somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মওদুদীবাদী ছাত্রশিবিরে ভেড়ানোর কাজ শুরু শিশুকাল থেকেই

০৩ রা মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশ ও সংবিধান বিরোধী সবচেয়ে সক্রিয় ছাত্র সংগঠন হচ্ছে মওদুদীবাদী ছাত্রশিবির। স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল মওদুদীবাদী জামাতের ক্যাডারভিত্তিক ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির দলের সদস্য অন্তর্ভুক্তি করে শিশু বয়স থেকেই।
শিবির থেকেই উৎপত্তি হয়েছে হিযবুত তাহরীর, জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)সহ নানা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের। আন্তর্জাতিক মহলে ছাত্রশিবির পরিচিত সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আইসিএস’ নামে। দেশের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ছে এ সংগঠনের কার্যক্রমে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিশু সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসরসহ ফোকাস, রেটিনা, কনক্রিট প্রভৃতি কোচিং সেন্টার আর উপ-সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সংগঠনে নিয়ে আসছে শিবির।
ছাত্রশিবিরে ভেড়ানোর কৌশল :
ছাত্রশিবিরের একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদেরকে শিশুকাল থেকেই টার্গেট করে ছাত্রশিবির। আর শিশু সংগঠন ‘ফুলকুঁড়ি আসর’ গঠন করা হয়েছে এ উদ্দেশ্য নিয়েই।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ফুলকুঁড়ি আসরে যেসব শিশু যুক্ত হয়, পরবর্তীতে তারা যোগ দেয় ছাত্রশিবিরে। শিবিরের সম্পূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হয় ক্রমানুযায়ী। প্রথম পর্যায়ে একটি শিশুকে পরিচিত করা হয় ফুলকুঁড়ি আসরের সঙ্গে। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে উঠলেই তাকে দিয়ে পূরণ করানো হয় ছাত্রশিবিরের সদস্য ফরম। যখন শিশুটি শিবিরে যোগ দেয়, তখন সে নিবন্ধিত হয় সংগঠনের সমর্থক হিসেবে। এরপর ধাপে ধাপে কর্মী, সাথী এবং শেষে সংগঠনের সদস্যপদ লাভ করে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীর বেশ কয়েকটি প্রথম সারির স্কুলে কাজ করে ফুলকুঁড়ি আসর। তারা সবচেয়ে বেশি কাজ করে স্কুলের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ স্কাউটের মধ্যে। এছাড়া রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি কার্যক্রমে ব্যাপকভাবে সক্রিয় শিবির কর্মীরা। বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, স্কাউটের শিশুরা জাতীয় স্টেডিয়ামে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে অংশগ্রহণের জন্য মনোনীত না হলে ফুলকুঁড়ি আসরের মাধ্যমে অংশগ্রহণের জন্য দাওয়াত দেয়া হয়।
এক ধরনের কৃতজ্ঞাতবোধ থেকে শিশুরা এরপর ফুলকুঁড়ির বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। তখন তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের মওদুদীবাদী বই সরবরাহ করা হয়। সুযোগ বুঝে ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণীতে উঠলে শিবিরের ফরম পূরণ করিয়ে নেয়া হয়। শিশুদের মধ্যে ‘নতুন কিশোর কণ্ঠ’ এবং ‘ইয়ুথ ওয়েব’ নামে দুটি মাসিক সম্পাদনা সরবরাহ করা হয়। যা প্রকাশ করা হয় ছাত্রশিবির থেকে।
স্কুল পর্যায়ে এসব দ্বায়িত্ব পালন করে শিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মিজানুর সরকার, কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোবারক হোসেইন, কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক মাসুদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা কার্যক্রম সম্পাদক হাফেজ শাহিনুর রহমান এবং কেন্দ্রীয় বিতর্ক সম্পাদক মোস্তফা সাকেরুল্লাহ।

সারাদেশে ছাত্রশিবিরের পরিচালিত বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের দলে ভেড়াতে সহায়তা করে। এর মধ্যে এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ‘ফোকাস’, মেডিকেলে ভর্তির জন্য ‘রেটিনা’ এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য ‘কনক্রিট’ সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। দেশব্যাপী শতাধিক শাখা রয়েছে এ তিনটি কোচিংয়ের।
দেশের যেসব জেলা বা উপজেলা-থানায় এসব কোচিংয়ের শাখা রয়েছে সেগুলো স্থানীয় ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের দ্বারাই পরিচালিত হয়। এসব কোচিংয়ে শিক্ষকতা এবং অন্যান্য চাকরির মাধ্যমে কর্মীদের থাকা-খাওয়ার নিশ্চয়তা দেয় ছাত্রশিবির। বর্তমানে কোচিংগুলোর মূল পরিচালনার দ্বায়িত্বে রয়েছে শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি বদিউল আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোবারক হোসেইন।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সকল নেতাকর্মী ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে কোচিং সেন্টারগুলোর সঙ্গে। রেটিনা কোচিংয়ের সঙ্গে মেডিকেল কলেজ এবং কনক্রিটের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির কর্মীরা। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর প্রায় এক কোটি টাকার মতো আয় হয় দেশব্যাপী কোচিং সেন্টারগুলোর বিভিন্ন শাখা থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের এভাবেই সংগঠনে ভেড়ায় ছাত্রশিবির।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×