somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি গল্প (১ম পর্ব )

২১ শে মে, ২০১২ রাত ৩:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হেঁটে চলছি রাস্তা ধরে । উদ্দেশ্যহীন একা । রাস্তাটি আমার অতি পরিচিত । এই রাস্তার একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রাস্তায় লোক চলাচল কম । মাঝে মাঝে দু একজন লোক আর দু একটা গাড়ি দেখা যায় । রাস্তার দুপাশটা ফাঁকা । এই রাস্তাটা আমার খুব পছন্দের । কারণ আমার জীবনের স্মরণীয় কিছু ঘটনা ঘটেছে এই রাস্তাকে ঘিরে । কথাগুলো ভাবতে ভাবতে হাঁটছি । হঠাত থেমে পরলাম । কোন এক ধনকুবেরের গাড়ির গ্লাসে আলো প্রতিফলিত হয়ে আমার চোখে এসে পড়ল । গাড়িটা আমার সামনে এসেই থেমে পড়লো । ভাবলাম , কি ঝামেলায় পড়া গেল । এখন নিশ্চয় কোন জায়গার ডিরেকশান দিতে হবে । গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়লাম । গ্লাস নামছে । ভাবছি কোন এক অপরূপ পরি টাইপ মেয়ের মুখ দেখব । এটা ছিল কামাল নামক জনৈক বাক্তির গল্পের শুরু । আমরা এখন ৩০ মিনিট অতিতে ফিরে যাব ।
ভার্সিটির ২য় বর্ষের ছাত্রী মিমি । বাবা মার আদরের একমাত্র সন্তান । চঞ্চল একটা মেয়ে । ওর শখের কাজগুলোর একটা হচ্ছে বাবা মা যা করতে নিষেধ করেন সেগুলো করা । মিমি চেইন স্মকার । মাঝে মাঝে গাজাও খায় । মদেও তার আপত্তি নেই । তার কিছু ছেলে বন্ধু আছে । ওদের সাথে মিশে শুধু এগুলো খাওয়ার জন্য । এত কিছু করার পরও মেয়েটার জীবনে প্রেম আসেনি । তো যাই হোক , আজ ওর একটা বিশেষ প্ল্যান আছে । আজ মিমি অপরিচিত একজনকে লিফট দিবে ।
মিমিকে পছন্দ করে ক্যাম্পাস এর ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মুরাদ । মিমি কে সে প্রপোজ করেছিল । কিন্তু মিমি রাজি হয়নি । মুরাদ মিমিকে পাবার জন্য মিমির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী আনিকার সাথে বন্ধুত্ব করে । মিমি আবার সব কথাই আনিকাকে বলে । আনিকা মিমিকে যতই বলে এসব ছেড়ে দিতে তাতে কোন লাভ হয় না । আনিকা মিমির প্ল্যান শুনে তা মুরাদকে বলে । মুরাদ ওর এক বন্ধুকে আনিকার বলা রাস্তায় দাঁড় করায় ।
এবার আমরা বর্তমানে ফিরে আসি । মেয়েটা পরির মত না হলেও একেবারে খারাপ না ।
' জইঙ্কাকান্দির রাস্তাটা কোথায় ?' , মেয়েটা বলল ।
' এই তো, ওদিকে ।'
' আপনি কোথায় যাবেন ?'
' কোথাও না । এমনি হাঁটছি ।'
' আমার সাথে যাবেন ?'
' কোথায় ?'
মেয়েটা একটু হাসল । তারপর বলল , ' জইঙ্কাকান্দি ।'
আমি কিছুক্ষণ ইতস্তত করে হ্যাঁ বলে দিলাম ।

শুরু হল আমাদের যাত্রা । মেয়েটা ড্রাইভ করছে আর আমি বসে আছি । মুরাদের কথা শুনে মেয়েটা সম্পর্কে খারাপ ধারণা করলেও এখন মেয়েটাকে ভালই মনে হচ্ছে । মুরাদের প্ল্যান ছিল আমি গাড়িতে উঠা মাত্র ওকে আমরা কোথায় যাচ্ছি তা জানিয়ে মেসেজ দিব । তারপর সে কোথায় থাকবে তা জানাবে আর আমি সেখানে গিয়ে গাড়ি থামাতে বলব । আর তখন মুরাদ এসে ওকে কিডন্যাপ করবে । আমি ভেবেছিলাম মুরাদের কথা মত মেয়েটাকে একটু সাইজ করে ছেড়ে দিব । কিন্তু ভাবলাম মুরাদ মেয়েটাকে এত সহজে ছাড়বে না । কারণ এই মেয়েটা ওকে ক্যাম্পাসে অপমান করেছিল । আমি মুরাদকে অন্য একটা ঠিকানা দিলাম । তারপর ও মেসেজ দেবার পর মোবাইল বন্ধ করে দিলাম ।

এর মাঝেই আমরা গল্প করে চলেছি ।
' আপনি একা একা হাটছিলেন কেন ?'
বলতে ইচ্ছে করছিল যে তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম । কিন্তু বললাম না ।
' মন খারাপ ছিল, তাই ।'
মেয়েটা একটা সিগারেট ধরাল ।
' আপনি সিগারেট খান কেন ?', আমার প্রশ্ন ।
' কেন আপনি খান না ?'
' না ।'
আমার উত্তর শুনে মেয়েটা সিগারেট জানালা দিয়ে ফেলে দিল ।
' প্রব্লেম ছিল না ।'
' নন-স্মকারদের সামনে সিগারেট খেতে আমার অস্বস্তি লাগে ।'
' ঠিক আছে । এবার বামে ।'
' ও ; আপনার নামটাই তো জানা হল না ।'
' আকাশ ।' আসল নামটা বললাম না ।
' আমি পারু ।'
বুঝলাম না মেয়েটা আসল নাম কেন বলল না । ওর নাম তো মিমি । ভাবলাম কিছু টের পেয়ে গেল নাতো ।
' আপনি কার কাছে যাবেন ?'
' কারও কাছে না ।'
' তাহলে কেন এসেছেন?'
' এমনি ঘুরতে ।'
' ও আচ্ছা । সামনে আর রাস্তা নেই । এবার হেঁটে যেতে হবে ।'
' চলুন হাঁটি । আপনার কোন সমস্যা আছে ?'
' চলুন । '
এভাবেই শুরু হল আমাদের দুজনের পথচলা । আমি চালচুলোহীন এক ছেলে । যার বলতে গেলে কিছুই নেই । টাকার অভাবে খারাপ পথে পা বাড়িয়েছিলাম । সে পথেও যেতে পারিনি । এই মেয়ের মায়ায় পা দিলাম । যা সত্যিই আমাকে একটা পথ দেখিয়েছিল ।

( ১ম পর্ব শেষ )

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×