রাশিয়ার রক্ত চক্ষু আর বঙ্গ মিডিয়ার গুজব উপেক্ষা করে গতবছরই ফিনল্যান্ড ন্যাটো'তে যোগ দিয়েছে যা আমরা সবাই জানি, এবার সুইডেনও বঙ্গ মিডিয়ার মুখে চুনকালি মাখিয়ে ফিনল্যান্ডের পদাঙ্ক অনুসরণ ( ন্যাটোতে যোগদান ) করেছে। সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টিকে এক ঐতিহাসিক দিন হিসেবে বিবেচিত করেছেন ন্যাটো সেক্রেটারি General Jens Stoltenberg. এক বিবৃতিতে তিনি বলেন -
"This is a historic day. Sweden will now take its rightful place at Nato's table, with an equal say in shaping Nato policies and decisions, after over 200 years of non-alignment Sweden now enjoys the protection granted under Article 5, the ultimate guarantee of allies' freedom and security. বিস্তারিত: All eyes on Russia as Sweden joins Nato
রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে আমাদের বঙ্গ মিডিয়ায় হই হই রব উঠেছিলো ন্যাটো ভেঙ্গে গেলো বলে, সে সময় এসব মিডিয়া কাম ফেসবুকে ন্যাটো ভাঙ্গনের গুজবের সুর উঠতো প্রায় প্রতিদিনই, এসব গু-জবের প্রতিবাদে আমি একটি পোস্ট লিখেছিলাম "পুতিনের হুমকি ধামকিতে ন্যাটোর সম্প্রসারণ বন্ধ হবে না" যার কিছুদিন পরেই ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগদান করে। অবশেষে ন্যাটো জোটে ফিনল্যান্ডের যোগদানের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলো।
কথা হচ্ছে- আমি আর আপনি কি চাই তার উপর নির্ভর করে তো আর আন্তর্জাতিক রাজনীতি চলে না; বড়জোড় আমারা ঘটনা বিশ্লেষণ করতে পারি কিন্তু নিজেদের ব্যক্তিগত মতামতের উপর ভিত্তি করে যদি কোন ঘটনা বিশ্লেষণ করি তাহলে তা হবে বঙ্গ মিডিয়ার নিউজের মতোই। না, রাশিয়ার গ্যাসের অভাবে ইউরোপের মানুষ না খেয়ে মরেনি, শীতে ইউরোপের মানুষ জমে যায় নি, রাশিয়ার গ্যাস, তেল আর খাদ্যের অভাবে লক্ষ লক্ষ ইউরোপ, আমেরিকার জনগণ জীবন বাঁচাতে এশিয়ায় পাড়ি জমায়নি ( বরং উল্টোটাই হয়ে আসছে ) এর সবই ছিলো বঙ্গ মিডিয়ার অতিরঞ্জিত ভাবনার ফসল যার কোন কিছুই ঘটেনি। বঙ্গ মিডিয়ার কাজই হচ্ছে বঙ্গ পাবলিক যা খেতে চায় তা'ই পরিবেশন করা কিন্তু তা কতটা খাবারযোগ্য সে দিকে তাদের কোন ভ্রূক্ষেপই নেই, বঙ্গ মিডিয়ার অধিকাংশ আন্তর্জাতিক নিউজ মানেই গুজব যা দেখে অনেকে ব্লগেও এসব গুজব ছড়িয়ে দিতো।
আসল কথা হচ্ছে- ন্যাটো হলো বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ একটি সামরিক সংগঠন, টপ কোয়ালিটির ৩২ টি রাষ্ট্র নিয়ে এ সংগঠনটি গঠিত, যেখানে নানা বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য থাকাটা খুবই স্বাভাবিক আর এসব ছোট খাটো মতানৈক্য থাকা মানে এই নয় যে ন্যাটো ভেঙ্গে যাচ্ছে বরং রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর থেকে ন্যাটো অনেক বেশি সুসংগঠিত, অনেক বেশি শক্তিশালী, ন্যাটো ভাঙ্গার কোন প্রশ্নই আসে না। তিল কে তাল বানাতে খুবই পারদর্শী এই বঙ্গ আর আফ্রিকান মিডিয়া। হাজার মাইল দূরে অবস্থান করলেও এই বঙ্গ আর আফ্রিকান জনগণ ঠিক যেন সহদোর।
বাস্তবতা হচ্ছে- ২০২২ এর আগ পর্যন্ত ন্যাটো কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিলো, তাদের কাজ কি তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারতেছিলো না, কিন্তু রাশিয়াই ঘুমন্ত এই দৈত্যকে আবার জাগিয়ে তুলেছে। গত মাসেও টপ ইউরোপিয়ান দেশের রাষ্ট্রপ্রধানগন কিয়েভ সফর করে ইউক্রেনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এসেছেন, যা তারা নিয়মিতই করে আসছে। Western leaders visit Ukraine to show solidarity as war enters third year.
এ বছরই শুরু হয়েছে ন্যাটোর সামরিক মহড়া যা চলবে আগামী মে মাস পর্যন্ত এ মহড়াটি হতে যাচ্ছে এই গ্রহের এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া, এরপর শুরু হবে মরণ কামড়, আমরা আশা করতে পারি আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ ন্যাটো সরাসরি রাশিয়াকে প্রতিহত করার কাজে মনোনিবেশ করবে।
NATO to hold biggest drills since Cold War with 90,000 troops
NATO Begins Largest Exercise Since Cold War
পোস্ট'টি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৬