somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বোখাটে ছেলে ইসমাইল , এন সেভেনটি মোবাইল।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছেলের হলো মেয়ের সাজ, মেয়েরা সাজলো ছেলে, এগুলো নাকি আধুনিক যুগের ফ্যাশন
হিজড়া নাকি স্বাভাবিক, দেখতে লাগে কেমন কেমন!!! (আপনারাই বলুন)
কানে দুল, হাতে বালা , আমরা এখন মহিলা ,
বাধা দেয় কোন শালা।
মেয়েরা আগে, নাকি ছেলেরা, সিদ্ধান্ত নেয়া বড়ই ঝামেলা।

কিছু দিন পূর্বেও বিবাহের ডিমান্ড কমপক্ষে একটি সিকো ফাইভ ঘড়ি,
টিজ করে কেউ কেউ বলতো, দেখতে পোলা পাটুস ফাইভ, উনি খোঝেন সিকো ফাইভ!!!
উন্নত মানের ঘড়ি যখন দুশ টাকার কেসিও ঘড়িতে রুপান্তর হল ঘড়ির দোকানী এখন মাশি মারার চাকুরীতে ব্যাস্ত।
টাইম ঘড়ি মোবাইলে ভোল পাল্টিয়ে ঘড়ির বাজার করল সর্বশান্ত।

এলো কম্পিউটার যুগ , বোখাটে পোলার হল মহান সুযোগ। এল লেপটপ , স্বপ্ন এখন বাস্তব। এমন এমন মোবাইল সবই মিনি লেপটপ।

ভিটে মাটি বিক্রি করে সৌদী আরব গিয়েছেন ইসমাইলের বাবা , বড় আশা কস্ট করে রোজগার করে ছেলেকে পড়াশুনা করিয়ে অবসর জীবনে প্রশান্তির নি:শ্বাস টানবেন। ছেলের জেদ ওকে এন সেভেনটি মোবাইল দিতে হবে, বন্ধুরা নাকি সবাই এগুলো ব্যাবহার করে। ইসমাইলের বাবা তিন মাসের বেতন এক সাথ করে পাঠিয়েছেন মিনি লেপটপ মার্কা লেটেস্ট মোবাইল।
মহান কাজ সেরেছেন শত হলেও ছেলের আবদার এই সুযোগে ছেলে কম্পিউটার শিখবে। সন্তান তার হায়ার এডুকেডেট হচ্ছে এই খুশিতে সিগারেটের বাক্স শেষ।
ইসমাইলের জ্বালায় এলাকার সম্ভ্রান্ত ঘরের লোকেরা বড় চিন্তায় আছেন কখন জানি কার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন। না করলে বিপত্তি ইতোমধ্যে তার বন্ধুবান্ধবের অভাব নেই,
সারাদিন ছুটোছুটি, এন সেভেনটি মোবাইলে গান আর গান।
মন শুধু আনচান।
স্কুলে যাওয়া ফেলে রেখে বরং স্কুল গামী মেয়েদের পথ আগলিয়ে বসে থাকেন। মেয়েরা স্কুলে যায় ও কানে দুল পড়ে, হাতে বালা পরে রং বেরংয়ের গান বাজিয়ে হায়ার ডিগ্রী অর্জন করতে মেয়েদের পেছন পেছন হাটে , কখনো ছবি তোলে , কখনো গান শুনায়।
ওর আদর্শ , জ্যাম্স নামক এক ভন্ড (গঞ্জিকা সেবন কারী এই গায়ক মেয়েদের নিয়ে কি গান গেয়েছেন আপনারা অবগত আছেন।)

ওর মায়ের কাছে নালিশ তো মহা বিপদ।
ছেলে লেপটপ , মহিলা বড় বেদ্দপ।
সারা দিন বাজারে বাজারে , সবার বাড়ী ঘুরে ফেরে ।
থাকে সবার গীবতকরা উপকারে,
কিছু বলবেন তো তুলোধুনো এক্কেরে।

ওর মুখে আতপ চাল রাখবেন তো খই ফুটে পলিথিন ব্লাস্ট হবে।
সারা বাড়ীর মহিলা তটস্থ তার কলরবে।

(উনি বলেন )আমাদের টাকা পয়সা দেখে হিংসায় আমার ছেলের পেছনে লেগেছেন।
ওর বাবাকে কখনো এমন দেখেছেন?

