somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসমাপ্ত

১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চাদর গায়ে ছেলেটা হাঁটছে বিশাল হাওড়টার পাশে। অল্প রাতেই গ্রামগুলা নীরব হয়। এটাও তেমনই। হাওড়ের জলে চাঁদটা রঙের মত গুলে যাচ্ছে। শুধু জলের আছড়ে পরার শব্দ। আর নিস্তব্ধতারও একটা নীরব শব্দ আছে। সেটা শোনা যাচ্ছে। ছেলেটা একা। তাই সুখী আবার দুঃখী মাঝে মাঝে।

আঁধার জমাট বেঁধে একটা অবয়ব বানালো। চাঁদের আলোয় সেই অবয়ব অন্ধকারমুক্ত হলো। অবয়বটার খোলাচুল উড়ছে। চাঁদের আলো দিয়ে বানানো পাতলা শাড়ি ছাড়া এই শীতে আর কিছুই গায়ে নেই তার। অবয়বটা বসে আছে হাওড়ের ধারে একটা গাছের গুঁড়িতে।

অবয়বটার কাছে গেলো ছেলেটা। চাঁদের আলো দিয়ে বানানো শাড়িতে তাকে দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। নদীর স্রোতের মত মুখটা। সেই মুখের সৌন্দর্যের কোন স্থিরতা নেই। ঢেউ যেমন একজায়গায় থেমে থাকেনা, তেমনি ঐ সৌন্দর্যও থেমে নেই। সেই নির্জন, শীতল পরিবেশে দীপাবলির আলো সেই রূপ! ছেলেটা কতক্ষণ চেয়েই থাকল। তারপর নিজের চাদরটা ওর গায়ে দিয়ে বলল-
তোমার শীত করছেনা?

অবয়ব তাকালো।
- করছে। কিন্তু ভাল লাগছে এই হিম বাতাস।
- তারপর? এখানে কি করছ এত রাতে?
- রাত আমার ভাল লাগে। তাই রাতে বের হই। তুমি ঘুরতে এসেছ এখানে। না?
- হুম। তোমার বাড়ি কোথায়?

অবয়ব নিশ্চুপ। তার খোলা চুল উড়ছে। কিছুক্ষণ পর ছেলেটাকে বলল-
তুমি তো একা। আর আমিও। সম্পর্কটা এগিয়ে নেবে?
- দেখো, যার কাছেই গিয়েছি। অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। কিন্তু সে কয়েকদিনের জন্য। সর্বস্ব, সারাজীবন যার জন্য সঞ্চয় করবো বলে ভেবেছি, সে কয়েকদিন পর আসল রূপ দেখিয়ে দেয়। সত্যিকারের ভালোবাসা হয়তো আছে। তবুও খুব কাছাকাছি গেলেই আশাহত হয়েছি। তাই, আর না। যাকে ভাল লাগবে তার থেকে দূরে থাকব। দূরে দূরে সম্পর্ক মধুর হলে সেটাই সই। কাছে গিয়ে আশাভঙ্গ হতে হবেনা। আমরা এসো দূরের বন্ধু হই। ভালবাসবো দূর থেকে.........

ছেলেটা মাটির দিকে তাকিয়ে কথা বলছিল। কথা শেষ করে সামনে তাকাল সে। তখনও জলে চাঁদের আলো মিশে যাচ্ছে। জলের শব্দ, নিস্তব্ধতার শব্দ, ঝি ঝির শব্দ। সব আছে।
শুধু অবয়বটা নেই। এত কম সময়ে কোথায় গেল। সব দিকে বিশাল প্রান্তর আর সামনে হাওড়। চলে যেতে থাকলে দেখতে পাওয়ার কথা। নেই। কেউ নেই।

ছেলেটা এতক্ষণে খেয়াল করলো, তার চাদরটাও নেই কোথাও। বালুময় তীরে কিছু ছাদের আলো চকচক করছে যেখানে অবয়বটা বসেছিল।

ছেলেটা মৃদু নিঃশ্বাস ফেলে আবার হাঁটতে লাগলো। ভালোবাসার খাতায় আরেকটা নতুন নাম যোগ হলো। - চাঁদের মেয়ে।

ভালবাসা হতে এত কম সময় লাগে! কিন্তু সেটা ভোলা যায়না। সারাজীবনের জন্য গচ্ছিত থাকে। হোক সেটা অবাস্তব কিংবা কল্পনার ভালোবাসা কিংবা কোন অমীমাংসিত অবয়বের ভালোবাসা।

২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×