somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

ফুটপাতের শিশুঃ

২৮ শে অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফুটপাতের শিশুঃ

ঢাকা শহরের রাস্তা, অলি-গলি, ফুটপাতে বস্তিতে শিশুর জন্ম হচ্ছে প্রতিদিন। নবজাত এই হেলাফেলার শিশুরা প্রাকৃতিক নিয়মে বেঁচে থেকে ক্রমশ বড় হয়ে উঠছে। সুস্থ স্বাভাবিক সুন্দর জীবন যাপনের কোনো সুযোগ এদের সামনে নেই। সম্পূর্ণ অবহেলিত অবস্থায় সমাজের অবজ্ঞা দুর্ব্যবহারের ভেতর দিয়ে এদের জীবন শুরু। সুস্থভাবে যদি তাদের বাঁচার সুযোগ না দেয়া হয় তাহলে চুরি, ছিনতাই মাস্তানি করে নিজের খাবার যোগাড় করে নেবে তারা এটাই স্বাভাবিক। এরা বেড়ে চলে সমাজ ও পৃথিবীর সম্পর্কে গভীর অবিশ্বাস আর ঘৃণার মনোভাব নিয়ে। ঢাকার রাস্তার ফুটপাতে মলিন রুগণ্ শিশু বা কিশোরদের দেখে সাধারণত আমাদের মনে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না।

চায়ের দোকানে ছোট ছেলেটি দোকানদারের হুকুমমতো বিরাট জ্বলন্ত চুলা, বড় বালতি ভরতি করে পানি টানে সর্বশক্তি দিয়ে, ধোলাই খালের ওয়ার্কসপে ছোট বালক লোহা কাটতে বড় হাতুড়ি পিটিয়ে চলেছে অথবা হাত পেতে পয়সার জন্য দাঁড়িয়ে চার বছরের এক শিশু।।এ সবই তো প্রতিদিনের দৃশ্য। আমরা যদি দেশের অন্যান্য শহর এলাকাতে যাই, প্রায় একই ছবি দেখতে পাবো। বাংলাদেশের শতকরা ৬৫ শতাংশ দরিদ্র পরিবারের শিশু ও কিশোররা কোনো স্তর থেকেই নিরাপত্তা ও সহানুভূতি তো পায়ই না, উল্টো ঘৃণা অবিশ্বাস অত্যাচারে এদের জর্জরিত হতে হয়।

শিশু অধিকার ফোরামের জরিপ অনুসারেঃ-বাংলাদেশের শতকরা ৬৫ ভাগ শিশু দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। জন্মের ১ বছরের মধ্যেই শতকরা ১০ ভাগ শিশু মারা যায়। প্রধানত পেটের অসুখে শতকরা ৫০ ভাগ, ফুসফুসের অসুখে শতকরা ৩০ ভাগ, বাকি ২০ ভাগ অন্যান্য কারণে। এইসব রোগের শতকরা ৯০ ভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। শতকরা ৭০ ভাগ শিশুর ওজন কম, বৃদ্ধির হার কম এবং বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিহীনতায় ভোগে। এই ৭০ ভাগের মধ্যে ২৫ ভাগ পুষ্টিহীনতায় ভোগে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক শোষণ প্রথার হাত থেকে শিশুদেরও রেহাই দেয়া হয়নি।

দেশের বিভিন্ন শহরে সামান্য বেতনে অর্ধবেলা খেতে দিয়ে শিশুদের ক্রীতদাসের মতো বিভিন্ন জায়গায় কাজ করানো হয়। তাদের ওপর নির্মম অত্যাচার করা হয়। আবার দেশের অনেক কারখানায় কাজ শেখানোর নামে বিনা পয়সায় কাজ করানো হয়। বাংলাদেশে বিড়ি তৈরির কারখানায় হাজার হাজার শিশু কাজ করে। বেশিরভাগ শিশু শ্রমিক যক্ষ্মা ও অপুষ্টি রোগে আক্রান্ত। সমাজ বিরোধীদের একটি অংশ শিশুদের অপহরণ করে বিক্রি করে দেয় অথবা তাদের ভিক্ষা করতে বাধ্য করে। শিশুরা যে ভিক্ষা সংগ্রহ করে সেটা তারা আত্মসাৎ করে। নাবালিকাদের ফুসলিয়ে পতিতা বৃত্তির কাজে লাগায় ও তাদের উপার্জিত টাকা আত্মসাৎ করে।

অবস্থাটা ভয়াবহ কোনো সন্দেহ নেই। দেশের লক্ষ লক্ষ শিশুর ভবিষ্যৎ কী? এমন অনেক ছোট ছেলেমেয়ের দেখা পাওয়া যায় ফুটপাতে, রেলস্টেশনে।। যারা পিতা-মাতা কাউকেই চেনে না। বেশ কিছু অল্পবয়সী ছেলে ও মেয়ে বিভিন্ন গ্রাম থেকে পালিয়ে এসেছে, আর ফিরে যায়নি। দোকান বা কারখানায় চায়ের দোকানে যেসব শিশু ও কিশোর কাজ করছে, তারা মনে করে যত কষ্ট হোক একটা কিছু করে নিজেদের ভাত যোগাড় করতে হবে। সমাজবিরোধী কাজকর্মেও অনেকে জড়িয়ে পড়েছে। বালক ও কিশোরদের একটি বড় অংশই অপরাধ জগতের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। এদের কারো কারো সৃজনশীল মন এখনো মরে যায়নি। সুযোগ পেলেই তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×