খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে বিদেশে পাঠিয়ে যারা রাজনীতি বদলাতে চান তাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি
হাসিনা খালেদা কেউই নিজের ইচ্ছায় রাজনীতিতে আসেননি
জিল
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এ দুজনের একজনও নিজের ইচ্ছায় বা নিজেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজনীতিতে যোগ দেননি। 80-র দশকে দুটি দলেরই অবস্থা যখন ভাঙ্গণের পথে এবং নেতৃত্ব নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল তখন দলের সিনিয়র নেতাদের অনুরোধে হাসিনা ও খালেদা রাজনীতিতে সক্রিয় হন। 80-র দশকের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও বই থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
80-র দশকের পত্রপত্রিকা ও বইপত্র বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, 1975 সালের 15 আগষ্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনা প্রায় 6 বছর স্ব-নির্বাসিত জীবন যাপন করেন। এ সময় তিনি বৃটেন ও ভারতে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ড. কামাল হোসেন বহুদলীয় গণতান িক চেনতায় এবং আব্দুর রাজ্জাক বাকশালের একদলীয় চেতানায় উদ্বুদ্ধ হলে আওয়ামী লীগ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তখন দেশের সার্বিক পরিস্থিতিও সংকটাপন্ন ছিল। দলের মধ্যে অন র্দ্বন্দের কারনে তখন নেতৃত্ব সংকট দেখা দেয়।
1980 সালের দিকে ড. কামালের সঙ্গে আরো কিছু আওয়ামী নেতা ও আন র্জাতিক মহল শেখ হাসিনাকে রাজনীতিতে আনতে সচেষ্ট হন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে দিয়ে দলের হাল ধরানো এবং রাজনীতিতে অবস্থান শক্ত করা। শেখ হাসিনাকে সক্রিয় রাজনীতিতে আনাতে ড. কামালের নেতৃত্বে অনেকেই তখন ভারতে গিয়ে হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে তাকে রাজনীতিতে নামাতে সফল হন। 1981 সালের 16 ফেব্রুয়ারি কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতেই দলের সভানেত্রী নির্বাচিত করা হয়। সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়ার 90 দিন পর 1981 সালের 17 মে শেখ হাসিনা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
অন্যদিকে, 1981 সালের 30 মে জিয়াউর রহমান নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে বিএনপি কঠিন সংকটের মুখোমুখি হয়। দলের পরবর্তী চেয়ারম্যান এবং নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে সেনাবাহিনী প্রধান এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বে সংঘঠিত এক সামরিক অভূ্যত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করা হয়। 1982 সালের 24 মে সামরিক আইন জারি করা হয়। এ সময় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী দল ত্যাগ করে এরশাদের দলে যোগ দিলে বিএনপিতে নেতৃত্ব সংকটসহ ভাঙ্গণ দেখা দেয়।
এ সময় দলের আপাত সংকট কাটানোর জন্য অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তার দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি হলেও খোদ বিএনপিরই অনেকে তা মেনে নিতে পারেনি। তখন সকলে একমত হন যে, দলের মধ্যে সৃষ্ট বিভক্তির সমাধান একমাত্র খালেদা জিয়াকে দিয়েই সম্ভব। 1981 সালে বিএনপির প্রেসিডেন্ট হিসেবে খালেদা জিয়াকে নির্বাচিত করার কথা দলীয় বৈঠকে অনুমোদন করা হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া তাতে রাজি হননি। পরবর্তীতে আবদুস সাত্তার দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে খালেদা জিয়াকে বিএনপিতে যোগদানের অনুরোধ করলেও খালেদা তা প্রত্যাখ্যান করে দেন। তখন খালেদা বলেন, যোগ দিলে নির্বাচিত পদেই দিব।
1982 সালের প্রথম দিকে খালেদা জিয়া (একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে) বিএনপিতে যোগ দেন। 1983 সালের মার্চে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট, 1984 সালের 12 জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন এবং 1988 সালের 10 মে তিনি দলের চেয়ারপার্সন পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
পাদটীকা: যারা খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে দেশান রী করে রাজনীতিতে 'গুণগত উন্নয়ন' আনতে চান তাদেরকে নিজেদের সমতার ইতিহাস ঘেটে দেখতে অনুরোধ করছি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




