somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৌলবাদের রূপ ও রূপান্তর এবং উপস্থাপনের রাজনীতি

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মৌলবাদঃ সংজ্ঞার সন্ধান

মুলে ফিরে যাওয়া বা মূলকে আদর্শ ভাবা বা আদর্শায়িত করা অর্থে মৌলবাদ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। আদিতে শব্দটির যে অর্থ ছিল বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে শব্দটি তার ইতিবাচক অর্থ অনেকটাই হারিয়েছে।অতি সম্প্রতি মৌলবাদ শব্দটির পরিবর্তে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ শব্দটির ব্যবাহার বেড়েছে; অধিপতি মিডিয়ায় ধর্মীয় ‘উগ্রতা’কে মৌলবাদ,জঙ্গিবাদ নানা নামে অভিহিত করা হচ্ছে।মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও বিশব্রাজনীতির ক্ষমতা-সম্পর্কের নানা গতিধারার(Dynamics) মধ্যে মৌলবাদ শব্দটি নতুন অর্থ পরিগ্রহ করেছে। এ-যুগে প্রধানত ইসলামের রাজনৈতিক আকাঙ্খাকে মৌলবাদ নামে চিহ্নিত। তবে এ প্রবন্ধে আমরা মৌলবাদের রূপ-রুপান্তর এবং দর্শন ও রাজনীতির পরিমণ্ডলে এর বৃহত্তর অর্থকে মাথায় রেখে আলোচনা করব। ধর্মীয় মৌলবাদ ছাড়াও ধর্মনিরপেক্ষ মৌলবাদ,রাজনৈতিক মৌলবাদ, দার্শনিক মৌলবাদ ও জীবন- যাপনের নানা অনুসঙ্গের ভেতরে যে অতীতমুখীতা বা অনড়-অটলতা সেগুলোও মৌলবাদের বৃহত্তরো অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। এটাও আলোচনা করার প্রয়োজন পরবে যে ঐশী টেক্সটের বিশেষ কোন ব্যাখ্যাই কি শুধু মৌলবাদের জন্মভুমি নাকি এর রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটও আছে।প্রতিক্রিয়াজনিত আত্ননিরূপণও,যেমনটি অমর্ত্য সেন বলেছেন, মৌলবাদের অন্যতম কারণ।
কলিম খান মৌলবাদকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এইভাবেঃ“মৌলবাদ একটি বিকৃত মানবিক জীবননীতি আগে যেভাবে সফল হওয়া গিয়েছিল ,পরে ঠিক তেমনটি করবার যে নীতি তাকে মৌলবাদ বলে ।এ হল রবীন্দ্রনাথের ভাষায় একই কর্মের পুন পুন আবৃত্তির নীতি।“ ন্যায় ও সত্যের জোড় থাকে অতীত ঘটনায়--- এ-রকম বিশ্বাসকে কলিম খান মৌলবাদ বলে চিহ্নিত করেছেন।

আহমেদ শরীফ মৌলবাদকে এভাবে সনাক্ত করেছেনঃ “ মূলানুগত্যের তথা শাস্রকে নিষ্ঠার সঙ্গে আক্ষরিকভাবে মেনে চলার অঙ্গীকারের ,সঙ্কল্পের ও বাস্তবে রুপায়নের নাম মৌলবাদ।“ অর্থোডক্স ধার্মিক ও ফান্ডামেন্টালিস্টদের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করতে ডঃ শরীফ বলছেন ঃ অর্থোডক্স ধার্মিক মানুষের বিশ্বাস ও চরিত্র অত্যন্ত দৃঢ়। ফান্ডামেন্টালিস্ট বা মৌলবাদীদের সঙ্গে গোঁড়া রক্ষণশীল শাস্ত্রনিষ্ঠ ধার্মিকদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, মৌলবাদীরা ঐহিক জীবনে সুবিধাবাদী রাজনীতি সচেতন এবং কোন নীতিতে –নিয়মে-আদর্শে আন্তরিকভাবে নিষ্ঠ নয় ,কেবল শাস্ত্রধ্বজী হয়ে এরা পার্থিব সুখ সুবিধে-বাঞ্ছা দ্বারা চালিত হয়।

