্বটি গ্যালাক্সি, নক্ষত্র গ্রহ পৃথিবী সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। নিদীষ্ট ও পরিকল্পিত একটি গতিতে মহাবিশ্বটি সম্প্রসারিত হয়েছে। গতিটি ১০০% পারফেক্ট ছিলো বলেই মহাবিশ্ব, পৃথিবী এবং মানুষ সৃষ্টি হতে পেরেছে। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এ্যালেন গুথ মহাবিশ্বের এই সুনিয়ন্ত্রিত সম্প্রসারণ হার দেখে স্তম্ভিত হয়ে বললেন “এই সম্প্রসারনের হার এতটাই সুনিয়ন্ত্রিত, যেখানে ভুলের সম্ভাবনা ১/১০^৫৫। এত সুক্ষ এবং সুনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা বা বা প্রক্রিয়া কোনো হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা হতে পাওয়া অসম্ভব। বিগব্যাং যদি হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো অনিয়ন্ত্রিত ঘটনা হতো তবে এই প্রক্রিয়া এতটা সঠিক এবং উপযুক্ত ভাবে চলতে পারতো না। তাই বলা যায় এটি অবশ্যই একটি নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া।”


মহাবিশ্ব সম্প্রসারনের এই নিখুত গানিতিক বিষয়টি পর্যলোকন করে অনেকেই চমকে ওঠেন! বিশিষ্ট পর্দাথবিজ্ঞানী পল ডেভিস বিগব্যাংগের পর মহাবিশ্ব যে গতিতে সম্পসারিত হচ্ছে তা নিয়ে চমকপ্রদ এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মতে সম্প্রসারনের গতিটি ১০০% পারফেক্ট ছিলো। তার হিসাব মতে সেই গতিবেগের কোটি ভাগের ১ ভাগ যদি কম বেশি হতো তবে এই (habitable universe) বাসযোগ্য বিশ্বজগত সৃষ্টি হতো না। এ প্রসঙ্গে পল ডেভিস বলেন “ সুক্ষভাবে হিসেব-নিকেশ করে দেখা যাচ্ছে যে বিগব্যাং এর পর বিশ্বজগতের সম্প্রসারনের গতির মাত্রা ছিলো ঠিক ততোটুক্ইু যে মাত্রায় সম্প্রসারিত হওয়া শুরু করলে বিশ্বজগত তার নিজস্ব মাধ্যাকর্ষন-শক্তির কবল থেকে মুক্ত হয়ে অনন্তকালের জন্য সুশৃংখলভাবে সম্প্রসারিত হতে পারে। সম্প্রসারণের গতিবেগ সামান্যতম কম হলে এ বিশ্¦জগত ধ্বংশ হয়ে যেতো। আবার গতিবেগ সামান্যতম বেশি হলেও বিশ্বজগতেরর সবকিছু বহু আগেই বিশৃংখলভাবে ছড়িযে ছিটিয়ে অদৃশ্য হয়ে যেতো।

স্পষ্টতই বিগ ব্যাং কোনো সাধারণ বিস্ফোরন ছিলো না, ছিলো সুক্ষভাবে পরিকল্পিত একটি বিশাল ঘটনা - W.R.Bird, The Origin of Species Revisited, Nashville: Thomas Nelson, 1991; originally published by Philosophical Library in 1987, p.405-406) পল ডেভিসের ভাষায় “সাধারন বিস্ফোরন ছিলো না, ছিলো সুক্ষভাবে পরিকল্পিত একটি বিশাল বিস্ফোরন”। বিস্ফোরনের গতিবেগের উপর নির্ভর করেছিলো সম্প্রসারনের গতিবেগের হার। বিস্ফোরনের গতিবেগ যদি কম হতো তবে সম্প্রসারণের হার হতো কম গতিতে ফলে আইনষ্টাইনের রিলেটিভিটি সুত্র অনুযায়ী মহার্কষ আকর্ষনের কারনে বস্তু সমূহ সম্প্রসারিত হতে থাকলেও সৌরজগতের নির্মানের আগেই পুরো মহাবিশ্ব পূনরায় আবার সংকুচিত হয়ে মিশে যেতো। আর যদি বিস্ফোরনের গতিবেগ বেশি হতো তবে সমস্ত কিছু এলোপাথালি ভাবে ছড়িযে ছিটিয়ে যেতো। অতিরিক্ত সম্প্রসারণের কারনে বস্তুকনাগুলো একে অপরকে আকর্ষন করে সৌরজগত, তারকারাজি, ছায়াপথ এসব গড়ে উঠার সুযোাগ পেত না। এ্ই সকল বিভিন্ন প্রাপ্ত তথ্য থেকে এতটুকু নিশ্চিত হওয়া যায় যে এই সম্প্রসারনের হার ঠিক ততটুক্ইু যতটুকু হলে মহাবিশ্ব নিজের মহাকর্ষ আকর্ষন শক্তি অতিক্রম করতে পারে। এই কারনেই পল ডেভিস এটিকে একটি পরিকল্পনার ফসল বলে অভিহিত করেছেন। তার ধারনা এটাকে সৃষ্টি করা হয়েছে হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোন ঘটনার ফল নয়। পল ডেভিস বলছেন: “এমন ধারণা মনে স্থান দেয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখা খুবই কঠিন যে, বিশ্বজগতের বিদ্যমান কাঠামো যা কিনা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম পরিবর্তনের ব্যাপারের স্পর্শকাতর যত্নের সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা করেই অস্তিত্বে আনা হয়েছে।”-(Paul Davies, God and the New Physics, New York: Simon & Schuster, 1983, p.189)



একই ধরনের সিদ্ধান্তে উপনীত হতে দেখা যায় জর্জ গ্রিনস্টেইনকেও (George Greenstein)। আমেরিকার এই জ্যোতির্বিদ প্রফেসর তার The Symbiotic Universe নামক গ্রন্থে বলছেন: “(বিশ্বজগতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা) বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করবার পর, তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের মনে যে-চিন্তার উদয় হয় তা হচ্ছে: (বিশ্বজগত সৃষ্টির পেছনে) নিশ্চয়ই কিছু অতিপ্রাকৃতিক এজেন্সির(some supernatural agencies) হাত আছে।”-(দেখুন: Hugh Ross, The Fingerprint of God, 2nd ed., Orange, CA: Promise Publishing Co., 1991, p.114-115)

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:২৭
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×