বুয়েটে আসার পরে
অনেক দিন আমি সৌন্দর্য্য দেখিনি
লাইব্রেরী, আর্কির চিপায়,
সিভিল বিল্ডিং, ইএমই কিংবা ক্যাফেটেরিয়ায়
লম্বা পথ ধরে হেটেছি,
ইউ আর পি আর মেডিক্যাল সেন্টার আর্কি রেখে বায়
দুই ধারে হাফ ওয়ালে থরে বিথরে দেখেছি কত নারী
শুধু দেখিনি তাকে রুপবাহারী
নাই কোথাও নাই
ওএবির পেচানো সিড়ি ধরে, দোতলার গলি দিয়ে
এদিক দিয়ে, সেদিক দিয়ে, আরো অনেক ভিতরে গিয়ে
ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি আর এম এম ই পেরিয়ে
চলে গেছি অনেকদুর
কেমিক্যালের আশেপাশে ক্লাসের ফাকে ফাকে
পার করেছি ওয়ান-ওয়ান ওয়ান-টু
এটেন্ডেন্স গিয়েছে, ল্যাগ এসেছে
সুন্দরী আসেনি।
ক্যাফেটেরিয়ার টেবিলে টেবিলে, কাউন্টারের ভীড়ের মাঝে
ডেল ক্যাফে আর অডিটোরিয়ামের দোতলায়
মুর্চ্ছনার প্রোগ্রামে সংগীত নয়, সুন্দরীর আশায়
দিনের পর দিন কাটিয়েছি নিদারুন ব্যর্থতায়
বন্ধুর সান্তনা, বাদ দে, বুয়েট সুন্দরীদের জন্য নয়।
পুয়েটের বালুকাময় মরুভুমি পেরিয়ে
নতুন বিল্ডিং এর নিচতলায় আদুর ক্যান্টিনে দাঁড়িয়ে
পশ্চিম পাশে সি এস ই, যদি একটা দেখা যায়!
অভাগা যেদিকে যায় সাগর শুকিয়ে যায়
এই কথাটাই কেন যেন বারে বারে সত্যি হয়!
বিধাতা মুচকী হাসে, আড়ালে কলকাঠি নাড়ে
অবশেষে মিলায়
প্রহর শেষের সন্ধাবেলায়
সোডিয়াম লাইটের হলুদ আলোয়
উজ্জলের চায়ের দোকানের সামনে দেখেছি তারে
ঘাড় ঘুরিয়ে, ডানে-বাম্ সামনে-পিছনে, বারে বারে!
ঘনকালো চুল, ঢেউয়ে ঢেউয়ে পিঠ ছাড়িয়েছে অবাধ্যতায়
চারকোনা ফ্রেম, চোখের সৌন্দর্য্য একটুও ঢাকা পড়েনি তায়
সাদা একটা ওড়না, কতটুকু আর লুকানো যায়?
ফর্সা গালে গোলাপী আভা
কানে লম্বা দুল
আঙ্গুলে নেইলপলিশ, নেই কোন বাড়াবাড়ি
লাল ঠোটে মিষ্টি হাসি
মিষ্টি মেয়ে তোমাকে বলি, আসলেই তুমি সুন্দরী।
তবে তোমায় চুপিচুপি বলি
যার পাশে দাঁড়িয়ে চা খেতে খেতে গল্প করছিলে
সে ব্যাটা আস্ত গাড়ল, সৌন্দর্য্যের সে কি বোঝে? এসব কি আর তাকে ভাবায়?
তার চেয়ে মনে হয় আমি………
না থাক, সুখে থাকো তুমি, আমি থাকি কবিতায়!
--এম আর পলাশ
২৩ ডিসেম্বার, ২০১১
বিকেল ৫.১০