The Battle of Gods বইতে ক্যারেন আর্মস্ট্রং বলছেন,মৌলবাদ ধর্মের প্রাচীন ধরনের পুনরাবির্ভাব নয় বরং আধুনিক বিশ্বের আধ্যাত্মিক টানাপোড়েনের প্রতি সাড়া বিশেষ। আর্মস্ট্রং যুক্তি দেখিয়েছেন যে, আলোকনপর্বে কিংবদন্তী ও বিশ্বাসে প্রেথিত ধর্মানুরাগের বিনাশ ঘটিয়ে মানুষ ধার্মিকতার নতুন উপায় সন্ধানে বাধ্য হয়েছে- ফলে মৌলবাদের আবির্ভাব। এ গ্রন্থে আর্মস্ট্রং তিনটি মৌলবাদী আন্দোলনের উপর আলোকপাত করেছেন; আমেরিকায় প্রটেস্ট্যান্ট মৌলবাদ, ইসরায়েলের ইহুদি মৌলবাদ এবং মিশর ও ইরানের ইসলামি মৌলবাদ।আধুনিকতার আক্রমণ প্রতিহত করার লক্ষে প্রতটি আন্দোলন কীভাবে নিজস্ব কৌশল গড়ে তুলেছে তার অনুসন্ধান করেছেন। ইতিহাস, সমাজ-বিজ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতাকে মিশিয়ে মানবজাতির আধ্যাত্মিক দিকের গভীর উপলব্ধির আলোক ক্যারেন আর্মস্ট্রং ধর্মীয় আভিব্যক্তির এই চরম রূপটির আকর্ষণীয় ও নিবিড় বর্ণনা দিয়েছেন।

যুক্তিবাদ ,ও বিজ্ঞানবাদের বিকাশের সাথে সাথে ‘ধর্মীয় বরাত’ এ (বা যে কোন কতৃত্বের উল্লেখে) ভাবা ও চিন্তা করাকে ‘নাবালকত্ব’(immaturity) বলে অভিহিত করেছেন কান্ট তার বিখ্যাত প্রবন্ধ “ What is Enlightenment” এ।পশ্চিমের এনলাইটেনমেন্টের ঐতিহ্যের ভেতরে ভাবাভাবি ধর্মকে ‘অযৌক্তিক’ বা মেটাফিজিকাল বলে ঠাওরায় আর একে নিতান্ত প্রাইভেট পরিসরের বিষয় বলে গণ্য করে।পশ্চিমে রাষ্ট্র ও ধর্মের(চার্চের) দন্দের মধ্য দিয়ে ধর্ম ও রাষ্ট্র সম্মপর্কে সেকুলারিজম নামক যে ভাবধারা গড়ে উঠেছে তা ধর্মীয় বরাতে রাজনীতি বা সমাজ বিষয়ের আলাপকে প্রায়শই মৌলবাদী বলে আখ্যায়িত করে।

ধর্মে প্রত্যাবর্তনকে মনোবিশ্লেষনী শাস্ত্রের পরিভাষায় “ The Return of the Repressed” বলা যেতে পারে।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও স্নায়ুযুদ্ধের ফলাফলকে মোকাবিলা করতে হয়েছে পৃথিবীর তিনটি প্রধান কিতাবি ধর্মকে বা ধর্মাবলম্বীদেরকে।সার্বভৌউম রাষ্ট্রের ধারণা, সমাজতান্ত্রিক নির্মান,পশ্চিমের ভোগবাদিতার প্রবলতাকে ধর্ম মোকাবিলা করতে যেয়ে সে তার নিজের ভেতরকার ‘শুদ্ধতার’ ধারনাকে সামনে নিয়ে আসে,যাকে অনেকে মৌলবাদ বলে চিহ্নিত করতে চান।

বাংলা উইকিপেডিয়া মৌলবাদ সম্পর্কে এভাবে উল্লেখ করেছেঃ “মৌলবাদ (ইংরেজি: Fundamentalism) হচ্ছে গোঁড়া ধর্মীয় মতবাদসমূহের কঠোর অনুগমনের চাহিদা যা সাধারণত বোঝায় উদার ধর্মতত্ত্বের বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়া।এই শব্দটি ইংরেজি ফান্ডামেন্টালিজম শব্দের অনুবাদ। মৌলবাদ শব্দটির সাধারণ অন্য অর্থ হল মূলজাত। এখানে মূল শব্দটি দ্বারা ধর্ম বোঝানো হচ্ছে। অর্থাৎ আদি কাল থেকেই ধারনাটি ধর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে। আর সে ধর্ম হল খ্রিস্টধর্ম। খ্রিস্টান জগতে মৌলবাদ নিয়ে তর্ক শুরু হয়েছিলো ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ দিকে এবং বিংশ শতাব্দির দ্বিতীয় দশক পর্যন্ত প্রবল প্রতাপে তা চালু ছিলো। তর্কের শিকড় একটি জায়গায়ঃ বাইবেলে যা লেখা আছে সে সব আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করে মান্য করতে হবে, নাকি পরিবর্তিত পৃথিবীর বাস্তব প্রেক্ষাপট ও মানব ইতিহাসের অগ্রগতির নিরিখে এবং যুক্তিবাদ প্রয়োগ করে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের পর মান্য করতে হবে? মৌলবাদীরা আক্ষরিক অর্থের সব কিছু গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে মৌলবাদ নতুনভাবে তৈরি হয়েছে। সেসব দেশে মৌলবাদের রাজনৈতিক রূপের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রনৈতিক ক্ষমতা দখল। “

উপস্থাপনের রাজনীতি, অপরায়ন ও মৌলবাদ প্রসঙ্গ

কে কাকে কি নামে আখ্যায়িত বা উপস্থাপন করে এটারও রাজনীতি আছে যেটাকে স্টুয়ার্ট হলের ভাষা ব্যবহার করে ‘উপস্থাপনের রাজনীতি’( politics of representation) বলতে পারি। ব্যাপারটা আসলে “One man’s fundamentalism is another man’s revelation; one man’s terrorist is another man’s freedom fighter” অনেকটা এরকম। নামকরণের এই রাজনীতিতে ( politics of naming) মৌলবাদ নামক এই পদখানা এখন নিতান্তই নিন্দাসুচক (পেজরেটিভ টার্ম)। মতাদর্শগত আধিপত্যের একটা প্রধান লক্ষণ হচ্ছে, আধিপত্যশীল মতাদর্শেরই যোগান দেয়া সংজ্ঞা আত্মস্থ করা।তাই এক সমাজতাত্ত্বিক বলছেন “In the animal kingdom, the rule is, eat or be eaten; in the human kingdom, define or be defined.” সামাজিক অবদমনের একটা প্রধান হাতিয়ার হোল সংজ্ঞায়নের অধিকারঃ কে কাকে সংজ্ঞায়িত করে এ প্রশ্ন তাই গুরুত্বপুর্ণ। সংজ্ঞা নির্ধারন করবার অধিকার থাকে আধিপত্যশীল গোষ্ঠীর হাতে। অন্যদিকে, যারা প্রান্তিক তারা সংজ্ঞায়িত হয়; সংজ্ঞায় হাত দেয়ার অধিকার তাদের থাকেনা। যদি প্রশ্ন করা হয় মৌলবাদী কে ,তবে উত্তর আসবেঃ It is the different OTHER who is “Fundamentalist”. কে বা কাকে মৌলবাদী বলে অভিহিত করা হবে তা সংগাদাতার সামাজিক ও মতাদর্শিক অবস্থানের উপর নির্ভর করবে। এক পশ্চিমা তাত্ত্বিক মৌলবাদকে অভিহিত করছেন “Demonized Creation of the modernist” বলে। সংজ্ঞায়ন, ব্রান্ডিং বা ট্যাগিং অনেক সময়ই রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের রণকৌশল হয়ে উঠে কারণ এতে উদ্দিস্ট গোষ্ঠীর কণ্ঠরোধ করা , নস্যাৎ বা প্রান্তিকরণ করার রাজনৈতিক স্বার্থ থাকে।

ধর্মীয় মৌলবাদঃ ধর্মের আত্ন্রসংরক্ষনের বয়ান:

