somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে বিভীষিকা (ফেলুদা সিরিজ)

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হালকা নীল রংয়ের ফুলশার্টের উপরে এসপ্ল্যানেড থেকে থেকে কেনা গরম সোয়েটার চাপিয়ে, ঠোঁটের কোণে একটা জ্বলন্ত চারমিনার নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো ফেলুদা, যথারীতি ফেলুদার সাগরেদ হিসেবে আমিও আছি সঙ্গে। প্রতিদিন সকালে মর্নিংওয়াক করা ফেলুদার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ফেলুদা বলে," বুঝলি তোপসে, আমি যে মর্নিংওয়াক করি, এর পেছনে স্বাস্থ্যগত কারণের চেয়েও বড় কারন হলো সকালের ফ্রেশ এনভায়রনমেন্ট। এই এনভায়রনমেন্ট মগজাস্ত্রের ধার ঠিক রাখতে সাহায্য করে।"

গত সপ্তাহে আমরা বাংলাদেশে এসেছি। না না, কোনো তদন্তের কাজে না। একরকম বলতে গেলে, লালমোহন বাবুর জোরাজুরিতেই। তিনি তাঁর আগামী উপন্যাসের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছেন। তাই সেদিন রজনী সেন রোডের আমাদের বাসায় বসে গরম শিঙাড়ায় কামড় বসাতে বসাতে বাংলাদেশে আসার প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন জটায়ূ। ফেলুদা প্রথমে গাঁইগুঁই করেছিলো।তখন জটায়ূ বললেন, "আপনি যাই বলুন ফেলুবাবু, ট্রাভেল গাইড দেখে 'বোম্বাইয়ের বোম্বেটে" লিখতে গিয়ে যে কেলেঙ্কারিতে পড়েছিলাম,তা এখনো ভুলতে পারিনা। এবার আর সে রিস্ক নিচ্ছিনা। আপনাকে আর তপেস ভাইকে নিয়ে আমি বাংলাদেশে যাবোই।"

ফেলুদার হাতেও বিশেষ কোনো কেসটেস ছিলোনা। তাছাড়া, বাংলাদেশকে ফেলুদা কেন জানিনা, বেশ পছন্দ করে। তাই ফেলুদার সম্মতি পেতে এবার লালমোহনবাবুকে বিশেষ বেগ পেতে হলোনা।

যাইহোক, আমরা থ্রি মাস্কেটিয়ার্স এর পরের সপ্তাহেই চলে এসেছি বাংলাদেশে। এখানে এসে উঠেছি ধানমন্ডির এক বিলাসবহুল হোটেলে। লালমোহনবাবু'র ভাষ্যমতে, "মশাই, আপনাদের নিয়ে বিদেশ-বিভূঁইয়ে এসেছি, ভালো জায়গায় আপনাদের না রাখলে চলে?
তাছাড়া, ধানমন্ডি থেকে ঢাকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানও কাছে।"

লালমোহনবাবু'র এক পরিচিত লোকও নাকি এই ধানমন্ডিতে থাকেন। লোকটির নাম সাগর স্যান্যাল। তিনি ধানমন্ডি-১৫ তে থাকেন। জুতোর দোকান আছে তার। ধানমন্ডিতে থাকার এটাও একটা কারন।
পরিচিত লোকের পাশাপাশি থাকা।

ঢাকা এয়ারপোর্টে আমাদের রিসিভ করতে সাগর স্যান্যাল এসেছিলেন। সাগর স্যান্যাল লোকটা বেশ হৃষ্টপুষ্ট। গায়ের রং বেশ ফর্সা, উচ্চতা লালমোহন বাবুর চেয়ে সামান্য বেশি হলেও গোলগাল গড়নের কারণে খুব বেশি লম্বা তাকে দেখায় না, মুখে তাগড়াই একটা গোফ, সারাক্ষণ হাসছেন, সাগর স্যান্যাল লোকটাকে প্রথম দেখাতেই আমার ভালো লেগে গেলো। সহজসরল, হাসিখুশি মানুষ।

আমাদেরকে তার বাসায় নিয়ে যাবার জন্য তিনি বিস্তর জোরাজুরি করেছিলেন, কিন্তু ফেলুদা সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যের বাসায় গিয়ে থাকতে ফেলুদা যে স্বস্তি পায়না, তা আমি জানি। এরপরেই ভদ্রলোক আমাদের ধানমন্ডির অভিজাত হোটেল "হোটেল মুনলাইট" এ নিয়ে এসেছিলেন।
রাতে একটানা ঘুমের পর এই সকালে ফেলুদার ডাকে উঠে পড়ে হাঁটতে বেরিয়েছি।আসার সময় লালমোহন বাবুর রুমে উঁকি মেরে দেখেছিলাম, উনি অঘোরে ঘুমোচ্ছেন। তাই আর ডাকিনি।

হোটেলের কাছেই ধানমন্ডি লেক। সেখানেই আমরা হাঁটছি। হালকা হালকা শীত পড়েছে ঢাকায়, ভোরের এই হালকা শীতে হাঁটতে ভালোই লাগছে। হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূরে এগিয়েছি, এমন সময় ফেলুদার মোবাইলে কল এলো। স্মার্টফোনটা বের করে কল রিসিভ করলো ফেলুদা...(চলবে)

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০১
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×