somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

পায়ে হাতদিয়ে সালাম করার মানুষগুলো কমে যাচ্ছে.....

২২ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পায়ে হাতদিয়ে সালাম করার মানুষগুলো কমে যাচ্ছে.....

আমাদের বৃহত্তর পরিবারে পা'য়ে হাত দিয়ে সালাম করার রেওয়াজটা বেশ কঠোর ভাবেই প্রচলিত। ছেলেবেলায় দাদা দাদী, নানা নানী, বাবা মা, চাচা চাচী, মামা-মামীদেরকে ছাড়াও শিক্ষদের দুই ঈদে, নববর্ষে কিম্বা বিশেষ উপলক্ষে সালাম করাটা প্রায় বাধ্যতামূলক ছিলো এবং আমরা পরম্পরায় অভ্যস্তই ছিলাম। এ-ছাড়াও তাঁদের কারও গায়ে অসাবধানে পা লেগে গেলেও সালাম করার রীতি ছিল। মামা-মামী, খালা খালুরাও ছিলেন, তবে তাঁরা ছিলেন দূরে। কম দেখা হত। তবু বহুদিন পর দেখা হলে তাঁদেরও সালাম করতাম। এ-ছাড়া ছিলেন অনাত্মীয় কিছু শুভার্থী বর্ষীয়ান মানুষ যাদেরকে সালাম করতাম। এঁরা প্রায় কেউই এখন আর নেই। ছেলেবেলায় ঈদের নামাজ আদায় করে প্রতিবেশীদেরও কাউকে কাউকে সালম করতাম। তাঁদের অনেকেই যথার্থ স্নেহশীল ছিলেন। ঈদের সময় সালাম করতে গেলে সালামীও দিতেন। আবশ্য বয়সে বড় হলেই কেউ পায়ে হাতদিয়ে সালাম পাওয়ার যোগ্য হয় না।

সালাম সম্মান জানানোর একটি প্রতীক।
আপনি আমার থেকে বয়সে বড়, অভিজ্ঞতায় বড়, জ্ঞানে বড়, আপনার কাছে নানান বিষয়ে আমি শিক্ষা পাচ্ছি বা পেয়েছি, তাই আমি আপনাকে অন্তর দিয়ে শ্রদ্ধা করি। শ্রদ্ধা করি এই কারণে যে আপনি আমার শুভৈষী, আমার জীবন-গড়ায় আপনার অবদান অনস্বীকার্য। আমি আমার শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার চিহ্নস্বরূপ আপনার পা স্পর্শ করে সেই হাত আমার কপাল/ মস্তকে ঠেকাচ্ছি। আগেকার দিনে এত জুতো-টুতো পরার রেওয়াজ ছিল না, তাই পা থাকত ধূলিধূসরিত। তা থেকেই পদধূলির ব‍্যাপারটা এসেছে। এই প্রতীকের ভেতরে শ্রদ্ধাভক্তি তো ছিলই, ছিল কৃতজ্ঞতা, বিনয় এবং অহংলোপ। সালামের উত্তরে শ্রদ্ধার্হ ব‍্যক্তি মস্তক ছুঁয়ে দোআ করতেন। কিছু মানুষকে সালাম করতে আমার সত‍্যিই ভালো লাগত যাদের মধ্যে অন্যতম- বাবা, ছোট চাচা, মামা মামী ছাড়াও বেশ কয়েক জন শিক্ষককে।

রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, "তিনি আমারই বড়ো, আমি তাঁরই ছোটো। তাঁকে প্রণাম করে আমি আমার বড়ো আমাকেই প্রণাম করি। এর মধ্যে বাইরের কোনো তাড়না নেই— জবরদস্তি নেই। যে বড়োর মধ্যে আমি আছি, যে বড়োর মধ্যেই পরিপূর্ণ সার্থকতা তাঁকে প্রণাম করাই একমাত্র স্বাভাবিক প্রণাম। কিছু পাব বলে প্রণাম নয়, কিছু দেব বলে প্রণাম নয়, ভয়ে প্রণাম নয়, জোরে প্রণাম নয়। আমারই অনন্ত গৌরবের উপলব্ধির কাছে প্রণাম। এই প্রণামটির মহত্ত্ব অনুভব করেই প্রার্থনা করা হয়েছে, নমস্তেঽস্তু, তোমাতে আমার নমস্কার সত্য হয়ে উঠুক।"

এই লেখা পড়ে ফেসবুকে আমাদের বিশিষ্ট ইসলামি বুজুর্গরা সালামের পেছনে অনেকে নানা ধর্মতত্ত্বও হাজির করতে পারেন- ওসব নিয়ে আমি উৎসাহী নই।

আমার ছোট ছেলে একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট। ছাত্রাবস্থা থেকেই সে দিনে অসংখ্যবার হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহারে অভ্যস্ত। ওর পেশাগত জীবন শুরু হয় করোনা ক্রান্তি কালে...বুঝতেই পারছেন ওর সূচি বাই কোন পর্যায়ে.... সবকিছুতেই মাইক্রোবায়োলজিক্যাল এক্সপ্লানেশন....পায়ে হাতদিয়ে সালাম, কোলাকুলি, গালে গাল লাগিয়ে কুশল বিনিময়ের ঘোর বিরোধী! কাজেই সালামে হাইজিনটাও খুব দরকারি। নোংরা পা..... পথে-ঘাটে রেলস্টেশনে কারও জুতো-পরা পায়ে সালাম এভয়েড করা উচিত, তা তিনি যতই শ্রদ্ধেয় হোন।
পায়ে হাতদিয়ে সালামের চল দিন দিন কমে আসছে বটে, তবুও এখন আমিই সালাম পাই, আর আমার সালাম করার পা দিন দিন কমে আসছে....
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৬
২৭টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×