রাত সাড়ে দশটায় কাচপুর নেমেই বেকুব হয়ে গেলাম। কিচ্ছু নাই। ফাকা সব। কুয়াশাও বেশ।গাউসিয়া যাব।
রাস্তায় কয়েকটা লেগুনা। সমানে গাউসিয়া গাউসিয়া করে চেঁচাচ্ছে।এতো রাতে এগুলায় উঠা ভয়ংকর রিস্ক।
খালি জায়গায় একা যাত্রী পেলে শার্ট প্যান্ট পর্যন্ত খুলে নিয়ে যাবে।নিচেরটাও নিয়ে নেবে পারলে।
সকালে দেখা যাবে ঐটা দিয়ে গম্ভীর মুখে লেগুনার কাচ পরিস্কার করছে হেল্পার।
এর ভিতর এক হেল্পার এসে আমাকে টানাটানি শুরু করে দিলো।আমি বিরক্ত হয়ে চেঁচিয়ে উঠলাম, হৈ মিয়া। আমি যামু সিলেট।
তোমার এই ঠেলা দিয়া সিলেট যাওন যাইবো ? বেহুদা কাপকাপ না করলে হয়না??
ঠেলা বলায় ভাবছিলাম আঁতে ঘা লাগবে হেল্পারের।কিন্তু এতো সহজে হার্টেড হয় না এরা।
আমার পরনে হাফ হাতা পোলো টি শার্ট। এর উপরে হাফ হাতা জ্যাকেট। এতো ঠাণ্ডা পরবো রাস্তায় ভাবি নাই।
ঠাণ্ডায় ব্যাকা হয়ে যাওয়ার দশা। হাত প্যান্টের পকেটে দিয়েও শান্তি নাই। ছোট বেলার মতো গেঞ্জির ভিতর হাত ঢুকিয়ে হাত কাটা মানুষের মতো হয়ে যাবো কিনা ভাবতে ভাবতে একটা চকচকে বাস চলে এলো। একটু স্লো করার সাথে সাথে লাফ দিয়ে উঠে গেলাম।
উঠে আবার বেকুব হয়ে গেলাম।
লুঙ্গি মাফলারওয়ালা কাস্টমার সব। আমি আঁতকে উঠলাম। এইটা সিউর ভৈরবের বাস।সারা রাত যাবত চলতেই থাকব।
একসময় দেখি ওই লেগুনাও বাসটাকে পাস কাটিয়ে চলে গেলো।বাস থেকে নেমে একটা দৌড় দিলেও এর আগে পৌঁছে যাবার কথা । এমন স্পিড বাসের।
এর ভিতর ক্ষুধায় মাথা বন বন করতাছে।
ব্যাগে ইমারজেঞ্ছি হিসেবে লেক্সাস বিস্কিট থাকার কথা। বের করে দেখি চাপ খেয়ে পুরা পাওডার। মেজাজ খারাপ করে ড্রাইভারকে বললাম,
ওই মামা। কি ালের বাস চালাও।তোমার শক্তি নাই? বউ খাওয়ায় না?
আয়নায় দেখি ড্রাইভারের কোন বিকার নাই।ভৈরবের বাসে এর থেকে বেশি স্পিড আশা করায় অবাক হলো সে।
আশেপাশের যাত্রীদের কোন রা নেই। আমার পাশের যাত্রিকে দেখি ব্যাগ থেকে মুড়ি বের করে খাচ্ছে। মুড়ি খাইবেন? আমার দিকে তাকিয়ে বলল সে।
না বলার মতো সিচুএসান নাই আমার। গম্ভীর মুখে মুড়ি চাবাতে লাগলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫৬