রুজি ম্যাডাম.....
গত প্রায় চার মাস ব্যবসায়ীক কাজের জন্য আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একটা নোয়া মাইক্রোবাস রেন্টাল নেই। আমাদের আসা যাওয়ার রুট ঢাকা-নরসিংদী, ঢাকা-সাভার/মানিকগঞ্জ, ঢাকা - ময়মনসিংহ, ঢাকা -বরিশাল, ঢাকা - নড়াইল। নির্ভর করার মতো খুব ভালো ড্রাইভার।
সড়কে রেন্টাল গাড়ি নিয়ে চলাচল মানেই ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি অনিবার্য। আমাদের চলাচলের সময় এই গাড়িও যথারীতি সেই সমস্যার সম্মুখীন হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে- যেখানেই ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি থামায়....ড্রাইভার জানালার গ্লাস নামিয়ে ট্রাফিক কনস্টেবল কিম্বা সার্জেন্টের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বলে- "রুজি ম্যাডাম", কখনো "সাইদুল", কখনো "পণ্ডিত" কিম্বা অন্যকোনো নাম। নাম বলার সাথে সাথেই গাড়ি ছেড়ে দিয়ে হাতের ইশারায় চলে যেতে বলে।
লক্ষণীয় এই নামগুলো বলা হয় এরিয়া ভিত্তিক। যেমনঃ- রাজধানীর সিটি কর্পোরেশন এর এক একটা জোনে আলাদা আলাদা নাম। মহাসড়কে এক নাম। আমাদের বেশী চলাচলের যায়গা উত্তরা-তিনশো ফুট - নরসিংদী এলাকায়। এই এলাকায় "রুজি ম্যাডাম" বলার সাথে সাথেই সবুজ বাত্তি.....
ড্রাইভার জানালেন, দেশজুড়ে এভাবেই সকল সড়কে লাইনম্যান(লাইন ওমেনও আছে)- এদের সহায়তা ছাড়া গাড়ি চালানো যাবেনা।
আমি জিগ্যেস করি, কোন এলাকায় কোন লাইনম্যান তা কিভাবে জানেন?
ড্রাইভারঃ "এটা অনেকটা সফটওয়্যারের মতো বলা যায়, যা আমাদের মুখস্থ।"
আমিঃ আপনারা তো লাইনম্যানের কাছেই টাকা দেন- লাইনম্যান কখনো টাকা মেরে দেয়না?
ড্রাইভারঃ "লাইনম্যান যেহেতু 'ওরাই' ঠিক করে দেয় তাই কেউ টাকা মেরে দিলে সংশ্লিষ্ট এলাকার 'ওরাই' ওই লাইনম্যানকে সরিয়ে দেয়....."!
এই যে দুর্নীতির নেটওয়ার্ক, এই যে সিন্ডিকেট, এর বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে কমার্শিয়াল কেউ সড়কে যানবাহন চালাতে পারবে না।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ উল্লেখিত সিন্ডিকেটের মেম্বার না হয়ে কেউ যদি ওদেরকে "রুজি ম্যাডাম" বলে ধরা খায়- সেজন্য কতৃপক্ষ দায়ী নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



