somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

মুন্নি মিষ্টান্ন ভাণ্ডার......

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুন্নি মিষ্টান্ন ভাণ্ডার......

আমি যখন যেখানেই যাই- সুযোগ মতো সেই এলাকায় ভালো রসগোল্লা পাওয়া যায় কি না- সেই খবর নেই। সম্প্রতি গাজীপুর জেলার শেষ প্রান্ত এবং ময়মসিংহ জেলার শুরুতে ভালুকা এলাকায় ব্যবসায়ীক কাজে এক সপ্তাহ ধরে আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলাম। ফজরের নামাজ আদায় করে চলে যেতাম এবং কাজ শেষ করে রাত ৮টা নাগাদ ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে ১২ টা নাগাদ বাসায় ফিরে আসতাম। এহেনো কঠিন ব্যস্ততার মধ্যেও রসগোল্লার কথা ভুলিনি।

স্থানীয় একজন, যিনি পেশায় প্রকৌশলী, আমার টিমের সাথে তিন মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভালুকা সাইটে তিনি সার্বক্ষণিক থেকেছেন। তার বাসা গাজীপুর এলাকার শিমুলতলী। একসপ্তাহ তাকে প্রতিদিন সকালে ঢাকা থেকে আসার পথে গাজীপুর থেকে তুলে নিয়ে সাইটে যাই এবং ফেরার পথে গাজীপুর ড্রপ করে যাই। তিনি জানালেন- “বাংলাদেশের মধ্যে সব চাইতে ভালো রসগোল্লা পাওয়া যায়- শ্রীপুর সলিং মোড় মুন্নি মিষ্টান্ন ভান্ডারে। আপনাকে ওখানে নিয়ে যাবো।“



ওনার মুখে রসগোল্লার রসালো প্রসংশা শুনে প্রতিদিন অপেক্ষার প্রহর গুনছি- কবে, কখন যাবো- শ্রীপুর সলিং মোড় মুন্নী মিষ্টান্ন ভান্ডারে রসগোল্লা কিনতে….. অবশেষে এলো সেই মহেন্দ্রক্ষণ। আমাদের অবস্থান থেকে প্রচণ্ড জ্যাম, অলিগলি পেরিয়ে ৩০ কিলোমিটার ড্রাইভ করে শ্রীপুর সলিং মোড় মুন্নি মিষ্টান্ন ভান্ডারে পৌঁছলাম। খুবই সাদামাটা একটা মিষ্টির দোকান। দেখলাম- দোকানী এবং আমাদের গাইড ইঞ্জিনিয়ার পূর্ব পরিচিত।

দোকান মালিক আমাদেরকে দোকানের পেছনে যেখানে মিষ্টি তৈরী হয় সেখানে নিয়ে গেলেন। ভেতরে যেয়ে দেখি- ৪/৫ জন কারিগর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মিষ্টি তৈরী করছেন। দোকানের মালিক আমাদের দুজনকে গরম গরম দুটি করে রসগোল্লা খেতে দিলেন। রসগোল্লার রঙ লালচে খাকি। দোকানের অবস্থান, দোকানের মালিক-কর্মচারী, রসগোল্লার দাম এবং রসগোল্লা প্রথম দর্শনেই মনে হয়েছে- রসগোল্লায় ফুড কালার ব্যবহার করেনি, টেক্সটাইল কালার ব্যবহার করেছে। তারপরও মিষ্টি মুখে দিয়ে আমার মোটেই সুস্বাদু মনে হয়নি। যেহেতু ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের অনুরোধে অনেক দূর থেকে এসেছি এবং রসগোল্লা খোর আমি, তাই অল্প পরিমাণ মানে দেড় কেজি(আমি একাই অর্ধেক খাবো পরিকল্পনা) রসগোল্লা বাসার জন্য এবং আমার গাইড এর জন্য এক কেজি, ড্রাইভারের জন্য এক কেজি- মোট সাড়ে তিন কেজি রসগোল্লা কিনি।

