এখানে উল্লেখ্য যে গেল ১৫এপ্রিল ঢাকা জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তাকে যৌথবাহিনীর লোকজন নির্যাতন করে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। তাঁর ভাষ্যমতে গেল ১৫ এপ্রিল তিনি ঢাকায় জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তাঁর মা এবং বোনকে বিমানে তুলে দিতে গেলে নির্যাতনের শিকার হন। তিনি দেশ থেকে ফেরার আগেই চ্যানেল এস কর্তৃপক্ষ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সাংবাদিক সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন চ্যানেল এস এর চেয়ারম্যান আহমেদ-উস সামাদ চৌধুরী, লেস্টারের অধিবাসী আব্দুল মজিদ তাহের এবং ব্যারিস্টার রেদওয়ানের বড় ভাই জাকির হোসেন। ব্যারিস্টার রেদওয়ান বলেন তিনি তাঁর বোনকে প্লেনে তুলে দিতে গেলে টি-এস-ও অফিসের ইফতেখার জাহান নামের একজন কর্মকর্তা তার পরিচয় চান এবং বলেন ‘‘ আপনি এই সীমানায় অবৈধ ভাবে প্রবেশ করেছেন এবং সাথে সাথে একজন পুলিশকে ডেকে পাঁচজন ডিফেন্স অফিসার তাঁকে উপরে যেতে বলে, তিনি বলেন এরা সকলেই এয়ার ফোর্সের অফিসার। একটি ছোট কক্ষে নিয়ে তাকে মুজিব, আনোয়ার, সাইফুল, দেলওয়ার ও নিজাম নামের পাঁচ কর্মকর্তা তাকে লাঠি দিয়ে ২০/২৫ মিনিট ঠায়, এবং তিনি অবৈধ ভাবে প্রবেশ করেছেন বলে একটি কাগজে লিখতে বলে। তিনি তাদের কথা মতো রাজি না হওয়াতে একজন পদস্থ অফিসারে সামনে নিয়ে আরো প্রায় আধাঘণ্ঠা পেটায়, এতে তার হাত-পা ভেঙ্গে যায়। তখন তিনি তাদের কথামতো কাগজে লিখেন এবং সাক্ষর করেন। তিনি আরো জানান এর পর তিনি ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ চলে যান সেখানে হাসপাতালে ভর্তি হন। এক্সরে করে দেখতে পারেন তার শরীরে মারাত্মক জখম তখন নিজের লোক দিয়ে ঐসব ক্ষতস্থানের ছবি তোলেন, তার বন্ধু-বান্ধব এবং লন্ডনে চ্যানেল এস এর সাথে যোগাযোগ করেন। চ্যানেল এস কর্তৃপক্ষ ঢাকায় ব্রিটিশ মিশন সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন দফÍরে যোগাযোগ করে তাকে লন্ডনে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন।’ এছাড়া তিনি আরো জানান যে ডিজি এফ-আই‘র লোকজন তাকে লন্ডন ফিরতে সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন এজন্যে আমি সরকারকে দায়ী করিনা যারা আমাকে নির্যাতন করেছে তাদের বিচার চাই। সাংবাদিকরা তার কাছ থেকে বিষয়টি জানার জন্যে প্রশ্ন করতে চাইলে আগেই বলা হয় তাঁকে কোন প্রশ্ন করা যাবেনা, বলে ব্যারিস্টার রেদওয়ানকে হাসপাতালে নেবার কথা বলে গাড়ীতে করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরেও একজন সাংবাদিক তাঁকে প্রশ্ন করেন কেন তাঁকে নির্যাতন করা হলো, এর উত্তরে ব্যারিস্টার রেদওয়ান বলেন ঢাকা বিমান বন্দরের কর্মকর্তারা যাত্রীদের উপর নির্যাতন করে হাত লম্বা হয়ে গেছে এ জন্যে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দেয়া এবং ব্যারিস্টার রেদওয়ান ঢাকায় কোন হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে সরাসরি হবিগঞ্জ গিয়ে চিকিৎসা নেয়া এবং শুধূমাত্র অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশের কারনে তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা ব্যারিস্টার রেদওয়ানের এসব প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। ডিজি-এফ আই-এর সহায়তায় রেদওয়ানের লন্ডন ফেরা নিয়ে প্রবাসীদের মাঝে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, কেনইবা তাকে অন্যায় ভাবে নির্যাতন করা হবে এর আসল রহস্য উদঘাটিত এটাই কামনা করেন বিলেত প্রবাসী বাঙ্গালীরা।
