কপি রাইটিং প্রাক্টিস পোস্ট নয়.........
প্রথমেই বলবো, আমি কোনো ফরমায়েসী লেখা লিখতে পারিনা। বরং যখন যা মনে আসে তাই লিখি। কাজেই এই পোস্ট কপি রাইটিং প্রাক্টিস কিম্বা প্রতিযোগিতামূলক পোস্ট নয়। আমরা যারা একেবারেই সৌখিন লেখক তাদের অনেকের লেখালেখির শুরু হয়েছিল- স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক ম্যাগাজিন, দেয়াল পত্রিকার বাইরে বেশ কয়েকটি সিনে পত্রিকার পাঠকের পাতায়। যারা একটু ভালো লিখতেন তাদের ২/১টা লেখা বিভিন্ন সাপ্তাহিক/পাক্ষিক পত্রিকায় কালেভাদ্রে প্রকাশিত হতো। তখনও কিন্তু লেখালেখি চলতো, তবে তা নিয়ে সমমনা বন্ধুদের মধ্যেই আলোচনা সমালোচনা সীমাবদ্ধ থাকতো।
স্বাধীনতার পরের বছর ১৯৭২ সালের ১৮ মে প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক বিচিত্রা, যা অত্যন্ত পাঠকপ্রিয় ম্যাগাজিন ছিলো। তারপর বের হয় সাপ্তাহিক সন্ধানী- 'সন্ধানী' ছিলো সাহিত্য মানে উত্তীর্ণ। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক যায়যায়দিন যাত্রা শুরু করে এবং প্রথম থেকেই 'পাঠকই লেখক' স্বীকৃতি দিয়েছিল যায়যায়দিন পত্রিকা। যেখান থেকে পরবর্তীতে অনেক ভালো লেখক এবং সাংবাদিক বেরিয়ে এসেছেন- যাদের অনেকেই এখন জাতীয় ভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং সমাদৃত। একই ধারাবাহিকতায় জন্ম নেয়- সাপ্তাহিক বিচিন্তা। এতোক্ষণ যা উল্লেখ করেছি- সেগুলো সবই ছাপা পত্রিকা।
ইন্টারনেট ভিত্তিক তথা স্যোশাল মিডিয়া লেখক পাঠকদের সামনে ২০০৫ সালে ধুমকেতুর মতো আবির্ভুত হয় সামহোয়্যারইন ব্লগ। অনলাইনে বাংলা ভাষার চর্চাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এবং তরুণ প্রজন্মকে বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস জানানোর লক্ষ্যে বাংলা ভাষায় এই ব্লগের যাত্রা। যা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
বাংলা ভাষায় লেখালেখির জন্য এমন আধুনিক সুবিধা সম্মত প্লাটফর্ম আগে ছিলো না। যা সৌখিন এবং ক্ষুদে লেখকদের কাছে এক স্বর্গীয় আগমন। মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই নিবন্ধিত ব্লগারের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়। ব্লগারদের গড় উপস্থিতি ছিলো প্রায় পাঁচশত। দিনে ৪০/৫০ টারও বেশী পোস্ট প্রকাশিত হতো!
সব চাইতে আকর্ষণীয় ছিলো- এই ব্লগ সাইটটি শুধু গল্প কবিতা লিখিয়েদেরই মেধা বিকাশের মাধ্যম হয়নি, একই সাথে নাগরিক সাংবাদিকতাও প্রচলন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুহূর্তেই দেশ-বিদেশের আনাচে কানাচের সংবাদ, ছবি শেয়ারের মাধ্যম হয়ে ওঠে। বাংলা ব্লগের পথিকৃৎ এবং সর্বোচ্চ নিবন্ধিত ব্লগার এবং ভিউয়ার হিসেবে যখন জনপ্রিয়তার শিখরে তখন আরও কয়েকটি ব্লগ সাইট প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে লেখালেখির জগতে একটা বিপ্লব সাধিত হয়।
সামহোয়্যারইন ব্লগ যেভাবে আলোড়ন তুলেছিল সেই রমরমা অবস্থা এখন নাই। কারণ, একশ্রেণীর ব্লগার ব্লগিঙের নামে সিন্ডিকেট করে পরিকল্পিত ভাবে ব্লগে নোংরামি শুরু করে। তাদের কাজই ছিলো- নিরীহ এবং জনপ্রিয় ব্লগারদের ব্যক্তি আক্রমণ করা, টিজ করে বিব্রত করা। ধর্মীয় বিষয়, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিভিন্নভাবে ব্লগিংকে বিতর্কিত করা। কিছু ধর্মান্ধ সন্ত্রাসী কতৃক অনেকজন ব্লগারদের হত্যার ঘটনায় এবং ব্লগারদের সম্পর্কে অপপ্রচার করে সামাজিক ভাবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও ব্লগারদের শত্রু হিসেবে তুলে ধরে। উপর্যুপরি ব্লগার হত্যার ঘটনায় এবং ব্লগারদের সম্পর্কে অপপ্রচার অনেক ব্লগার ব্লগ ছেড়ে চলে যায়। তার উপর ২০১০ সাল থেকে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের ওপর সরকারের নজরদারি, লেখালেখির এই মাধ্যমটিকে ঘিরে এক ধরণের আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। এতো কিছুর পরেও বর্তমানে বাংলাদেশের কমিউনিটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে এখন যারা সক্রিয় আছেন সেই সংখ্যাটি হাতে গোনা।
তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ লাভের সাথে সাথে শুধু বাংলাদেশ নয় বরং বিশ্বব্যাপী ব্লগিং এর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। ব্লগের জায়গা এখন দখল করে নিয়েছে ফেসবুক। ফেসবুকের বেশিরভাগ লেখার মান খারাপ হলেও দ্রুত হাজার হাজার মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ রয়েছে। পাঠকরাও সাথে সাথে ফেসবুকে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন। যে যা-ই লিখুন, প্রত্যেকেই চায়- তার লেখাটা বেশি মানুষের কাছে যাক। ফেসবুক সেক্ষেত্রে ব্লগের চাইতে অনেক গ্রহণযোগ্য মাধ্যম।
** স্ত্রী সন্তানদের লুকিয়ে হলেও- সামহোয়্যারইন ব্লগে আসুন।
** আপনার মেধাবিকাশে বাঁধভাংগা উন্মুক্ত মাধ্যম- সামহোয়্যারইন ব্লগ।
** চেতনার চাবুক সামহোয়্যারইন ব্লগ শিক্ষিত রুচিশীল মানুষের প্লাটফর্ম।
** সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে সামহোয়্যারইন ব্লগ।
** মেধা-মণনে বিকাশে, শিল্প সাহিত্যে সংস্কৃতি বিকাশে জীবনের শেষ চিকিতসা- সামহ্যোয়ারইন ব্লগে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




