somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতে কেন মুসলিম জনগোষ্ঠী নির্যাতনের শিকার?

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :







উপরের ছবিগুলো ভারতে নানা সময়ে ঘটে যাওয়া মুসলিম নির্যাতনের কিছু চিত্র, এগুলো জাষ্ট উদাহরণ মাত্র; প্রায় বছর জুরেই ভারতের কোন না কোন রাজ্যে মুসলিম জনগোষ্ঠী নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে, যা আমরা সবাই জানি। এখন কথা হচ্ছে - বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কেন সংখ্যালঘুর উপর এমন নির্যাতন? তাহলে গণতন্ত্র কি ন্যক্কারজনক ভাবে শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠদেরই স্বার্থ রক্ষা করবে? আশা করছি বিজ্ঞ ব্লগার গণদের কাছ থেকে এর যথাযথ উত্তর পাবো।

যখনই গণতন্ত্রের কথা আসবে তখন অবধারিত ভাবেই ভারতের কথা আসবে, কারণ ভারত হচ্ছে বিশ্বের ১ নাম্বার; মানে সবচে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কতটা বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র? ওয়েল, ভারতের ১৪০ কোটিরও বেশি মানুষ ভোট দেওয়ার অধিকার রাখে, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার 17.6%। আর যদি শুধু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জনসংখ্যার সঙ্গে তুলনা করি (মানে - চীন, সৌদি আরব, রাশিয়া, ইরান, তুরস্ক, আফগানিস্তান উত্তর কারিয়া ইত্যাদি রাষ্ট্রের জনসংখ্যা বাদ দিয়ে ) তাহলে তো পুরো লেজে গোবরে অবস্থা! সেক্ষেত্রে বিশ্বের সবগুলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জনসংখ্যা মিলিয়েও এক ভারতের জনসংখ্যার সমান হয় না। তো বুঝা গেলো ভারত কত বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র? সো, ইন্ডিয়া ম্যাটারস হোয়েন ইট'স অ্যাবাউট সো কলড ডেমোক্র্যাসি সংখ্যালঘু যেখানে মরিমরি। আর তাই ডেমোক্র্যাসি'র উদাহারণ দিতে হলে সর্বাঘ্নে ইন্ডিয়ার উদাহরণ দিতে হবে কারণ এটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক উপায়, অন্য সব ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর দেশ কোন তন্ত্রে চলে তা এখানে যৌক্তিভাবেই ইনভ্যালিড।

বর্তমান বিশ্বে মোট গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে বলা কঠিন, কারণ বিভিন্ন সংস্থা ভিন্ন ভিন্ন মানদণ্ডে গণতন্ত্র মাপায় যেমন- বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কাছে গণতন্ত্রের মানদণ্ড হচ্ছে- প্রতিপক্ষকে বেঁধে রেখে, ব্যালট বাক্স চুরি করে, রাতে ভোট প্রদানের মাধ্যমে গণতন্ত্র বজায় রাখা এটাই হচ্ছে তাদের কাছে গণতন্ত্রের মানদণ্ড, অবশ্য অনন্য সংস্থার কাছে গণতন্ত্রের মানদণ্ড ঠিক কি তা আমি জানি না, তবে Economist Intelligence Unit (EIU) Democracy Index 2024 এর তথ্য অনুসারে বিশ্বের মাত্র ২৫ টি দেশে Full Democracy ব্যবস্থা চালু রয়েছে যার বেশীরভাগই ইউরোপের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর কিছু দেশ যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৬.৬% এবং এরাই একসময় বিশ্বজুড়ে চুরি ডাকাতি করে বেড়াতো।

এখন কনফ্লিক্ট হলো- ইউরোপের এসব ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর দেশেও গণতন্ত্র আবার ভারতের মত বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দেশেও গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু থাকার পরেও কেন বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন? ভারতের দুর্নীতির খবর কি? ধনী গরীবের সম্পদের পার্থক্যই বা কেমন? সংখ্যালঘু নির্যাতনের দিক দিয়ে ভারত কি বিশ্বের এক নাম্বার? একই ব্যবস্থা চালু থাকার পরেও ভিন্ন মহাদেশের দুটি অঞ্চলের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন কেন? এই ভিন্নতার মূল কারণ কি হতে পারে?

