রেহান এর মনটা বেশ খারাপ। হাসপালের বেডে শুয়ে তার মা কাতরাচ্ছে, সারা শরীরে ফোস্ক্া। কি ভয়ঙকর বিষাক্ত সাপ! তিনদিন আগে তার মাকে কামড়ায় সাপটা, ওটা রান্নাঘরে কিভাবে ঢুকেছিল কেজানে? কামড়ানোর পরপরই রেহান ছুটে গিয়ে ডাক্তার ডেকে আনে, তবুও থামানো যায়নি বিষক্রিয়া, হাসপাতালে আনার তিনদিন পরও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
সাপটাকে পরে ধরে ফেলেছিল তার ছোটভাই শিহান। পিটিয়ে হয়ত মেরেই ফেলত, কিন্তু মারতে পারেনি গালিব চাচার জন্য, তিনি আজম সাহেবকে [ওদের বাবা] বল্লেন "ভাইজান, সাপটারে মারতে দিয়েন না আপনার পোলাগো।বাস্তুসাপ । মারলে অমঙ্গল হয়।"। আজম সাহেব অনেক নরোম মনের মানুষ, মারতে দিলেন না সাপটাকে। অনেক রাগ হয়েছিল ওদের, তবুও ছেড়ে দিয়েছিল সাপটা, বাবার কথা ওরা কখোনো অমান্য করেনা।
সাপটা কিন্তু পালিয়ে গেল না, ওদের বাগানের ঝোপ জঙ্গলের মধ্যেই লুকিয়ে রইল।
ষষ্ঠ দিনে মারা গেল রেহানের মা।
মাসখানেক পর রেহান দেখল বাগানের এক কোনায় সেই সাপটাকে দুধ [আর কলা] খাওয়াচ্ছে গালিব চাচা। রেহান রাগ আর বিস্ময় নিয়ে তার দিকে তাকাতেই তিনি বল্লেন, "হে. হে.[হাসি], বাস্তু সাপ বাবা। খাওন দিলে মঙ্গল হয়।" কথাটার কোনো জবাব দিল না সে, নীরবে সরে গেল সেই জায়গা থেকে।
গালিব চাচার যত্নে দিনে দিনে বড় হতে লাগল সাপটা, কিছুদিন পরপর খোলস পাল্টায় আর বড় হয়। কিভাবে যেন প্রজনন ও করে ফেল্ল সেটা, একসময় বাচ্চা জন্ম দিল অনেকগুলো। "সহস্র সর্প সন্তান" এর আগমন ঘটল রেহানদের বাড়িতে।
রেহানদের বাড়িতে একটা লাইব্রেরী ছিল। সাপের বাচ্চাগুলো সেই লাইব্রেরীকে নিজেদের আস্তানা বানানোর জন্য বেছে নিল। দলে দলে সাপের বাচ্চারা বাগানের আন্ধকার গর্ত ছেড়ে চলে এল লাইব্রেরীতে।
মা মারা যাওয়ার ঠিক এক বছরের মাথায় রেহানের বাবা আর ছোটো ভাইটাও মারা গেল লাইব্ররীতে ঢুকতে গিয়ে। লাইব্রেরীতে থাকা শত শত , বিষাক্ত বাচ্চা সাপের কামড়ে ক্ষত বিক্ষত সেই মৃতদেহ দুটো দেখে বিপর্যস্ত, ভীত রেহান ঠিক করল এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে সে, অনেক দূরে কোথও।
সেদিন রাতে একটা দু্ঃস্বপ্ন দেখল রেহান, দেখল একটা বিশাল সাপ গিলে খাচ্ছে তাকে। চিৎকার দিয়ে জেগে উঠল ও, বিছানা থেকে নেমে ধীর পায়ে এগিয়ে গেল দরজার দিকে, হাতে তুলে নিল একটা লম্বা কাঠের টুকরো, রওনা দিল লাইব্রেরীর দিকে। সবগুলো সাপের বাচ্চাকে সে পিটিয়ে মারবে আজ, ধ্বংস করবে বড় সাপটাকেও...............
..............এই বাড়িকে আভিশাপমুক্ত করবে সে.............
[বাংলা টাইপ করতে বেশ সমস্যা হয়েছে। আভ্যস্ত হতে মনে হয় অনেক দিন লেগে যাবে------যত্রতত্র]
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৯:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