মৌলবাদের নানারূপের মধ্যে ধর্মীয়রূপটাই প্রধান আলোচনার বিষয় বিশ্বজুড়ে।মৌলিক নীতিমালায় স্থিত থাকার নীতিকে মৌলবাদ বললে মৌলবাদ আসলে ধর্মের আত্নসংরক্ষনের উপায়। নিজেকে ‘ঐশী’( Divine) করে রাখার বাসনা যেহেতু ধর্মের আছে তাই ধর্ম অনেকসময় বাহ্যিক নানারকম হস্তক্ষেপ ও নির্বিচার ব্যাখ্যা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়।তাই অনেক ধর্মতাত্ত্বিকরা প্রায়শই মুলানুগ ও আক্ষরিক ভাষ্যের পক্ষপাতি।বিশেষতঃ ইসলাম ধর্মীয় ব্যাপারে যেকোনো উদ্ভাবন ( বিদাত) কে কঠোরভাবে নিসিদ্ধ করেছে তার ‘স্বরূপ’ ও ‘স্বভাব’ কে রক্ষা করতে।

ফান্ডামেন্টালিজম শব্দটির মূল নিহিত নাইয়াগ্রা বাইবেল কনফারেনসে(Niagara Bible Conference (1878–1897))। এ সম্মেলনে খ্রিস্টান ধর্মের মৌল বিশ্বাসগুলোকে চিহ্নিত করা হয় এবং ১৯১০ সালে খ্রিস্টীয় ধর্মবিশ্বাসের ৫ টি মুলনীতির উপর ১২ টি পুস্তক রচিত হয়। এগুলে ‘দি ফান্ডামেন্টালস’ নামে চিহ্নিত করা হয়।প্রেসবিটারিয়ান চার্চের একটি জেনারেল আসেম্বলি খ্রিস্টানিটির সারনির্যাস যে ৫ টি বিশ্বাসের উপর স্থাপিত বলে মনে করেন তা হলঃ ১। বাইবেলের ঐশীত্ব ও অভ্রান্ততা(inerrancy) ২।কুমারীমাতা থেকে যিশুর জন্ম ৩।যিশুর মৃত্যু মানবতার পাপের প্রায়শ্চিত্য ৪। যিশু খ্রিস্টের শারীরিক পুনুরুত্থান ৫। যিশুর অলৌকিক ক্রিয়াকর্মের ঐতিহাসিক বাস্তবতা। খ্রীস্টীয় এই পঞ্চভিত্তির উপর বিশ্বাসে স্থিত যে কাউকেই ‘ মৌলবাদী বা ফান্ডামেন্টালিস্ট’ বলে অভিহিত করা হত।

তবে নিন্দার্থে ‘মৌলবাদ শব্দটির ব্যবহার শুরু হয় মূলত ইরানের বিপ্লবের পর।১৯৭৯ সালে ইরান বিপ্লবের পর থেকে ইসলামের রাজনইতিক বাসনাকে নির্দেশ করতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মৌলবাদ শব্দটির ব্যবহার বেরেছিল। বিংশ শতাব্ধীর শেষপাদে খ্রিষ্টীয় পরিমণ্ডল থেকে প্রায় অপসৃত হয়ে এই শব্দটি পশ্চিমা মনে মুসলিম রিয়্যালিটি বুঝাতে ব্যবহৃত হতে থাকে।‘আফগান যুদ্ধ’,৯/১১ এ টুইন টাওয়ার হামলা,বিশ্বময় আল-কায়দার বিস্তার ইত্যাকার ঘটনার পর মুসলিম ও ইসলামকে বিশেষ ও আলাদা করে বলবার জন্য মৌলবাদ বা জঙ্গিবাদ শব্দবন্ধটি ব্যবহৃত হয়।যদিও মৌলবাদ আর জঙ্গিবাদকে সরাসরি সমার্থক বলা যায়না ;তবে অনেকেই তাদের মধ্যকার অর্থগত নৈকট্য আছে বলে মনে করেন।এভাবেও বলা যায় যে, সকল জঙ্গিবাদই মৌলবাদ কিন্তু সকল মৌলবাদ জঙ্গিবাদ নয়। বর্তমান কালে একই সাথে ধর্মীয় ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিকেও ‘মৌলবাদী’ বলে আখ্যায়িত করা হয় সেকুলার বলে দাবিদার সমাজে।

