বছরটা ভালোই যাচ্ছিল। হঠাৎ ১৬ ডিসেম্বর ইসলামী লেবাসধারী জঙ্গীরা পেশোয়ারে একটি স্কুলে হামলা করে নিষ্পাপ অসংখ্য শিশু ও অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। যা সত্যিই মর্মান্তিক। আমি মনে করি- এ হামলা শুধু পেশোয়ারের কিছু মানুষের উপর হামলা নয়, বরং এ হামলা সমগ্র মানুষের উপর বিশেষ করে ইসলাম ও মুসলমানের উপর করা হয়েছে। কারণ, এ হামলার পর থেকে তথাকথিত নিন্দুক ও মানবতাবাদীরা ইসলামকে জঙ্গী ধর্ম এবং মুসলমানদের জঙ্গী বলে গালাগাল করতে শুরু করেছে।
অথচ পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- যে একজন মানুষকে হত্যা করল, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করল, আর যে একজনকে জীবিত রাখল, সে যেন সকল মানুষকে জীবিত রাখল।(সূরা মায়িদা:৩২)
অন্য আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে- তোমরা তোমাদের সন্তানদের দারিদ্রের ভয়ে হত্যা করো না। (সূরা বনি ইসরাইল:৩১)
আরেক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে- যখন জীবন্ত প্রথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল? ( সূরা আত তাকবির:৮-৯)
মক্কা বিজয়ের পর রাসুল (সা.) সকল অপরাধীকে মাফ করে দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি ইচ্ছা করলে অপরাধীদের হত্যা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নি, বরং উদারতা শিখিয়েছেন তার উম্মতকে।
অথচ কিছু মানুষ ইসলামের লেবাস পরে, ইসলামের রূপ ধারণ করে, কুরআন ও হাদীস অমান্য করে নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করে চলেছে। একেকবার একেক স্থানে তারা তাদের হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে।
ইসলাম শিশুদেরকে হত্যা করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। যা আমরা উপরিউক্ত কুরআনের আয়াতে দেখতে পাই। অথচ জালেমরা নিষ্পাপ শিশুদেরও রেহাই দিচ্ছে না, তাদেরকেও হত্যা করছে। পেশোয়ারে তারা শতাধিক শিশুকে হত্যা করেছে। তাদের কারণে ইসলামকে আজ কলঙ্কিত, দাঁড়ি টুপিওয়ালারা সন্ত্রাসীর মিথ্যা অপবাদে অপদস্থ।
অবুঝ সেসব মানুষ যেন এ জঘন্য কাজগুলো আর করতে না পারে এবং আর একজন মানুষও যেন হত্যা করতে না পারে, সর্বোপোরি ইসলাম ও মুসলমানদের গায়ে সন্ত্রাসের কালিমা লেপন করতে না পারে, সেজন্য উলামা মাশায়েখ সহ সকল মুসলমানদের এখন থেকেই ইসলামের সঠিক আদর্শ বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে হবে এবং লেবাসধারী এসব জঙ্গীদের প্রতিরোধে সোচ্চার হতে হবে।