শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে পরিস্থিতি থেকে.....
মানুষ মানুষের জন্য। সহমর্মিতা মানুষের একটা মহৎ গুণ। প্রাকৃতিক নিয়ম ও ছেলেবেলায় বড়দের কাছ থেকে এ গুণটা অর্জন করা হয়। ধর্মীয় বিষয়াদি বইপুস্তক ও মহৎ ব্যক্তিদের জীবনদর্শন থেকেও মানুষের এই মহৎ গুণের সন্ধান পাওয়া যায়। ছেলেবেলায় পিতা-মাতা সন্তানদের এরূপ বিষয়ে উৎসাহ ও শিক্ষাদান করলে পরবর্তী জীবনে এরা অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সহমর্মিতা শেখে। মানুষকে ঘৃণা অবজ্ঞা না করে সম্মানের চোখে দেখে। কোনো মানুষ নিজের বিপদ-আপদে অন্যের সহানুভূতি পেতে চাইলে অন্যের বিপদেও নিজকে নিয়োজিত করার মানসিকতা থাকতে হবে। এভাবেই সমাজে সুন্দর পরিবেশ গড়ে উঠতে পারে।
মমত্ববোধ বা সহানুভূতি দেখাতে অর্থ খরচের দরকার পড়ে না। একজনের সুন্দর ভাষা ও ব্যবহারের মাধ্যমেই এটি প্রকাশ পায়। সাম্প্রতিক সময় একটি ক্লাবে ঘটে যাওয়া ঘটনার সাথে আমার এক বন্ধু পুত্র ধরা খেয়ে হাজত বাস এবং জেলবাস করে ফিরেছে। ধনীর দুলাল সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে জীবন যাপন করে নাকি এক নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে! বছর খানিক আগে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান তনয় আরিয়ান খান এক মাদক কেলেংকারীতে কিছুদিন জেল বন্দী ছিলেন। তিনি কি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তা অভিতব্যই জানেন।
এরা কি কখনও এমন পরিণতির কথা আগে চিন্তা করেছে? এদের জীবন যাপনের ধরন দেখে মনে হতো মৃত্যুর পরও এরা বিশেষ ব্যবস্থার মধ্যে পরপারে যাবে। নিষ্ঠুর পরিণতি এদেরকে রেহাই দেয়নি। অভিভাবক বা অগ্রজরা ঐশ্বর্যপূর্ণ বিলাসী জীবন ধারণে অনুজদেরকে উৎসাহী করে তুললে নিষ্ঠুর পরিণতি অবশ্যম্ভাবী। বিলাসপূর্ণ জীবনযাপনে অভ্যস্তরা ছোটদেরকে প্রাকৃতিক জীবন সম্বন্ধে কিইবা শিক্ষা দিতে পারে। সহজ সরল সাধারণ জীবনকে ঘৃণা করার মানসিকতা একটা রোগ বলে মনে হয়। এরূপ ব্যক্তিরা তাদের পরিবার ও অনুজদেরকে কী শিক্ষা দেবে? তাই স্বাভাবিকভাবে এখনকার অনুজরাই আগামীতে বড়দের জন্য কষ্টদায়ক হবে। অর্থাৎ অনুজদের কাছ থেকে তখন ভালো দক্ষিণা আশা করা ঠিক হবে না। তাই করুণ পরিণতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজ-নিজ অবস্থান থেকে সামাজিক-মানবিক মূল্যবোধে অনুজদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারলে সামাজিক অবক্ষয় এড়ানো সম্ভব হবে। ধর্মীয় দিকনির্দেশনা থেকেও আমরা ছোটদেরকে এই মহৎ গুণ সম্পর্কে বোঝাতে পারি। মহৎ গুণাবলিসম্পন্ন ব্যক্তিদের জীবন দর্শন সম্পর্কে আলোচনা করতে পারি, যাতে এসব স্মরণীয় ব্যক্তিত্বের মহান দিক কচি মনে রেখাপাত করে।
অনেক প্রতিষ্ঠিত সম্পদশালী ব্যক্তি লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে নিজ আত্মা ও চরিত্রকে পরিশুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে ধর্মের বিশেষ স্থান দেখে চলেছেন। কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে কী পেয়েছি? অনুকরণযোগ্য কোনো মহৎ কাজ কি তারা সমাজের জন্য রেখে যেতে পারেন না? বরং দেখতে পাই জেদ্দা/ রিয়াদ থেকে কারি কারি টাকা খরচ করে স্বর্ণালংকার সুটকেস ভর্তি করে ফিরে এসেছে! এটা কি আসলেই ধর্ম কর্ম নাকি শপিং, নাকি ব্যাবসা!
চারিদিকে চোখ রাখুন। সত্য শোনার জন্য কান খোলা রাখুন। ন্যায় অন্যায় বোঝার জন্য অন্তর উন্মুক্ত রাখুন। তাই সার্বিক মঙ্গলের উদ্দেশ্যে অগ্রজ-অনুজ শিক্ষক-অভিভাবক সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং এর মাধ্যমেই আগামী সোনালি দিনের আবির্ভাব হবে বলে মনে করি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