যেহেতু ভারত বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র; তত্ব অনুসারে তো ভারত থেকেই সারা বিশ্বে শান্তি এক্সপোর্ট হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু তা কি হয়? বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সাথে আমাদের নিজেদেরই বা কেন এত দ্বন্দ্ব? ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভৌগলিক অবস্থান, আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে ভারতের কার্বন কপি বলা যেতে পারে কিন্তু তবুও কেন এত দ্বন্দ্ব? অবশ্য এই দ্বন্দ্বটা আমি দেখি শুধু আম সাধারণের মাঝেই, দুটি দেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে আমি বরং দ্বন্দ্ব নয় সখ্যতাই দেখতে পাই বেশি। টং দোকানের আম সাধারণ যেখানে ভারতকে গালাগালি করে তুলোধুনো করছে, রাজনীতিবিদেরা সেখানে ভারতের সাথে মোলাকাত করছে, হাজার হাজার কোটি টাকার চুক্তি/বাণিজ্য করছে। আম সাধারণের মত করে যদি রাজনীতিবিদেরা চিন্তা করতো, তাহলে দেশ দুটিতে আজ রক্তগঙ্গা বইয়ে যেতো।

মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হচ্ছে- আমরা গণতন্ত্র ইম্পোর্ট করবো কোথা থেকে? বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারত থেকে নাকি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর অঞ্চল ইউরোপ থেকে? এতকাল আমরা কোন গণতন্ত্র ব্যবহার করে আসছি? ইউরোপের না ভারতের? রেজাল্ট জানি কি ছিলো? ;)

আমরা যদি ভারতের গণতন্ত্র ফলো করি তাহলে আমাদের অবশ্যই ধর্মীয় রাজনীতি আঁকড়ে ধরতে হবে, যে দল যতবেশী সস্তা ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট নির্ভর রাজনীতি করবে তারা ততোবেশী ক্ষমতাবান হবে বা ক্ষমতার কাছাকাছি যাবে, ভারতে যেমন হিন্দুত্ববাদ সরকার আমাদের এখানেও হতে হবে এক ইসলামবাজ সরকার। বেশী বেশী ভোট ভিক্ষা পাওয়ার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে ধর্মীয় রাজনীতি। গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত হাবলু জনগোষ্ঠীকে ধর্মীয় বাণী সমেত দুই চারটা তন্তর মন্তর পড়ে শুনালেই গণহারে সম্মোহীত হয়ে যাবে আপনার বা আপনার দলের প্রতি, লক্ষ লক্ষ ভোট পরবে আপনার দান বাক্সে (ভোট বাক্সে)। বিশিষ্ট গণতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে হিন্দুত্ববাদ বিক্রি করে রাজনীতিতে টিকে আছে আমাদের এখানেও ইসলাম বিক্রি করে রাজনীতি করতে হবে, তাহলে গণতন্ত্র রক্ষা হবে।



বাস্তবে আপনি যতই ধরিবাজ ব্যক্তি হন না কেন, ভোট পাওয়ার সহিহ উপায় হচ্ছে পাবলিক প্লেসে ভালো ভালো কথার ফুলঝুড়ি ফোঁটাতে হবে তাহলেই দেখেন. হুর হুর করে আপনার সাগরেদদের সংখ্যা বাড়তেছে।



