somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুমকেশের ডায়েরী (পর্ব তিন)

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বুমকেশের ডায়েরী (পর্ব দুই)
বুমকেশের ডায়েরী (পর্ব এক)

ইহার কিছুদিন পরের ঘটনা। বুমকেশ তখন খুব হাঁটিত। সারাদিন ঘুরিয়া ফিরিয়া সন্ধ্যে নামিবার একটু আগে বাটিতে ফিরিত । কিন্তু কাহারও সহিত কোনো বাক্যালাপ করিত না। মনে চাহিলে দুএকটা কথা কহিত আর না চাহিলে নিশ্চুপ থাকিত। একদা প্রত্যূষে আমাদের বাটিতে আসিয়া উপস্থিত হইল। আমায় ডাকিল। বুমকেশের গলা শুনিয়া কিছুটা সচকিত হইয়া আমি বাড়ির উঠোনে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। আমাদের বাড়ির উত্তরে তিনটে বেশ বড়সড় আমগাছ ছিল। ওইখানটায় দাঁড়িয়ে সোজা উত্তরে চাইলে অনেকদূর পর্যন্ত শুধু ধানক্ষেত দেখিতে পাওয়া যায়। ও সেই আমগাছ পার হইয়া ধানক্ষেতের আইল ধরিয়া আমাকে লইয়া ক্ষেতের মাঝে একখানা ছোট পুকুরের দিকে লইয়া চলিল। পুকুরটা অনেক পুরনো।একসময় ইহার বাধানো ঘাট ছিল। এখন উহা কালের বিবর্তনে লোপ পাইয়া যাহাতে পরিণত হইয়াছে তাহাকে ঘাট না বলিয়া ভাঙা ইটের স্তূপ বলাই শ্রেয়। ইটের স্তূপের উপর শ্যাওলা জমিয়াছে, আগাছা আর ঝোপজঙ্গলে ভর্তি। পুকুরের পানি অবশ্য পরিষ্কার। এতক্ষণ বুমকেশ কোন কথা কহিল না। পুকুরের সম্মুখে দাঁড়িয়ে সে মুখ খুলিল,
"বলরামের শাহীমুকুন্দ বইখানা পড়েছিস?"
"না পড়িনি। কেন? কি লেখা আছে ওতে?"
"এমনি জিজ্ঞেস করলাম।"
"আচ্ছা তোর কি হয়েছে বলতো? কথাবার্তা কারও সাথে তেমন বলিস না। সারাদিন কই কই ঘুরে বেড়াস। তোর বাবা মা তো তোকে নিয়ে অনেক চিন্তা করেন। তুই তো আগে এমন ছিলি না?"
"হয়তোবা কোনো সত্যের সন্ধানে আমার এই প্রচেষ্টা। হয়তোবা ইহাই আমার আরাধ্য বস্তু।"
"কি খুঁজছিস তুই? যা পাবার জন্যে তুই ধীরে ধীরে সব ছেড়ে দিচ্ছিস?"
প্রশ্নটা করিবার পর বুঝিতে পারিলাম যে ওকে তখন এই প্রশ্নখানা করা উচিত ছিল না। বরং অন্যভাবে ওর কথাগুলা বুঝিবার চেষ্টা করার প্রয়োজন ছিল। যাহাই হোক, সে কোন উত্তর দিল না। বরং তাহার মুখের ভাব একটু বিবর্ণ হইল। আমি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিয়া কথা ঘুরাইবার উদ্দেশ্যে অন্য প্রসঙ্গ টানিবার চেষ্টা করিলাম। কিন্তু কোনা পাত্তা পাইলাম না। সে এক হাত উচু করিয়া আমায় থামাইয়া দিল। ওকে দেখে মনে হচ্ছিল যে ও যেন কাহারও কথা খুব মনযোগ দিয়া শুনিতেছে। আমি চুপচাপ রহিলাম। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে দু একখানা পাখির ডাক ছাড়া আর কিছুই শোনা যাইতেছিল না।
অতঃপর বুমকেশ কহিল তবে তাহা আমাকে নয় যেন অদৃষ্ট কোন সত্তাকে,
"চরণধুলা আমি তাহারই নিবো যে আমার মনের কথা বুঝে, আমার অব্যক্ত অনুভুতি যাহার কাছে স্পষ্ট বলিয়া প্রতীয়মান হয় আর দুটো সত্য বলে যে আমার তৃষিত হৃদয় তৃপ্ত করিতে পারে।"
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:১১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×