হিন্দু মৌলবাদের চরিত্র ভিন্ন। হিন্দুরা যেহেতু অভিন্ন ও একক দেবতার পূজক বা উপাসক নয় সেহেতু নিষ্ঠ কিতাবানুসারী হওয়া তাদের জন্য কঠিন। অভিন্ন উপাস্যের ও একক কিতাবের অভাবে শাস্ত্রীয় মৌলবাদের প্রসার হিন্দুধর্মের আওতায় বেশ কঠিন। তবে হিন্দু পরিচিতির যে দৈশিক বা রাষ্ট্রিক বা রাজনৈতিক জাতীয়তাবোধ সেটাই অনেক সময় উগ্র ও অসহিস্নু চেহারা নিতে পারে। হিন্দ> হিন্দু> হিন্দি একই সাথে দেশনাম –জাতি বা ধর্মনাম- ভাষানাম এই বোধই ভারতীয় জনতা দলের উদ্ভবের বা বিকাশের মুলে।

হিন্দুত্ববাদকে সামনে রেখে ভারতের বিজেপি ,রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ, শিবসেনা ইত্যাদি নানাদলের রাজনীতিকেও মৌলবাদ বলে অভিহিত করা হয়।হিন্দুত্ব একইসাথে জাতীয়তা ও ধর্ম।শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সংজ্ঞা অনুসারে “ হিন্দু কেবল সেই ব্যক্তিই, যে এমন এক ধর্মে আস্থা রাখে যা ভারতেই উদ্ভুত হয়েছে”। হিন্দু মহাসভা ও বিশ্বহিন্দু পরিসদের কাছে তাই ভারতীয় মুসলমানরা ভারতীয় জাতি বা জাতীয়তাভুক্ত নয়। সাভাকর –মুঞ্জে-শ্যামাপ্রসাদ প্রমুখ ১৯১৫ সালে মুসলিম লীগ ও দৈশিক জাতীয়তাবাদে আস্থাবান উদার বুর্জয়া হিন্দু দিয়ে গঠিত ও পরিচালিত ধর্মনিরপেক্ষ ‘ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের’ বিরুদ্ধে হিন্দু মহাসভা নামে হিন্দু জাতীয়তাবাদী এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেন । আহমেদ শরীফ প্রশ্ন রাখছেন , ভারত স্বাধীন হবার পরেও কেন শতে পঁচাশি জন হিন্দুর রাষ্ট্রে ভারতে হিন্দু মহাসভাকে ১৯৪৯ সনের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত কোলকাতা সম্মেলনে হিন্দু রাষ্ট্র, হিন্দুজাতি ,হিন্দু কৃষ্টি, হিন্দুর উন্নতি, শক্তিবৃদ্ধি প্রভৃতির জন্যে প্রস্তাব গ্রহন করতে হল ? আবার স্বাধীন ভারতে সাভাকাররা কেনইবা হিন্দু রাজত্ব স্থাপনে ও হিন্দুর অধিকার রক্ষায় উদ্যোগী হবেন ? স্বাধীন ভারতেই ১৯৬৪ সালে গঠিত হোল সর্বপ্রকার পিছিয়ে পড়া দরিদ্র-অশিক্ষিত হিন্দুর “ বিশ্বহিন্দু পরিষদ” । এ পরিষদ উদার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রসারক প্রতিষ্ঠান না হয়ে হলো জাতীয় জীবনের সর্বখেত্রে হিন্দুয়ানী বৃদ্ধির প্রয়োজনে সনাতন ও শবাশত হিন্দু জীবনের মুল্য- মহিমা রক্ষণ,প্রচার আর প্রসারকামী ধর্মীয়দল।