অপরদিকে- আমারা যদি ইউরোপের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর গণতন্ত্র ইম্পোর্ট করি তাহলে তা কি এদেশের জনগণ মেনে নিবে? হাজার হলেও গণতন্ত্র বলে কথা! জনগণ যদি ইউরোপের সেক্যুলার রাজনীতি গ্রহণ না করে তাহলে আমার বা আপনার কি করার আছে? ইউরোপের সাথে আমাদের নেই কোন কিছুতেই মিল: ইতিহাস, ঐতিহ্য, কালচার, ভাবধারা, ইমোশন, প্রাকৃতিক পরিবেশ, ভৌগলিক অবস্থান, আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপট, জনসংখ্যা ইত্যাদির কোন কিছুতেই ইউরোপের সাথে আমাদের নেই বিন্দুমাত্র কোন মিল, ওরা গবেষণা করে সাইকোলজি নিয়ে আর আমরা করি ফিলোসফি নিয়ে, ওদের কাছে যা নরমাল বা নিখাদ বাস্তবতা আমাদের কাছে তা অতিপ্রাকৃতিক বিষয়; তো এখন কথা হচ্ছে এত এত ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও সেই ইউরোপের গণতান্ত্রিক থেরাপিতে কি আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থার রোগ নিরাময় করা সম্ভব? হাজার মাইল দূরের ইউরোপের ক্ষুদ্র কিছু জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক কনটেক্সট দ্বারা কখনোই দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অবস্থা বিচার বিশ্লেষণ করা ঠিক হবে না। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি বুঝতে হলে সবার আগে এই অঞ্চলের ভাবধারা বুঝতে হবে, ইউরোপের নয়। ইউরোপের কনটেক্সটে এই দেশের রজানীতি বিশ্লেষণ করা আর শেখ হাসিনার কাছ থেকে গণতন্ত্রের ছবক নেয়া হবে সমান কথা। আমার মনে হয় প্রতিটি দেশ এবং জাতির'ই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপট, একই এন্টিবায়োটিকে সমস্ত রোগের অসুখ নির্মূল করার চেষ্টা বিপজ্জনক হতে পারে। ইউরোপিয় থেরাপিতে আজ আফ্রিকার দেশগুলোর যে অবস্থা আর কি। যেখানে তৃতীয় পক্ষ সবসময় ফায়দা লুটে।



ছবি- ইউরোপ আফ্রিকাতে গণতন্ত্র এক্সপোর্ট করে আফ্রিকাকে উদ্ধার করে দিচ্ছে। যতবেশি অজ্ঞদের প্রতিনিধী ক্ষমতায় থাকবে ততই যেন ইউরোপের পোয়াবারো। আমাদের বাংলাদেশের ভালোর জন্য ইউরোপের কত্ত কত্ত চিন্তা! :-B ইউরোপের নেতাদের রাতে ঠিকমত ঘুমই হয় না, এরা সারারাত চিন্তা-ফিকির করে কিভাবে বাংলাদেশকে আফ্রিকার মত একটি উন্নত জাতিতে পরিণত করা যায়, কত্ত ভালু এরা, বিশ্ব নিয়ে তাদের কত্ত চিন্তা! যেন তাহাদের অতীত আমরা কিছুই জানি না ;)



The British Psychological Society এর মত অনুসারে তাদের দেশের গণতন্ত্র নাকি আজ ধ্বংসের পথে। Democracy in danger ! ছ্যা! ছ্যা! ছ্যা! =p~

10 Reasons why democracy fails



এদিকে আমেরিকানরাও দেখি তাদের ডেমোক্র্যাসি নিয়ে চিন্তিত If American democracy fails, it will collapse everywher? কি একটা অবস্থা! :-B



গণতন্ত্রের এমন নাজেহাল অবস্থা দেখে আমার কান্না করতে ইচ্ছে করছে :((





তাছাড়া আমাদের দেশের ইসলাম পন্থীরাও গণতন্ত্রকে দু-চোখে দেখতে পারে না, যার কিছু উদাহারণ দিচ্ছি নিচে।

গণতন্ত্র সু স্পষ্ট হারাম মুফতি রেজাউল করিম আবরার।



এদিকে গণতন্ত্রকে পুরোপুরি বাদ দেয়ার পক্ষে আমাদের আল্লামা ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী।



ইসলামে গণতন্ত্র হারাম: মাউলানা ড.আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব



আল্লামা Professor Dr Abubakar Muhammad Zakaria এর মতে গণতন্ত্র হচ্ছে পরিষ্কার এক হারাম মতবাদ।