তখন রাত দশটা। ঢাকা পৌঁছাতে কমপক্ষে একটা বাজবে। আমাদের সংগী প্রকৌশলী মিষ্টির প্যাকেট হাতে নিয়ে বললেন- তিনি এখানেই থেকে যাবেন- এখানে তার এক ছোট বোনের বাড়ি, তার বাসার কাছেই যেহেতু এসেছেন- তাই আজ আর গাজীপুর যাবেন না, আগামীকাল সকালে এখান থেকেই সাইতে চলে যাবেন। অগত্যা আমি একাই ঢাকার পথ ধরি। টংগী-উত্তরার মরন জ্যাম পেরিয়ে রাত দুইটায় বাসায় পৌঁছি।

বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে ৪/৫ টা রসগোল্লা নিয়ে একটার আংশিক মুখে দিয়েই মুখের আকৃতি কঠিন হয়ে যায়! আমার জীবনে আমি এতো নিম্নমানের রসগোল্লা আগে খাইনি। যথারিতী ফজরের নামাজ আদায় করেই আমি ভালুকার উদ্দেশ্যে চলে আসি। ৯টার দিকে বাসায় ফোন করে জিজ্ঞেস করি- রসগোল্লা কেমন হয়েছে?

আমাদের দুই ছেলে এবং নাতনীও আমার মতো রসগোল্লার কঠিন ভক্ত- তারা কেউই একটা রসগোল্লার আংশিকও খেতে পারেনি!

গভীর রাতে বাসায় ফিরেও ঢাকা থেকে আমি যথারিতী নয়টার সময় সাইটে পৌঁছি। ৫২ বছর বয়সী ইঞ্জিনিয়ার সাহেব তখনও আসেননি। ওনার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানলাম- ওনার দুইজন স্ত্রী। একজন থাকেন গাজীপুর, আর নতুন বিয়ে করা স্ত্রী থাকেন শ্রীপুর সলিং মোড়(নতুন বিয়ে করা নিয়ে তার সংসারে গৃহবিবাদ চলছে …. তাই এই স্ত্রীর ঠিকানা গোপন রাখার চেষ্টা করলেও "এইসব বিষয়" গোপন থাকে না। এলাকার কিছু লোকেরা ঠিকই জানে)! বুঝতে বাকী রইলোনা- শ্রীপুর সলিং মোড় রসগোল্লা কেন এতো ভালো! এবং আজ সাইটে আসতে দেরী করছে কেনো…….


সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সিরাতাম মুসতাকিমের হিদায়াত হলো ফিকাহ, কোরআন ও হাদিস হলো এর সহায়ক

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:০৮



সূরাঃ ৬ আনআম, ১৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাত্রলীগের লুঙ্গির নিচে ছিল শিবির, এখন শিবিরের লুঙ্গির নিচে ঘাপটি মেরে আছে গায়ে বোমা বাঁধা সশস্ত্র জঙ্গিরা

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৫


"তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদেশ: চোখে যা দেখেছো, কানে যা শুনেছো, সেগুলো সঠিক নয়, সেসব ভুলে যাও।" - জর্জ অরওয়েল

অনেকদিন ধরে একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নেই। এতদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী-লীগের ছায়া দায়িত্ব নিয়ে তারেক জিয়া এখন দেশে

লিখেছেন অপলক , ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৬



সংবাদের টাইটেল অনেক কিছু বলে দেয়। ভেতরেটা না পড়লেও চলে। বস্তুত: এতদিন ধরে ভারতের গ্রীন সিগনাল পাচ্ছিলেন না, তাই তারেক জিয়া দেশে আসার সময় বারবার পিছাচ্ছিলেন। এখন চুক্তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভোটের পর, আমরা পাকীদের বুটের নীচে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২



পাকীরা অমানুষ, অপসংস্কৃতির ধারক ও বাহক; ওরা ২টি জাতিকে ঘৃণা করে, ভারতীয় ও বাংগালীদের; ওরা মনে করে যে, বাংগালীদের কারণেই পাকিরা হিন্দুদের কাছে পরাজিত হয়েছে ১৯৭১... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফুড ফর থট!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৫



একটা বিশাল আলোচনাকে সংক্ষিপ্ত আকার দেয়া খুবই কঠিন, বিশেষ করে আমার জন্যে। তারপরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবলাম কিছু কথা বলা উচিত। দেশের আভ্যন্তরীন বা আঞ্চলিক রাজনীতিতে ক্রমাগত বড় বড় ভূমিকম্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

×