somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোমার জন্যে, পূর্ণিমা!

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঙ্গালীকে, আরো বিশেষ করে বললে আমাকে পূর্নিমা দেখতে চিনিয়েছেন তিনি। উজ্জ্বল পূর্ণিমা তাকে উদ্দেলিত করেছে, বারে বারে পূর্ণিমা এসেছে তার লেখায়। পূর্ণ চাদের আলোয় স্নান করে উন্মাতাল হতে চিনিয়েছেন। আমার জীবনে পূর্ণিমা অনেক বছরের সেই জন্ম থেকে। আমার বাবার কিংবা দাদার আমলেও পূর্ণিমা হতো। প্রাগৈতিহাসিক কালের, অতি পূরাতন এই বিষয় বাঙ্গালীকে হাতে ধরে চোখে আঙ্গুল দিয়ে তিনি বুঝতে শিখিয়েছেন।

সেই মনকাড়া সৌন্দর্য্যে পাগল হয়েছি বার বার, আবারো হবো। তখন হয়তো থাকবেন না তিনি, আমরা থাকবো তার দেখানো পথে। জোৎস্নায় পাগল হবো, গভীর দুঃখে বনে যাবো। উন্মাতাল হয়ে ঘোরের জগতে যাবো।

তিনি অসুস্থ, তার সুস্থতা কামনা করে এই কবিতাটা তাকে উৎসর্গ করে দিতাম, কিন্তু কবিতা তাকে উৎসর্গ না করে শুধু কৃতজ্ঞতা জানালাম, এই কবিতা শুধু একজনের। আমার এই কবিতা শুধু একজনকেই উদ্দেশ্য করে লেখা। যদিও এই কবিতা তার শোনার সম্ভাবনা শুন্যের কাছাকাছি। তবুও তাকে ছাড়া এই কবিতা আর কাউকে প্রাণে ধরে দেয়া গেলনা!

আমি অপারগ। ক্ষমাপ্রার্থী!


তোমার জন্যে, পূর্ণিমা!
--------------------

আজ রাতে পূর্ণিমা।
অনেক বছর আগে এমনি এক জ্যোৎস্না রাতে
উথাল পাতাল জ্যোৎস্না দুহাতে মেখে
হারিয়েছিল সে অপার্থিব মুগ্ধতায়, স্বপ্নিল ভালবাসায়।

হাতের মুঠোয় প্রিয় মানুষের হাত রেখে একজোড়া মানব মানবী
জ্যোৎস্না দেখতো তারা একে অপরের সাথে
গভীর ভালবাসা, মাতাল হাওয়া আর উত্তাল সৌন্দর্যের ভেতর
ভালবাসতে বাসতে বাসতে একসময় হারিয়ে গেল।।
আমাদের মতই ছিলো তারা
ক্ষুধা-তৃষ্ণায়, আনন্দ-বেদনায়, কামে-কলায়।।
ভালবাসতে বাসতে নাই হয়ে গেল, বাগানবিলাশি সেই জোৎস্নায়।

অনেক আসা, অনেক যাওয়া, অনেক অনেক মানবধারা।
পেরিয়ে আজ আমার পালা
আমার সামনে আজ জ্যোৎস্না।
বাশবাগানে মৃদুমন্দ বাতাস, কলতলায় পানির শব্দ।
সেখান থেকে দাঁড়িয়ে বাশবাগানে সরু পাতার ফাকে ফাকে উকি দেয়
দেখি এক চাঁদ থালার মতো বিশাল, অন্য ভুবনের শুভ্রতা।
অনেক জনমের অনেক স্বপ্ন সাক্ষী, অনেক ইতিহাস বুকে নিয়ে
আজো উঠেছে সেখানে, তার যেখানে থাকতে হয়।

আমাদের নিরন্তর যাওয়া আসা চলে।
আমাদের বদল হয়।
মানচিত্র, জাতীয়তা, সমাজ, সভ্যতা।
ধর্ম বদলে যায়, দিনে দিনে ইতিহাস পালটায়।
মুখের ভাষায় ঘুণ ধরে, চুপে চুপে বদলে যায়।

প্রতি পক্ষকাল পরে শত-জনম ধরে
সে সেখানেই আছে, অনন্ত কালের যাত্রায়

আজ আমি অনেক ব্যস্ত, গভীর আলোচনায়
ফ্রয়েড, লেনিন, মার্ক্স আর মোহাম্মদ, অর্জুন, অশোক আর শ্রীকৃষ্ণ
জ্যোৎস্না দেখার সময় কোথায়?

পেছন থেকে শুরু, প্রতিবার আরো পেছনে।
যতই সামনে যেতে চাই
পেছনের টানে আরো একধাপ পিছিয়ে যাই
সমাজ, সংসার, সভ্যতা
ইতিহাস, ঐতিহ্য আর নৈতিকতা
এক এক করে টেনে নেয়, পেছনে, অন্ধকারে, আরো ভেতরে।
একরাশ কালো অন্ধকারে।

এইবার আমি বাস্তব। আজন্ম মানব, উত্থিত পৌরুষ।
গরুর মাংস-পরোটা, পেতলের টুংটাং
সবজীর হালুয়া প্লেটের উপরে নীচে মাখামাখি।
ডাইনিং এর টেবিলে অসীম খাবারের পসরায়
সেই সময়ে সে আরো সুন্দর হয় প্রতিমুহূর্তে
ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় বিম্বিত সৌন্দর্য
যখন বাড়তে থাকে, সমান্তরাল আর গুণোত্তর ধারায়

দেহের খাবার আর মনের খাবার দুপাশে নিয়ে
মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকি আমি
ফার ফ্রম দ্যা মেডিং ক্রাউড
এই কথায় ভাসতে ভাসতে আত্মা চলে যায় দূর প্রান্তে
অনেক দুরের ঘাসের বনে
আলতা রাঙ্গা ফর্সা পায়ের আর রুপার নূপুরের খোজে।
প্রতিটি পদক্ষেপে তার ছন্দ
রিনিঝিনি করে নূপুর বাজে।

আবার আলোচনা, হোমো ইরেকটাস, হোমো সেপিয়েন্স
শিম্পাঞ্জী আর পুশমিপুলু দেখিনি এসবের কিছুই
দেখার আগেই দেখি জানালার ফাঁক গলে হাজার বছরের জ্যোৎস্না
চুপে চুপে আজো আস্তে আস্তে কিভাবে হারায়!

শত বছরের ফেলে রাখা কাজ, ফেলে রেখে আরো দশ বছর।

বর্ষার মেঘমালা, কলাগাছের ছোটভেলা, কালবৈশাখীর ঝড়
এখানে সেখানে ফেটে যাওয়া কালো জামের সাদা মাংসের মত
সাত দিনের ব্যর্থ জীবন, দশদিনে তার পরাজয়
আমি তাই আজ হারাতে চাই, মাতাল করা জ্যোৎস্নায়।

-পলাশ মিজানুর রহমান
(উৎসর্গঃ যার নামে কবিতা)
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×