বিশিষ্ট এক আলেম গণতন্ত্রকে কুফরি মতবাদ হলে আখ্যা দিয়েছেন



হুজুরদের কথা বাদই দিলাম, এটা তাদের ধর্মীয় বিষয়, আমি সাধারণ জনগণের মনোভাবের কথাই বলছি- যে দেশের ৯৯% জনগণের মধ্যেই সুপ্তভাবে লুকিয়ে থাকে স্বৈরতন্ত্র-- বিরুদ্ধ মতবাদ, বিরুদ্ধ চিন্তাধারা যারা শুনা মাত্রই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে, প্রতিপক্ষকে পারলে নিমিষেই দুমড়ে, মুচরে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে নিজের মতবাদ চাপিয়ে দেয়, একটু নতুনত্ব, একটু ভিন্ন কিছু শুনলেই তাদের গাত্র দাহ শুরু হয়, ভয়ঙ্কর ভাবে রিয়্যাক্টবাজি, ব্যক্তি আক্রমণ শুরু করে, এমন ভয়াবহ প্রতিক্রিয়াশীল ও জাজমেন্টাল জনগোষ্ঠীর দেশে গণতন্ত্র আসলে কতটা ফলপ্রসূ? যে দেশে ছেলে ধরা সন্দেহে (পদ্মা ব্রিজ তৈরি করতে বাচ্চাদের মথার প্রয়োজন হয় এই গুজবের জেরে ) সরা দেশে শত শত নারীদের পিটিয়ে হত্যা করা হয় (খোদ ঢাকার বাড্ডাতে এক মা তার বাচ্চাকে আনতে স্কুলে গিয়েছিলো, তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ছেলে ধরা সন্দেহে, যে ঘটনা সারাজীবনেও আমার পক্ষে ভুলা সম্ভব নয় ) সেই দেশে গণতন্ত্র শান্তির সুবাস বয়ে নিয়ে আসবে? সি-রি-য়া-স-লি?? আর ইউ ফাকিন কিডিং মি??? X(





অবাক করা ঘটনা হলো, গণপিটুনির এই এসব ইডিয়টিক ঘটনাগুলোকে কেউ কেউ-- দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে ভারতের চাল, আমেরিকার ম্যাটিকুলাস ডিজাইন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার জন্য শেখ হাসিনার কারসাজি, বিএনপি-জামাতের দুরভিসন্ধি ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত করছিলো, যা দেখে আমি শুধু ভাবছিলাম-- যেমন এই দেশ, তেমন হচ্ছে এই দেশের জনগণ, তেমনই হচ্ছে এই দেশের সরকার, আর ঠিক তেমনই হচ্ছে এই দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক যাদের বচন শুনলে গা একদম রিরি করে উঠে। আসলে দেশে একটা শ্রেণী রয়েছে যাদের মাথায় সবসময় এমন কন্সপায়রেসি থিওরি ঘুরঘুর করে, যে কোন ঘটনার পিছনে এরা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত খুঁজে পায়। আর কিছুদিন পর হয়ত এরা স্বামী স্ত্রীর ঝগড়ার মধ্যেও ভারত আমেরিকার ম্যাটিকুলাস ডিজাইনের গন্ধ পাবে। বিশাল জনগোষ্ঠীর এক সমাজে অনেক ঘটনাই প্রতিনিয়ত ঘটে, বটারফ্লাই ইফেক্টের মত একটা সমাজে অতি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক বড় অস্থিতিশীল অবস্থার তৈরি হতে পারে, যার প্রতিটি ঘটনার পিছনে আন্তর্জাতিক চক্র বা সরকারের নিপুণ ডিজাইন থাকে না, এগুলো স্রেফ একটা সমাজের/জনগোষ্ঠীর ঘটনাপ্রবাহ মাত্র এই সাধারণ বিষয়টুকু এসব তথাকথিত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বুঝতে চায় না। সবকিছুতেই এরা কন্সপাইরেসি থিওরি খুঁজে পায়। এদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয় এরা এই মাত্র ট্রাম্প, মোদি, পুতিনদের সাথে মিটিং করে আসলো, বা প্রতিদিন তাদের সাথে ফোনে কথা হয়। আসলে মূল কথা হচ্ছে- এরাই দেশে নানা প্রোপাগন্ডা ছাড়ানোর মূল কারিগর, এরাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এদের ইমেডিয়েট ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন এরা শুধু নিজেদেরই ক্ষতি করছে না, এরা পুরো সমাজে অস্থিতিশীল অবস্থার তৈরি করেছে। The Psychology of Conspiracy Theorists: More Than Just Paranoia



পোস্ট'টি লিখতে চেয়েছিলাম সংখ্যালঘু নির্যাতন, কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে কিন্তু শুরুতেই লেখার ব্রেক ফেল করে ভিন্ন দিকে চলে গেলো তাই এখন আর এ বিষয়ে লিখে পোস্ট লম্বা করে পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চাই না। এখন হচ্ছে শর্টস, রিলসের যুগ, বড় পোস্ট পড়ার সময় মানুষের নেই।