একাডেমিক পরিসরের বাইরে ও ভেতরে ইহুদী মৌলবাদ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।ইহুদীগন নিজেদেরকে বিধাতার ‘ চৌজেন রেস’ বা পছন্দনীয় জাতি মনে করেন। বিধাতার পক্ষ্য থেকে তাদের জন্য রয়েছে ‘প্রমিজড ল্যান্ড’ বা প্রতিশ্রুত ভুমি। ইহুদি ধর্মে এই প্রতিশ্রুত ভুমির ধারণা অনেকটাই কেন্দ্রিয়। ইহুদিরা মনে করে তাদেরকে বিতারিত করা হয়েছিলো তাদের পিতৃভূমি জেরুজালেম থেকে ;তাই, যেহেতু তারা উচ্ছেদকৃত তাদের ভুমি থেকে ;তাই তাদের পুর্ণ অধিকার রয়েছে তাদের আবাসভুমি পুনরায় ফিরে পাবার।জেরুজালেমে প্রত্যাবর্তনের এই ধারণা ইহুদীদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের প্রধান কর্মসুচীতে রূপান্তরিত হয়। ১৮৪৫ সালে ইয়োহুদা আলকাআই এই প্রক্রিয়া শুরু করেন এই বলে যে, “ আমাদের পরিত্রাণকারী কোন ব্যক্তি নয় ;বরং এটি একটি প্রক্রিয়া। আমাদের সংগঠিত হতে হবে,নেতা নির্বাচিত করতে হবে ও নির্বাসন থেকে ফিরা আসতে হবে।“ ইহুদিদের নানারকম ধর্মীয় ধারণাগুলোকে সুত্রায়িত করে হার্জেল এটাকে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের দিকে নিয়ে যান। এভাবে জায়নবাদের মুল প্রকল্প হয়ে দাঁড়ায় ইহুদি জাতি ও তার জন্য একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা । এই ভাবে ‘প্রতিশ্রুত ভুমি’ নামক এই ধর্মীয় ধারণার রাজনৈতিক ব্যাখ্যা একটি রাষ্ট্র নির্মাণের ভিত্তিভুমি হয়ে উঠলো। রাজনৈতিক দার্শনিকদের অনেকেই মনে করেন জায়নবাদী নামক এই মৌলবাদী প্রকল্প পৃথিবীতে বহু উগ্রবাদের জন্ম দিয়েছে।এখানে উল্লেখ করা অপ্রাসঙ্গিক হবেনা যে,তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক ড স্লোমো স্যান্ড তার বিখ্যাত বই ‘ দি ইনভেনশান অফ জিইউস পিপল’ এ ইহুদিদের নির্বাসন ও উচ্ছেদের ধারণাকে নস্যাত করেছেন ব্যাপক পরিমানে প্রত্নতাত্ত্বিক, ফরেনসিক ও অন্যান্য প্রমাণের সাপেক্ষ্য। এভাবেই কোন কল্পিত অতীত স্মৃতিও ভয়াবহ মৌলবাদী প্রকল্পে পরিণত হয়ে আগ্রাসী চেহারা নিতে পারে।

মৌলবাদ পর্যালোচনাঃ রাজনীতি ও ক্ষমতা-সম্পর্কঃ

উৎপত্তিগতভাবে এবং সাধারণদৃষ্টিতে মৌলবাদকে ধৰ্মীয় লাগলেও মৌলবাদের মর্মে আছে রাজনীতি ও অর্থনীতি। প্রথমে প্রটেস্টাণ্ট খ্রিস্টান ধর্মের মৌলবাদের ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার স্বার্থের সাথে সম্পর্ক ছিল। ইসলামিক বা হিন্দু মৌলবাদের কথা যদি ধরা হয়,তাতে শাস্ত্রীয় অভ্রান্ততা এবং আক্ষরিকতাবাদ মুল কথা না অনেক ক্ষেত্রেই ---মূল কথা হোল রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা এবং ক্ষমতায় আরোহণে তার ব্যবহার। মূলত মৌলবাদ হোল একটা নির্মিত পরিচিতিঃ সেই পরিচিতির সীমার ভেতরে কে থাকবে ,বাইরে কে থাকবে এবং সেই পরিসীমা নির্ণয় এবং সুরক্ষার ক্ষমতা কার হাতে থাকবে – এটা গুরুত্বপুর্ণ প্রশ্ন।এই পরিচিতির বাইরে থাকা ‘অপর’ এর প্রতি ঘৃণা বা ভীতি উৎপাদন করার মাধ্যমে এবং পরিচিতির পরিসীমার ভেতরে থাকা সকল বৈচিত্র আর বিভিন্নতাকে দূর করে একটি ‘বিশুদ্ধ সমসত্ত সাংস্কৃতিক সত্তা নির্মান করা এবং তাকে ভিত্তি করে ক্ষমতা অর্জনই মৌলবাদের লক্ষ্য।

