গতকাল বিকালে লিখছিলাম বিএনপিকে আন্দোলন করার জন্য।
ওমা! রাতে দেখি এনসিপি সহ লীগ-বিরোধী জুলাই শক্তি আন্দোলন করতেছে।
গতকালের লেখাঃ সাবেক রাষ্ট্রভাঁড়ের দেশ ত্যাগ
এদিকে এই কারবার দেইখা সামুতে একজন জিগায়া বসলো, আমি প্রশ্নফাঁস জেনারেশনের কিনা!
অথচ এটা প্রশ্ন না, সাজেশন ছিলো। কিন্তু দিছিলাম একজনরে মানতেছে আরেকজন।
যারে সাজেশন দিছি সে পরীক্ষাই দিচ্ছে না, উলটো পরীক্ষাবিরোধী অবস্থানে আছে।
৩২ ভাঙার সময়ে যেমন বিএনপির অবস্থান বা ম্যান্ডেট জানতে চাচ্ছিলাম ঠিক তেমনি গতরাতেও বিএনপিকে খোঁজা শুরু করলাম।
পরে দেখি ম্যান্ডেটতো দূরে, বিএনপির সাইবার ফোর্স দেখি পুরো উলটো অবস্থান। অফিসিয়ালি কি অবস্থান সেটা অবশ্য জানা নেই এখনও।
বিএনপি-ছাত্রদলের দাবী, এটা ইন্টেরিম এর সাজানো আন্দোলন। কারণ আন্দোলনের প্যাটার্ন। কথায় যুক্তি আছে। আবার অনেকেতো ২০১৩ এর শাহবাগের বিরিয়ানি আন্দোলনের সাথে মিলাচ্ছে একটু পানি ছিটা দেয়ায়।
কিন্তু এই যুক্তি কি এখনকার প্রেক্ষাপটে পুরোপুরি খাটে? পুলিশ ইচ্ছে করে হোক, ভয়ে হোক আইনশৃঙ্খলাই ঠিকমতো সামলাচ্ছে না। সেখানে যারা জুলাইয়ের নায়ক, হাসিনারে খেদাইছে, যাদের জন্য আজকের ইন্টেরিম - তাদেরকে কি পুলিশ আগ বাড়ায়া হামলা করতে যাবে?
আর রাস্তায় নামলেই যদি পুলিশ পেটাবে, এই আশা নিয়ে বসে থাকে - তাইলে জুলাইর কি দরকার ছিলো? নাকি পুলিশ আগের অ্যাকশনেই থাকুক, শুধু নিজেদের পক্ষ হয়ে, এটাই চাওয়া? এই চাওয়াতে অবশ্য দোষের কিছু নাইক্যা। সরকারে থাইকা আগের মত জনবিরোধী পুলিশ পাইলে গদি মজবুত থাকে। অদূর ভবিষ্যতের সত্য হিসেব এখন একটু স্বাদ চাইলে সেটাও দোষের কিছু না।
আর এনসিপির বিরুদ্ধে যেহেতু গৃহপালিত আন্দোলনের অভিযোগ উঠেছে তারাও সেটা প্রমাণ করুক।
শুধু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না, আরো দাবী গুলোও তুলুক যেটা জুলাইর ফল হিসেবে আপামর জনগণের অধিকার।
যেমন -
১। জুলাই সনদ
২। সকল নিখোঁজ, শহীদ, আহতদের পূর্ণাঙ্গ লিস্ট এবং তাদের সহায়তার আপডেট।
৩। ফ্যাসিবাদ যাতে আর কখনও কায়েম না হয় তার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার।
৪। লীগের বিচার কার্যক্রম।
এই দাবীগুলোও থাকলে আশা করা যায় এই আন্দোলন গৃহপালিত বলার সুযোগ থাকবে না।
বিএনপিরও আপত্তির সুযোগ থাকবে না। থাকলেও প্রকাশের ভাষা সহজ হবে না।
বিএনপি কি করবে?
আর বিএনপি-ছাত্রদলের অনলাইন যোদ্ধা-বোদ্ধারা যেহেতু বলছে এখানে শুধু রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের আলাপ, লীগের বিচারের আলাপ নাই। তাহলে তারাও বিচারের আলাপ তুলে যোগ দিক। আর ইগোইস্টিক প্রবলেমের জন্য যদি যোগ নাই দেয়া যায়, তাহলে নিজেরাই আরেকটা আন্দোলন দিক।
এতে বিএনপির বিরুদ্ধেও যে, লীগকে দল হিসেবে টিকায়া রাখার যে আলাপ সেটাও থাকলো না।
তবে এনসিপি সহ লীগবিরোধী জুলাই শক্তি একটা ইন্টারেস্টিং ট্রাম্প কার্ড খেলার চেষ্টা করতে পারে।
সেটা হচ্ছে খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎকারে সুযোগ চাওয়া এই ইস্যুতে। কোনভাবে যদি সাক্ষাৎকার পাওয়া যায় ইন্টারেস্টিং একটা আউটপুট তো পাওয়া যাবে।
যমুনা থেকে শাহবাগে লীগ নিষিদ্ধের নতুন আলোড়নে দুটো জিনিস বিদঘুটে লাগছে। যেটা করা উচিৎ হয় নাই।
১। মঞ্চ বানানো। আন্দোলন অর্গানিক লাগে না এগ্লা মঞ্চ বানালে। সমাবেশ সমাবেশ ভাব চলে আসে।
২। লীগ জবাই করার স্লোগান। তফাৎ রাখা দরকার লীগের সাথে। এগুলো লীগের বয়ান ছিলো।
যাকগে, জুলাইর শক্তিগুলো ভাগভাগ হয়ে কত তাড়াতাড়ি লীগ ফিরায়া আনার বন্দোবস্ত তৈরি করে, আক্ষেপের সাথে সেটাই দেখার বিষয় হবে হয়তো সামনে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:৪৬