শীতের নস্টালজিয়া........
নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়েও ঢাকায় এখনো শীত অনুভূত হয়না। তবে ঢাকার বাইরে, বিশেষত উত্তর বংগের বৃহত্তর রংপুর দিনাজপুর জেলায় সকাল সন্ধ্যায় বেশ ভালোই শীত অনুভব করছি। শীতের দুপুরের এক ক্রনিক রোগ হলো নস্টালজিয়া। প্রতিবছর শীত শুরুর সময় থেকে এর শুরু। জ্বর সর্দির মতো গলার কাছে জমতে থাকে- কারোর কম কারোর বা বেশি। কিন্তু ক্রনিক রোগের কবলে প্রায় সকলকেই পড়তে হয়। শুরুর দিকে এই রোগ হালকা হালকা থাকলেও এর উপসম ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকে।
সকাল শুরু হতে হতেই উত্তরের জানলা দিয়ে এই রোগ ঘরের ঢুকে পড়ে। জানলা বন্ধ করে দিলেও ততক্ষণে শীত ঢুকে পড়ে চাদরের তলা দিয়ে। মনে পড়ে ছেলে বেলায় এরকম শীতের সকালে মুখ দিয়ে শীতের ধোঁয়ার রিং উঠতো।
খুব ছোটবেলায় শহরের কমলাপুর, আজিমপুর, ধুপখোলা মাঠে এবং ধানমণ্ডি মাঠে সার্কাস এর তাবু পড়ত। এক দিন স্কুল থেকে দল বেধে নিয়ে যাওয়া হতো সার্কাস দেখাতে। তারপর এসে খাতায় তার ধারাবিবরণী লিখতে হতো। কি দেখলে আর কি শিখলে এর মাঝে আসলে শেখা কিছুই হতো না, শুধু স্মৃতির পর স্মৃতি জমা হতে থাকতো।
খেজুরের রস এবং গুড় দিতে আমাদের বাড়ি আসতেন সাভার থেকে এক চাচা। ঝোলা খুলে বাড়ির পাত্রে খেজুর গুড় যখন ঢেলে দিতেন, তখন গুড়ের গন্ধ নিতাম বুক ভরে.... মনে হতো সারাবছর কেনো শীতকাল থাকেনা।
মাঠে, সড়কের পাশে এয়ার গান দিয়ে বেলুন ফুটানো, পটকা ফুটানো, কাটা ঘুড়ির পেছনে দৌড়ে সুতা-ঘুড়ি সংগ্রহের প্রতিযোগিতা কিংবা সন্ধে হলেই ছাতিম এর উৎকট গন্ধ যখনই শীত এসেছে তখনি এই স্মৃতি গুলো বার বার ফিরে ফিরে আসে। নস্টালজিয়া ভাইরাস এর থেকেও আরো বেশি গুনে ছড়িয়ে পড়েছে ভেতরে ভেতরে। শীতের নস্টালজিয়া ব্যাধি কোনোদিনই সেরে ওঠার নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