নন প্র্যকটিস ব্যারিস্টার রেদওয়ান চ্যানেল এস-এর একজন নিয়মিত ফান্ডরাইজার। এছাড়া বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি মসজিদ মাদ্রাসার নামে বিভিন্ন সময় টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে ফান্ড কালেকশন করেন। গেল ২৯ রমজান তার নিজ এলাকা হবিগঞ্জের ইমামবাড়ী মাদ্রাসার জন্যে ৭০ হাজার পাউন্ড ফান্ড কালেকশন করেন, এখানে উল্লেখ্য যে ২০০২ সালে ঔ ইমামবাড়ী মাদ্রাসার ১২ ছাত্রকে নবীগঞ্জ পুলিশ দিনারপুরের পাহাড় থেকে ট্রেনিংরত অবস্থায় তালেবান সন্দেহে আটক করে। এই সংবাদটি বাংলাদেশ এবং লন্ডনের বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। ২৩ নভেম্বর ২০০২, ৯ অগ্রহায়ন ১৪০৯ দৈনিক হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস ‘‘ নবীগঞ্জের একটি দুর্গম পাহাড় থেকে ১২ সন্দেহভাজন যুবক গ্রেফতার‘‘। শুধু তাই নয় তিনি মাসে ২/৩ বার করে বাংলাদেশে যাতায়াত করেন সেই সাথে মুসলিম এউডের ব্যানারে, আফগানিস্থান, সোমালীয়া, সুদান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্থান প্রবৃতি দেশে যাতায়াক করেন, তার এইসব দেশে ভ্রমনের ফুটেজ গুলো টিভিতেও প্রচারিত হওয়ার পর বৃটিশ গোয়েন্দাদেরও নজর পরে যায় তার উপর। বাংলাদেশের সন্দেহভাজন মাদ্রাসা গুলোর ফান্ডকালেকশনের বিষয়ে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। দৈনিক খবর, দৈনিক আন্দোলনের বাজার, দৈনিক যুগভেরী ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭ ‘‘মাদ্রসার নামে জঙ্গীদের কাছে আসছে বিশাল অংকের অর্থ‘‘।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কোন প্রশ্ন করতে না দেয়ায় অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানাই থেকে গেছে, সন্দেহ জেগেছে সবার মনে ।
প্রথমত আহত হয়ে তিনি কেন ঢাকায় চিকিৎসা না নিয়ে হবিগঞ্জ গেলেন ? এমন গুরুতর আহত কোন ব্যক্তি কি করে বাই রোডে এমন ঝুকি নিয়ে হবিগঞ্জ গেলেন ? হবিগঞ্জ থেকে কেনই বা সেরে উঠা না পর্যন্ত দুই দিনের মাথায় লন্ডন ফেরত আসলেন। লন্ডনে উন্নত চিকিৎসার বিষয়টি না ভেবে কেন তড়িঘরি করে সংবাদ সম্মেলন করলেন? সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেছেন ডিজিএফ আইয়ের লোক তাকে লন্ডনে আসতে সহায়তা করেছেন, কিন্তু বক্তব্যে তিনি বলেছেন যৌথ বাহিনীর লোকজন তার উপর নির্যাতন চালিয়েছে, বিষয়গুলো কেমন অস্পষ্ট মনে হয়েছে আগত সাংবাদিকদের কাছে। তাহলে ডিজি এফ আই কেন তাকে লন্ডনে আসতে সহায়তা করলেন সেটি তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। এবং মুচলেকার কোন কপিও তিনি সাংবাদিকদের দেখাননি। তাছাড়া শুধু মাত্র এয়ার পোর্টের অনুমদিত স্থানে অনুপ্রবেশের কারনে কারো উপর এমন শারীরীক নির্যাতন কোন ভাবেই যুক্তি সংঙ্গত নয়! সেই সাথে ঢাকা এয়ারপোর্টে এমন একটা ঘটনা ঘটলো কিন্তু ঢাকা সংবাদপত্র গুলো নিরব ভূমিকা পালন করার কারন কি সে বিষয়েও সন্দেহের যুক্তি রয়েছে।
তবে অন্যায় ভাবে যেন কাউকে বিমান বন্দরে হয়রানী করা না হয় এব্যপারে প্রবাসীদের দাবী ছিলো স্পষ্ট। কিন্তু রেজোয়ানের এই অসম্পূর্ণ সংবাদ সম্মেলন জনমনে সন্দেহ বাড়িয়ে তুলেছে।
অন্যায় ভাবে যেন কাউকে বিমান বন্দরে হয়রানী করা না হয় সেই সাথে ব্যারিস্টার রেদওয়ানের বিষয়টির আসল রহস্য উদঘাটিত হোক এটাই কামনা করেন লন্ডনের বাংলাদেশী কমিউনিটি।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০০৮ সকাল ৯:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