বিবিধ বিষয় পর্যালোচনা করে আমার মনে হয়েছে-- দিল্লী নয়, লন্ডন নয়, নয় ইউরোপ, নয় ওয়াশিংটন এই দ্যাশের রাজনৈতিক কালচার ইম্পোর্ট হবে কাবুল, ইসলামাবাদ এবং তেহরান থেকে এটাই হবে আমাদের জন্য একদম যুতসই রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, চিল্লায়া কন ঠিক কি না? ঠিক ঠিক...। ঠিক বেঠিক যাই হোক, মানুন আর না মানুন আমরা সে পথেই হাঁটছি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ লিডারগণ ইতিমধ্যে আফগানিস্তানে পৌঁছিয়েছে- ইসলামাবাদ, তেহরান হয়ে তবেই তারা দেশে ফিরবেন। আল্লামা মামুনুল হকই হবেন বাংলার ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী, তিনিই হচ্ছেন আমার পছন্দের নাম্বার ওয়ান প্রধানমন্ত্রী যার এক হুংকারে ভারত-ইন্ডিয়া সব এক ঘাটের জল খাবে। B-)



তালেবানের আমন্ত্রণে আফগানিস্তান সফরে মামুনুল হকসহ সাত আলেম।





তাছাড়া আমার দ্বিতীয় চয়েজ হচ্ছে মওলানা মাদানী, তিনিও বাংলাদেশের জন্য একজন যুতসই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, ক্ষুরধার বক্তব্য পেশকারী এই পিচ্চি হুজুরের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা, রয়েছে লক্ষ লক্ষ চ্যালা প্যালা সুতরাং মওলানা মাদানী হতে পারেন বাংলাদেশের জন্য একজন যোগ্যতম প্রধানমন্ত্রী।



প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে আমার তৃতীয় পছন্দ হচ্ছেন জনাব হিরু আলাম, উনাকে বাংলাদেশের ১ নাম্বার জনপ্রিয় ব্যক্তি বললে ভুল হবে না, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যার অসংখ্য ভক্তকুল, তাছাড়া তিনি ভালো নাচা গানা করতে পারেন, তিনি বাঙালীদের বিনোদনে মাতিয়ে রাখেন আর তাই যারা ইসলামী ভাবধারার রাজনীতি কিছুটা অপছন্দ করেন, তাদের জন্য এই হিরু আলামই হতে পারে বেস্ট চয়েজ।



এছাড়াও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদের দৌড়ে; মোশারফ করিম, শাকিব খান, অন্তত জলিল, পরিমনি, বুবলি এদেরও যথেষ্ট সম্ভাবনা রহিয়াছে এদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত বড় কোন দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়নি সুতরাং গণতান্ত্রিক উপায়ে এরাও হতে পারেন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী।



শেষ কথা- বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিবিরের জয়জয়কারে যারা হায় হায় গেলো গেলো রব তুলছেন তাদের জন্য আমার এক বস্তা সমবেদনা, শিবির কি ভোট চুরি করে জয়লাভ করেছে না ভোট ডাকাতি করেছে? তারা ছাত্রদের ভোটে'ই নির্বাচিত হয়েছে তাহলে এখন কেন মিছে চিৎকার চেঁচামেচি করছেন? চিল্লায়া কি মার্কেট পাওন যায়? মিয়া, মুখে গণতন্ত্রের বুলি আওড়ান আর প্রতিপক্ষ ভোটে জিতলে কান্নাকাটি করেন, এগুলো কি হিপোক্রেসি নয়? ওহ! হিপোক্রেসি যে রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য এক অংশ তা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। তাছাড়া দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো যে মাদ্রাসায় পরিণতে হচ্ছে এ কথা আমি এবং কিছু ব্লগার সেই করোনাকালীন সময় থেকেই বলে আসছি সুতরাং ইহা মোটেও নতুন কিছু নয় আর তাই শিবিরের এই বিজয়ে অহেতুক ভূত দেখার মত চমকে উঠার কিছু নেই, দেশ একদম সঠিক পথেই ধাবিত হচ্ছে। ;)

ইনকিলাব জিন্দাবাদ
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৫৩
১০টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন-হাদিস অনুযায়ী তারা পাকিস্তান এবং অন্যরা অন্যদেশ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২১



সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬০। তোমরা তাদের মোকাবেলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তত রাখবে। এর দ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত রাখবে আল্লাহর শত্রুকে, তোমাদের শত্রুকে, এছাড়া অন্যদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×