মৌলবাদ ও আধুনিকতা:

মৌলবাদ প্রকৃত অর্থেই এক আধুনিক প্রপঞ্চ।মৌলবাদ জটিল ও আধুনিক সমস্যাসমূহের প্রাচীন সমাধান প্রস্তাব করে। রুথভেন এর ভাষায়ঃ “... they feed on contemporary alienation or anomie by offering solutions to contemporary dilemmas, buttressing the loss of identities sustained by many people (especially young people) at times of rapid social change, high social and geographical mobility, and other stress-inducing factors.’ আধুনিকীকরণ তথা সেকুলারাইজেশান প্রক্রিয়াটা একটা একমুখী প্রক্রিয়া না; বরং একটা জটিল দান্দিক প্রক্রিয়ার অংশ। আধুনিকীকরণের অর্থনৈতিক এবং সেকুলার শক্তিসমুহ নিজের মদ্ধ্যেই প্রতিক্রিয়ার সেই বীজ লুকীয়ে রাখে যেটা আমাদের সামস্টিকক জীবনের কেন্দ্রে ধর্মকে ফিরিয়ে আনতে পারে। ‘The Politics of Secularism and the Recovery of Religious Tolerance’ এ আশীস নন্দী ‘বিশ্বাস হিসেবে ধর্ম’ (religion-as-faith) আর ‘ভাবাদর্শ হিশেবে ধর্ম’ (religion-as-ideology) এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য টেনেছেন। প্রথমটা হল জীবননীতি হিশেবে ধর্ম যেটা বাস্তবে বহুত্ববাদী ও সহনশীল। দ্বিতীয়টা, আশীস নন্দীর মতে, অর্থনইতিক ও রাজনইতিক সার্থের খাতিরে ধর্মবিশ্বাসীদেরকে সংগঠিত করার মতাদর্শ। প্রথমটা পরম্পরাগত আর দ্বিতীয়টা পটভুমিসৃষ্ট।তথাকথিত সেকুলার রাজনীতি আধুনিক রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা(formation of modern state practices) গঠন প্রক্রিয়ায় ‘মতাদর্শ হিসেবে ধর্ম’ এর বিকাশ ঘটায়।

মৌলবাদ,জাতীয়তাবাদ ও ফ্যাসিবাদ :

মৌলবাদ ‘পবিত্র ও গৌরবময়; অতীতের কথা বলে; মৌলবাদে বর্তমানকে দেখা হয় ‘অবক্ষয়িত’ আর ভবিষ্যৎকে দেখা হয় ‘ইউটোপীয়’ হিশেবে।জাতীয়তাবাদ যেমন অতীত স্মৃতিকে ব্যবহার করে; ধর্মীয় মৌলবাদও ঠিক তাই করে। মৌলবাদ কেবল একটা রাজনৈতিক মতাদর্শই না ,এটির এক নৈতিক আয়তনও আছে। নৈতিক ব্যবস্থা হিশেবে এটি তার সকল অনুসারীদের কাছ থেকে প্রশ্নহীন আনুগত্য দান করে। বলের ব্যবহার বা ‘ শহীদি মৃত্যুর’ প্রতি নৈতিক অনুমোদন দেয়। এই বৈশিস্ট জাতীয়তাবাদেও পরিলক্ষিত হয়।
বিজেপি এর নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচিত হওয়াকে অনেকে হাই-টেক বা কর্পোরেট মৌলবাদ(Hi-tech /Corporate Fundamentalism) বলতে চান যেখানে করপরেট জগত তাদের পুঁজির বিকাশ,গঠন ও নিরাপত্তার স্বার্থের নিশ্চয়তা লক্ষ্য করেছে মোদীর মধ্যে। হিন্দু ধর্ম ও হিন্দি ভাষা ভারতের অখন্ডতা টিকিয়ে রেখেছে। মিডিয়া- মিডিটেটেড(Media-mediated) করপরেট ধর্মতত্ব ভারতের জাতীয় সংহতিতে ভুমিকা রাখছে।আমেরিকার রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও ধর্মীয় প্রতীকের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
জাতীয়তাবাদ ও মৌলবাদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য থাকলেও ;তাদের মধ্যে কিছু জৈবিক মিলও আছে। জাতীয়তাবাদ ব্যাপারটি মূলগতভাবেই সেকুলার বা ধর্মমুক্ত নয়। Ruthven বলছেনঃ ‘Everywhere nationalisms have been permeated by religious symbols, especially in places where the core identities that came to constitute nationhood had been buttressed by religious differences.’
ইসলাম ধর্ম জাতি বা দেশের পরিবর্তে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের ভ্রাতৃত্বের দাবি জানায়।ইসলাম ধর্মে একে ‘উম্মাহ’ বলে অভিহিত করা হয়।অনেকে মৌলবাদকে ‘ধর্মীয় জাতিয়তাবাদ’ বলে অভিহিত করেন।

