ট্যাটু প্রথা এবং......
যুগে যুগে, কালে কালে দুনিয়া জুড়ে রাজাদের ‘প্রয়োজন’ হত নতুন নতুন রাণির। কিন্তু এত রাজকুমারী তো আর পাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই, সাম্রাজ্যের পথেঘাটে কোনও সুন্দরীকে পছন্দ হলেই তার স্থান হত রাজার ঘরে(এই কুকর্মের উদাহরণ হতে পারে- মোঘল সম্রাটদের জীবনাচার, হালের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় তুর্কি ঐতিহাসিক সিরিয়াল 'সুলতান সুলেমান'
লম্পট রাজার হাত থেকে ঘরের মেয়েদের বাঁচাতে এক অভিনব পন্থা অবলম্বন করে এই আদিবাসীরা। যুবতী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মেয়েদের মুখে ট্যাটু করে দেওয়া হত। যাতে তাদের সৌন্দর্য কোনও ভাবেই রাজাকে আকৃষ্ট না করে। নীল, সবুজ বা কালো রঙের লাইন এঁকে বা বুটি দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া হত তাদের অবয়ব। গাছের রস, ষাঁড়ের পিত্ত ও অ্যানিমাল ফ্যাট দিয়ে প্রস্তুত করা হত সেই রং। তারপরে গাছের কাঁটা দিয়ে বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে মুখে নকশা এঁকে দেওয়া হত। কষ্টকর এই পদ্ধতির পরে বেশ কয়েক সপ্তাহ কেটে যেত সম্পূর্ণ সুস্থ হতে। পরবর্তীকালে ট্যাটু করার এই প্রথা চিন আদিবাসীদের মধ্যে কেবলমাত্র ‘সংস্কৃতি’র অঙ্গ হিসেবেই রয়ে যায়- এভাবেই চিন প্রদেশ থেকে ট্যাটু প্রথা ফ্যাশন হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপ আমেরিকা আফ্রিকা সহ গোটা বিশ্বে। তবে ট্যাটুর জন্মস্থান খোদ মায়ানমার সরকার ১৯৬০ সালে ট্যাটু করার এই প্রথাকে আইনত নিষিদ্ধ করে। ফলে বর্তমানে প্রায় অবলুপ্ত হতে চলেছে ঐতিহাসিক এই ট্য্যাডিশন।
কিন্তু শেষ হইয়াও বোধহয় হইলো না শেষ! হলিউড বলিউডের কুসংস্কৃতি এখন আমাদের দেশেও সংক্রমিত হয়েছে ভয়াবহ ভাবে। দেশের নাটক সিনেমা জগতের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, বিবাহবিচ্ছেদ কিম্বা বহুবিবাহ কুসংস্কৃতি থেকে রক্ষা করতে সুন্দর মুখোশ্রীর শিল্পীদের মুখে ট্যাটু করে কুৎসিত/বিকৃত করার সময় হয়েছে। নচেৎ আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