তাইতো !!!......................গ্রামে আগে ফেরী করে মুরগী বিক্রি করতো

ছেলের জন্য লেপটপ, বউ হয়েছে বেদ্দপ।
টাকার থেলায় এখন তো উনি আদ্দপ।

ছিলেন আদ্দপ, ছেলে আর বউয়ের বায়না রাখতে গিয়ে হয়েছেন বেদ্দপ। সেই সাথে পুরো গ্রামটাকে বাজিকরের গ্রাম বানিয়ে উনার স্ত্রীকে বানিয়েছেন উদ্দীপক।
লাগেজ ভর্তি বাড়ী এসে চায়ের দোকানে বসে সেজেছেন উপদেশক।

বড় দু:খের নি:শ্বাস ফেলে বলছেন আহারে আমাদের গ্রাম কত ভাল ছিল , এখন কেমন জানি হয়ে গেল বাঁচা বড় দায় ।
সেদিন ছেলে নাকি গাঁজা খেয়ে হেলে দুলে পড়েছেন গায়ে
উনি নাকি উপুর হয়ে পড়েছেন আদর্শ সন্তানের পায়ে।
বাবা তুই ভাল হয়ে যা তুই যা চাস তাই দেব।
কে শুনে কার কথা , ওর উঠেছে বিয়ের ব্যাথা।
যার তার মেয়ে তাও নয়, ভাল ঘরের মেয়ে তাও ভয়।
সকলেই জানে উনার ছেলে লেপটপ, বউতো বড় বেদ্দপ।

কে দিবে উনার ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে ও নাকি ফিউস হয়ে গিয়েছেন , মোটামোটি প্যারালাইসড , আগে কেউ কিছু বললে লোকদের বোখাটে বন্ধু বান্ধবদের ভয় দেখাতো । এখন অমক ধমক তো দুরের কথা কেমন জানি মৃগী রোগীর মত হয়ে গিয়েছেন।
সারা রাত কোথায় কোথায় থাকে দুপুর বারোটার পর ঘুম থেকে উঠে। গাঁজা হিরোইন ফেনসিডিল খেয়ে এক রকম হিজড়া হয়ে গিয়েছেন। নাড়া দেয়ার আগেই ঢলে পড়ে যায়।
ইতোমধ্যে গ্রামের লোকজনের ভয়ও কেটে গিয়েছে। লেপটপ ইসমাইল এখন হিজড়াটপে রুপান্তরিত।
বিকেল বেলা লেপটপ ইসমাইল এর বাবা গ্রামের চায়ের দোকানে গিয়ে সবার জন্য চায়ের অর্ডার দিল , গ্রামের লোকজন কেমন জানি অনিহা অনিহা ভাব। উনি বলছেন কি ব্যাপার আপনারা চা খাচ্ছেন না আমার কি অপরাধ।
এমন সময় গ্রামের সত্তরোর্ধ কলিম চাচা দোকানে ঢুকতেই ইসমাইলের বাবা সালাম দিল , চাচা মৃদু উত্তর দিয়ে কেমন না চেনার ভাব করল।
ইসমাইলের বাবা বলল চাচা আমায় চেনেন না আমি অমুক...
আরে চিনি চিনি তুই লেপটপের বাবা না , চাচা কি বলেন ওর নাম ইসমাইল ।
তোর ইসমাইল এখন লেপটপ,
বউ বানাইচছ বেদ্দপ ।
টাকায় হইচছ গদ গদ
গ্রামের গেছে ইজ্জত।
যা ঘরে যা , দেখতে পাবি , তোর পোলা যে মদ্যপ
আজকে সন্ধ্যায়, তোরে দিব , চির জীবনের আদ্যপ।

ইসমাইলের বাবা : কিছুই বুঝলাম না ,আপনার কি বলতেছেন।
চা দোকানী: তোমার পোলার লেখা নাই পড়া নাই , কি বুইঝা লেপটপ মার্কা মোবাইল পাঠাইচছ , ঐটা দিয়া এক কিলোমিটার দুর থেকে মানুষের মাইয়ার ছবি তোলে , দুনিয়ার আজে বাজে গান বাজায়। এখন আমাগো গ্রামের এস পি সাহেবের ভাটিজি হাবিব সাহেবের মেয়ের পিছনে লাগছে, ওরা মান ইজ্জতের দরে মাইয়ার কলেজ যাওয়া বন্ধ কইরা দিছে। এত দিন কিছু কয় নাই তোর অপেক্ষা করছে , সন্ধ্যায় বিচার বইব, থাইকেন। এস পি ও বাড়ীতে আইব।
লেপটপের বাবার মাথায়

হাত...................................................................

দাও ফিরাইয়া ,দাও গো আমায় ,আবার মুরগীর খাঁচা
ঘুইরা ঘুইরা বিক্রী করমু , থাকুম ছোট্র বাসা।
গ্রামের ইজ্জত গ্রামে থাকব, আমি থাকমু কই
পোলা আমার গোল্লায় গেছে , বউ এর মুখে খই।
টাকার ঠেলায় ভুইল্লা গেছি যুগের হাওয়ার খবর
সূখের শেষে এখন পামু, চড় থাপ্পর আর কবর।

বি:দ্র: বিজ্ঞানের কোন অবদান মানুষের অকল্যাণে নয় তবে অসদব্যবহার কারির হাতে পড়লে অবশ্যই পুরো সমাজটাকে জালিয়ে পুড়িয়ে খাবে। উপরের এই দৃশ্যটি বানিয়ে বলা কিছু নয় বরং সমাজের এক ব্যাধি উপস্থাপন করা হয়েছে আমার অযোগ্য হাতের খোঁচায়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৭
৩৫টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×