somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Non-verbal communication বা অমৌখিক যোগাযোগের গুরুত্ব

২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



যোগাযোগ ও যোগাযোগ দক্ষতা আমাদের জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই কাজে লাগে। যোগাযোগ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির কাছে আমরা সঠিক বার্তা পৌঁছাতে পারি।

আমরা মূলত কিভাবে যোগাযোগ করি? এর উত্তরে আমরা যোগাযোগকে দুটি প্রধান ভাগ করতে পারি-

১।মৌখিক যোগাযোগ।
২। অমৌখিক যোগাযোগ।

আমাদের জীবনে এ দুই ধরণের যোগাযোগেরই গুরুত্ব রয়েছে।তবে,আজকে কথা বলব Non-verbal communication বা অমৌখিক যোগাযোগের গুরুত্ব নিয়ে।

আমাদের মৌখিক যোগাযোগের সাথে অমৌখিক যোগাযোগ এমনভাবে মিশে গিয়েছে যে, আলাদাভাবে আমরা এ বিষয়টা নিয়ে চিন্তাই করি না। কিন্তু অমৌখিক যোগাযোগের সঠিক প্রয়োগ ব্যতিত শুধুমাত্র মোখিক যোগাযোগের মাধ্যমে কখনই মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আর তাইত অমৌখিক যোগাযোগের এতটা গুরুত্ব রয়েছে।

মৌখিক বার্তা বাদে বাকী সকল বার্তাই মূলত অমৌখিক যোগাযোগকে নির্দেশ করে।যেমনঃ চেহারার অভিব্যক্তি,অঙ্গভঙ্গি, ইশারা ইত্যাদি অমৌখিক যোগাযোগের উদাহরণ।

অমৌখিক যোগাযোগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিচে তুলে ধরছি-

১। অমৌখিক যোগাযোগ মূলত আমাদের আবেগকে প্রকাশ করতে সাহায্য করে৷

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যখন অনেকদিন পর আপনার প্রিয় কোন মানুষের সাথে দেখা হবে, তখন তাকে দেখে আপনার মুখে যে হাসি ফুটে উঠবে,সেই হাসি দেখেই ব্যক্তিটি বুঝতে পারবেন যে তাকে দেখে আপনি খুশি হয়েছেন। এক্ষেত্রে আপনি "আমি তোমাকে দেখে খুশি হয়েছি" একথাটি বলারও প্রয়োজন হবে না,তার আগেই সে আপনার আবেগটা ধরতে পারবে।

২।অমৌখিক যোগাযোগ আমাদের অন্য ব্যক্তির সাথে সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।

আপনি যখন কথা বলার সময়, আপনার কন্ঠস্বর, অঙ্গভঙ্গি, মৌখিক অভিব্যক্তি ইত্যাদি অমৌখিক বার্তার দিকে খেয়াল রেখে কথা বলবেন তখন আপনার কথাগুলো অন্য ব্যক্তির কাছে শ্রুতিমধুর ও মার্জিত মনে হবে এবং সেই ব্যক্তির আপনার সম্পর্কে একটা ভাল ধারণা তৈরি হবে ৷ উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, দুজন ব্যবসায়ীর মধ্যে যার ব্যবহার বেশি ভাল ক্রেতারা তার দিকে বেশি আকৃষ্ট হয়,এক্ষেত্রে অমৌখিক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


৩। অমৌখিক যোগাযোগ আমাদের মৌখিক যোগাযোগের সহযোগী হিসেবে কাজ করে।

যেমনঃধরি স্কুলে এক ছাত্র টিফিন পিরিয়ডে মাথা ব্যথা বা হঠাৎ অসুস্থতার কারণে বাড়ি যেতে চাচ্ছে, শিক্ষক কিন্তু সেই ছাত্রের অঙ্গভঙ্গি, চেহারার অভিব্যক্তি ইত্যাদি আগে পর্যবেক্ষণ করবেন।তারপর যদি বুঝতে পারেন সে আসলেই অসুস্থ তবেই তাকে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত দিবেন। এক্ষেত্রে মৌখিক যোগাযোগের চেয়ে অমৌখিক যোগাযোগের প্রতি শিক্ষক বেশি গুরুত্ব দিবেন।

