মানুষ কেন নাস্তিক হয়, বিশেষ করে বাংলাদেশের সাহিত্যিক, সাহিত্যমনা মানুষ, তা নিয়ে ভাবি আমি। খুব বেশি গভীরে ভাবতে না পারলেও আমি যেটা উপলব্ধি করতে পারি, তা হলো-
সাহিত্য রচনা কিংবা সাহিত্য পাঠ একটা মোহ তৈরী করে আমাদের মাঝে। যখন লেখা শুরু করি, তখন নামাজের সময় খেয়াল থাকে না, মা-বউ ডাকলে কানে আসে না। এভাবে পার হয়ে যায় ওয়াক্তের পর ওয়াক্ত। ভালো বই পাঠ করার সময়ও একই অবস্থা।
যারা ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে বড় হয়, তারা ধর্মীয় ও পারিবারিক দায়িত্বের প্রতি ওয়াকিবহাল থাকে। কিন্তু যারা ধর্মীয় শিক্ষা অল্পস্বল্প পেলেও এটাকে সিরিয়াস ভাবে নেয় না, তাদের মাঝেই ঘটে বিপত্তি (আমার দৃষ্টিতে)। তাঁরা সাহিত্য রচনা ও পাঠেই মনোনিবেশ করতে গিয়ে পরিবার-ধর্মকর্ম করতে না পারার ধারাবাহিকতায় এক সময় নিজেদের মুক্তমনা কিংবা ধর্মমানে না বলেই ঘোষনা দিয়ে ফেলে। আসলে তারা ধর্মপালন করতে না চাওয়ার কারনেই নিজেদের ধর্মহীন বলে ঘোষনা দেয়।
যারা বিজ্ঞানী, আমার জানামতে তাদের মধ্যে নাস্তিকের সংখ্যা খুব কম। কারন বিজ্ঞানীরা গবেষণা ও আবিস্কারের নেশায় মত্ত থাকলেও তারা সফল হওয়ার জন্য স্রষ্টার সাহায্য চায় এবং সফল হলে স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে। পৃথিবীতে বিশ্বাসী বিজ্ঞানী/গবেষকের সংখ্যাই বেশি।
বাংলাদেশে নাস্তিক-ধর্মবিদ্বেষীর প্রায় ৯৫% বা মতান্তরে ১০০%ই সাহিত্যমনা। এটা একটা নেশা। মাদকের চেয়েও ভয়ংকর নেশা। মাদক মানুষের স্বাভাবিক বিচারবোধ নষ্ট ও জ্ঞানহীন করে ফেললেও ধর্মহীন করে না, কিন্তু সাহিত্যের নেশা মানুষকে স্রষ্টা থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে।
অথচ দেখুন, তাদের অনেকেই বলতে চায়, ভালো ভাবে পড়ালেখা করলে সবকিছু জেনে নাস্তিক হয়ে যায় মানুষ অর্থাৎ তারা বুঝাতে চায়। তারা ভালো ভাবে পড়ালেখা করেই নাস্তিক হয়েছে। অথচ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন ভালোভাবে পাঠ করে মুসলিম হয়ে গেছে এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে বিশ্বব্যাপী। মূলত সাহিত্যের নেশায় পড়ে ধর্মকর্ম পালন করতে না পারা কিংবা পালনে অনীহার ফলেই স্বঘোষিত নাস্তিক হয় অনেকে। অন্তত বাংলাদেশীদের বেলায় এটাই ঘটে বলে আমার ধারণা।
কারন আমি নিজেও অল্পস্বল্প লেখতে গিয়ে খেয়াল করি, সময়জ্ঞান থাকে না তখন। পড়ায় মুগ্ধতা কিংবা লেখনির গভীরে পৌঁছে গেলে তখন আজান দিলেও মনে হয় পড়ে নামাজ পড়বো, আগে পড়ে নেই বা লেখে নেই। এই নেশাটা ভয়ংকর। তবে যারা ধর্মীয় ভাবে যথেষ্ট সচেতন তারা কখনোই বিচ্যুত হয় না। এমনটাই আমি মনে করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:৪৮