somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পহেলা বৈশাখ ও আমার ছোট বেলা এবং বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ধর্মীয় উৎসবগুলো বাহিরে পহেলা বৈশাখেই আমার আনন্দ করি অনেক। ধর্মীয় উৎসবগুলোতে সকল ধর্মের মানুষ ঐক্যবদ্ধ না হলেও পহেলা বৈশাখে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একত্রে উল্লাসে মেতে উঠি আমরা। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের নিয়ম নিয়ে বিভিন্ন জনের মতবিরোধ থাকলেও থেমে নেই বাংলা নববর্ষের আনন্দ উৎসব।

আমার ছোট বেলায় সম্ভব ২য় শ্রেণী থেকেই পহেলা বৈশাখের আগে মেলাতে শরবত বিক্রি করবো কিংবা অন্য কোন কিছুর দোকান দেওয়ার জন্য আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আয়োজন করতাম এবং পহেলা বৈশাখের মেলায় বিভিন্ন রংয়ের শরবতই বিক্রি করতাম সারা বিকাল। তার মাঝে একটু ঘুরাঘুরি। ব্যাস, সারা দিন শেষ। বৈশাখের আনন্দটা এভাবেই শেষ করেছি তখন।

যখন আরেকটু বড় হলাম অর্থাৎ ৮ম/৯ম শ্রেণীতে পড়ি, তখন পহেলা বৈশাখ আমাদের কাছে অন্য ভাবে আসলো। বিভিন্ন এলাকার মেলাতে যেতাম, ঘুরাঘুরি, মেয়ে দেখাদেখি এবং কেউ কেউ সুযোগ পেলে ধাক্কাধাক্কি এই সবই দেখতে শুরু করলাম। অনেক সময় মেয়েদের সাথে কথা বলার সুযোগ খুজতে গিয়ে কেউ কেউ মারামারিতেও লিপ্ত হয়ে যেতো দেখতাম। পাশাপাশি জুয়ার আড্ডাতো আছেই। সাথে এ নিয়ে মারামারি প্রচুর দেখেছি।

পহেলা বৈশাককে এভাবেই দেখে এসেছি আরো কয়েক বছর। তারপর ২০০৮ সালের পর থেকে গ্রামের মেলাতে যাওয়ার তেমন একটা সুযোগ হয়নি আর। শহরে এসে মেলার দিন বিকালে বের হয়ে দেখতে লাগলাম লঙ্কাকান্ড। বৈশাখের দিন রাস্তায় প্রতি ২০ জন মানুষের মধ্যে ১৭/১৮জনই রং বাহারি সাজের মেয়ে। আবার কোথাও ছেলেদের দল থাকলে, মেয়েদের দিকে ঠাট্টা, মশকারা কিংবা কটুক্তি, গায়ে হাত, ঠেলাঠেলি সহ আরো বিশ্রি কান্ডকারখানা। সাথে মঙ্গল শোভাযাত্রা, বিভিন্ন রকমের নামধারী সংস্কৃতির আগ্রাসন তো আছেই।

সম্ভবত ২ বৎসরে দুইবার মেলার এই অবস্থা দেখে পরবর্তীতে আর বৈশাখের প্রথম দিনে বাহিরে বের হইনি। এরপর পরিবারকে শহরে আনার পর বৈশাখের দিনে তাকে নিয়ে কোথাও বের হইনি, অবশ্য তারও ইচ্ছা নেই এই সবে।


আমার ছোট বেলা থেকে এই সময়ের বৈশাখ দেখা ও উদযাপনের ধরণগুলোর মধ্যে ছোট বেলার উদযাপন ও সময়গুলোকেই বেশি মিছ করি ও ভালো মনে হয়। তখনকার সময়ে ছোট থাকায় মেয়েদের প্রতি কিংবা অশ্লীলতা কিংবা খারাপ কোন কিছুর প্রতি নেশা ছিল না। বৈশাখটা ছিলো একমাত্র আনন্দের উৎসব। অবশ্য এখনকার সময়ের মতো তখন এতো বাড়াবাড়ি কিংবা বেহায়াপনা, নিলর্জ্জতা কিংবা ছেলেদের বেয়াদবি, কুকর্মের মতো এতো কিছু ছিলো না তখন।

ব্যক্তিগত ভাবে আমি হাসিখুশি, আড্ডা প্রিয়, বন্ধুপ্রিয় হলেও বৈশাখের মতো রংবাহারি উৎসবগুলো আমাকে আকৃষ্ট করে না। তাছাড়া এখনকার সময়ের বৈশাখ উদযাপনে যেসব কান্ড হয়, তা দু একবার দেখার পর ইচ্ছাই হয়নি রাস্তায় বের হতে। আগামীকালও হবে না। নতুন বছরের জন্য বউ, বাচ্চাকে কাপড় কিনে দিয়েছি। শুধুমাত্র এতটুকুতেই আমার বৈশাখের আনন্দ। বৈশাখে পরিবার নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার মতো পরিবেশ থাকে না।

কে কি ভাবে বৈশাখ পালন করবে তার ব্যাপার, তবে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, সীমালঙ্ঘন করবেন না। আনন্দে মেতে উঠতে গিয়ে হিতাহিত জ্ঞানশুণ্য হবেন না। বৈশাখের আনন্দ পালন করতে গিয়ে ধর্মীয় রীতিনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করবেন না। বৈশাখকে ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক করবেন না।

সবাইকে বাংলা নববর্ষের অগ্রীম শুভেচ্ছা
সবাই ভালো থাকবেন




সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:১৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×