মৌলবাদ ও পৃথিবীর ঔপনিবেশিক অতীত :

পাশ্চাত্য দুনিয়ার অভ্যন্তরে ও বাইরে উভয় জায়গায়ই মৌলবাদ লালিত হয়।পৃথিবীর অন্য যেকোন জায়গার তুলনায় আমেরিকার শিক্ষিতমণ্ডলীর কাছে ডারউইনের বিবর্তনবাদ সবচেয়ে সংগঠিত বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছে। মৌলবাদের সাথে পৃথিবীর ঔপনিবেসিক অতীতের সম্পর্ক যেমন আছে ,তেমনি মৌলবাদের সর্বোচ্চরূপ জঙ্গিবাদের সাথেও আছে সাম্রাজ্যবাদের সম্পর্ক। ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণে প্রজাদের মধ্যে আত্নপরিচয় নির্মান বা উদ্ঘাটনে প্রায়শই ধর্মে ফিরে যাওয়ার অজস্র নজির আছে।ঔপনিবেশিক শাসকদের পরিবেশিত বিকৃত ইতিহাস ভারতবর্সে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দিয়েছিল। জেমস মিল প্রণীত ভারতবর্সের ইতিহাস বইটি এ ক্ষেত্রে ভাল উদাহারণ।

ধর্মের পুনর্পাঠঃ ব্যাখ্যার বিবিধতা

ধর্মের জগত ব্যাখ্যা অনড় বা অটল থাকেনা স্বাভাবিক কারণেই। কারণ পরিবর্তিত পরিপ্রেক্ষিতে নতুন জ্ঞান ও প্রজ্ঞা নিয়ে ব্যক্তি যখন দাঁড়ায় ধর্মের টেক্সটের সামনে তখন সতস্ফুর্তভাবেই ব্যাখ্যার বিবিধতা গড়ে উঠে।ধর্মের ভেতরকার প্রতীকি ব্যঞ্জনা ও তার প্রাসঙ্গিকতাকে কোন একক ব্যখ্যার বেষ্টনীতে প্রায়শই আবদ্ধ রাখা যায়না।ফলে আক্ষরিকতাবাদের যে মৌলবাদ সেটি জটিল সমাজ ও বিশ্বব্যবস্থায় খুব বেশি কল্কে পাওয়ার সম্ভাবনা নাই।ব্যাখ্যার বিবিধতা সহিষ্ণুতার সংস্কৃতির জন্ম দেয়।তাই সহিষ্ণুতার রাজনীতির রণকৌশল হিশেবে আমাদের দ্বিবিধ সংগ্রামঃ একদিকে বাইরে থেকে আরোপিত সমসত্ত সাংস্কৃতিক পরিচয় নির্মানের প্রচেষ্টা কে ‘না’ বলা আর ভেতর থেকে গণতন্ত্রায়নের চর্চা শুরু করা। মৌলবাদ তখনই অনিষ্টকর যখন তা উগ্রতায় পর্যবসিত হয় ,ঠিক যেমন জাতীয়তাবাদ ক্ষতিকর যখন তা হিংস্র চেহারা নেয়।অপরকে আপন করার চেতনার বিকাশের মধ্য দিয়েই সমাজকে উগ্রতা বা চরমপন্থা থেকে মুক্ত করা যায়।

(আমার এ লেখাটি একটি সঙ্কলনে প্রকাশিত; সামুতে রেফেরেন্স/গ্রন্থসুত্রগুলো বাদ দিলাম)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×