মন বিষণ্ন হয়ে যায় সময় অসময়ে,
কখনো এর পেছেনে থাকে কারণ, কখনো অকারণে।
বন্ধু বান্ধব কত অতি আপনজন, স্বার্থ ফুরোলে পড়ে কেটে,
মরার মতো পড়ে থাকি বিছানায় কত অসুখ বিসুখে।
কত চেনা মুখ পাশ কেটে চলে যায়, কার খোঁজ কে রাখে?
খেয়ে না খেয়ে কোনোভাবে দিন করি পার,
এভাবে ধুকে ধুকে কেটে যাবে বুঝি দিন আমার।
বয়স আমার দাঁড়াবে সত্তুরে, মৃত্যু-দুত কখন আসে অজানা,
চারিদিকে কত নাতি, পোতা, ছেলে, বউমা,
কেউ পুট পুট করে কোলে বসে ড়াকছে আমায় দাদা।
খুন খুনে এই আমি কখনো অচেতন পড়ে থাকি,
কখন কী করি তার থাকে না হুশ,
সবাই প্রাণচাঞ্চল্য আমি একা বেহুশ।
ছেলেরা ব্যস্ত চাকরি নিয়ে, বউরা ব্যস্ত কাজে,
কেউ লয় না খোঁজ আমার, পড়ে থাকি কুঁড়ে ঘরে।
ছেলেরা যখন বাড়ি ফেরে রাত বেরাতে,
বউরা সবাই ব্যস্ত তখন পতি-সেবা দানে।
সারাদিন না খেয়ে ভীষণ অনাহারে কাঁপছে যখন বাবা,
পুরো বাড়ি, পুরো শহর ঘুমিয়ে আছে তখন, ঘুমিয়ে সবাই সারা।
মৃত্যু-যম দুত এসে নিশি রাতে; লয়ে গেল আমার প্রান,
সকলে ঘুমে বিভোর, আমার শেষ হয়ে গেল রঙ্গীন জীবন।
ফজরবেলা এসে কেউ রেখে যাবে অজুর পানি,
নিদ্রা ভেঙে আমি আর উঠব না, পড়ব না নামাজ,
আর কোনোদিন শুনব না আযানের ধ্বনি।
সকালবেলা পুরো বাড়ি পড়ে যাবে সারা,
কেউ আচলে মুখ লুকিয়ে করবে ভান,
কারো চোখের পানি মিছে।
গায়ে আমার জাড়াবে কাফন, আসবে রেখে গোরে।
দু’দিন গেলে তিন দিনের মাথায় ভুলবে সকলে।
এটাই হল নির্মম বাস্তবতা।
কবিতাটি উৎসর্গ করা হল লেখিকা শায়মা আপুকে।
(কিছু দিন আগের কথা, ব্লগের অন্যতম লেখিকা শায়মা আপু কাগজের ফুল বানাতে বলেছিল আমাকে। নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে সেদিন বলেছিলাম, আমার দ্বারা সম্ভব না। শায়মা আপু বলেছিল, তাহলে একটা কবিতা লিখে পোস্ট দিও। আমি কবিতা লেখি না। লেখি না, পারি না তাই। কিন্তু ওই দিন কি মনে যেন খাতা কলম নিয়ে বসলাম কবিতা লেখার জন্য। তারপর একটানে যে কবিতাটি লেখে ফেললাম, পাঠক! ইতোমধ্যে সেটি আপনি পড়ে ফেলেছেন। )
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৬