৪। অমৌখিক যোগাযোগ আমাদের ব্যক্তিত্বকেও নির্দেশ করে।

"এদিকে আসো।"- এই কথাটি একজন রাগী লোক যেভাবে বলবেন, একজন শান্ত মানুষ তার চেয়ে ভিন্নভাবে বলবেন। তাদের এই কথার মধ্যকার পার্থক্য মূলত আমরা অমৌখিক যোগাযোগের উপাদানগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারি।


৫। সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রেও অমৌখিক যোগাযোগের গুরুত্ব রয়েছে।

অনেক সময় রাস্তা দিয়ে চলার পথে, আমরা পরিচিতজনকে হাত ইশারা করে সালামের ভঙ্গি করি। এতে সামাজিক সম্পর্কের উন্নতি হয়। এছাড়াও দূর থেকে কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে কিংবা বিদায় জানাতে হাত নেড়ে ইশারা করা হয়, যা এক ধরণের অমৌখিক যোগাযোগ।


৬। অমৌখিক যোগাযোগের ব্যপারে সচেতন থাকলে অন্যের অভিব্যক্তি আমরা সহজেই ধরতে পারি।

যেমনঃ আপনি কারও সাথে অনেক্ক্ষণ ধরে গল্প করছেন,সে যদি একসময় আর গল্প করতে আগ্রহী না থাকে তখন তার অঙ্গভঙ্গি, মৌখিক অভিব্যক্তির মাধ্যমে তা আপনি সহজেই ধরতে পারবেন। এক্ষেত্রে মূলত অমৌখিক যোগাযোগের মাধ্যমেই সে জানিয়ে দিচ্ছে সে আর গল্পে আগ্রহী নয়।

৭। এছাড়াও কোন কোন সময় অমৌখিক যোগাযোগ শিষ্ঠাচারকে নির্দেশ করে৷

যেমনঃ বড়দের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলাকে বেয়াদবি ধরা হয়, আবার কোন প্রভাবশালী অন্যায়কারীর চোখে চোখ রেখে কথা বলাকে সাহস হিসেবে ধরা হয়।তাই ক্ষেত্রবিশেষে অমৌখিক যোগাযোগের উপাদানের পরিবর্তন করা বাঞ্ছনীয় ।

৮। অমৌখিক যোগাযোগ মূলত আমাদের সুস্থতা, আত্মবিশ্বাস ইত্যাদিরও পরিচায়ক।

উদাহরণ স্বরুপ, চাকরির ইন্টারভিউয়ে আপনি আত্মবিশ্বাসী কিনা পরীক্ষক তা আপনার অঙ্গভঙ্গি, মৌখিক অভিব্যক্তি, অযথা নাক কানে হাত দেওয়া বা ঘন ঘন ঢোক গেলা ইত্যাদি বিভিন্ন অমৌখিক যোগাযোগের উপাদানের উপস্থিতি অনুপস্থিতির মাধ্যমে বুঝতে পারেন।

ঠিক একই ভাবে একজন ডাক্তারও প্রাথমিকভাবে একজন ব্যক্তির সুস্থতা বা অসুস্থতা সম্পর্কে ধারণা করেন অমৌখিক যোগাযোগের উপাদানগুলোরই দ্বারা।




পরিশেষে, এ কথাই বলা যায় যে- অমৌখিক যোগাযোগও, মৌখিক যোগাযোগের মত সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জীবনে অমৌখিক যোগাযোগের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।তাই সকলের উচিত অমৌখিক যোগাযোগের ব্যাপারে খেয়াল রাখা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:৫২
৩টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×