somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

বর্তমান রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষাপটে........

২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষাপটে........

(১) গণ অভ্যুত্থান (২) প্রধান মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবী (৩) প্রধান মন্ত্রীর পলায়ন (৪) সেনা বাহিনীর ক্ষমতা দখল নয় (৫) রাষ্ট্রপতির সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া এইসব ঘটনাক্রম প্রমাণ করে সার্বভৌম জনগণের আকাংখায় বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ এখানে গৌণ। জনরোষের কবল থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাওয়ার ঘটা সিনেমা বা স্মৃতিকথা লেখার ভালো উপাদান হতে পারে। মনে রাখতে হবে দায়িত্ব থেকে পলায়ন সেনাবাহিনীতে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ। তবে একজন সরকার প্রধান হিসাবে, সর্বপরি স্বৈরাচারী শাসক হিসাবে শেখ হাসিনার বেলায় তা কি অপরাধ বলে গণ্য হবে- সেই আইনটি আমার জানা নেই। কেউ কি জানাবেন?

মূল প্রশ্ন, সার্বভৌম জনগণ সংবিধান মানবে কি না, কতটুকু মানবে- আংশিক না পুরোপুরি না কি নতুন করে লিখবে, সেটা ঠিক করবে জনগণ। জনগণ যে সাংবিধান স্বীকার করে, সেটাই তারা মানতে বাধ্য। অন্য কিছু নয়। এরশাদ যখন সামরিক আইন জাড়ি করে ক্ষমতা দখল করেছিলো তখন শেখ হাসিনা নিজেও সামরিক আইন জারী করা স্বাগত জানিয়ে বলেছিল- "I’m not unhappy"! অর্থাৎ তিনি অখুশি না হওয়ার কথা বলেছিলেন- সংবাদ মাধ্যমে। আবার ২০০৯ সালে নির্বাচনে ক্ষমতা গ্রহণ করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য সাংবিধানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অমান্য করেছিলেন।যাক সেই পুরনো কাসুন্দি ঘেটে লাভ নাই।

ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর, অর্থাৎ ৫ই অগাস্টের পর থেকেই আমরা বেশ কিছু ঘটনা দেখেছি যেখানে আটককৃত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের উপর গণনির্যাতন করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে গণপিটুনী দিয়ে হত্যাও করা হয়েছে। বিচার বহির্ভূত এই নির্যাতন ও হত্যা স্বাভাবিক জনরোষ থেকে সৃষ্ট এবং তাৎক্ষণিক বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই মনে করতে হবে- এর দ্বায়-দ্বায়িত্ব কোনো ভাবেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপরে দেয়া উচিৎ হবে না। ঠিক এমন ঘটনার চাইতেও ভয়ংকর বিভৎস হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিলো ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরও.....বীর মুক্তি যোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী, খসরুর নেতৃত্বে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সিনেমার শুটিংএও সরাসরি রাজাকার, বিহারিদের গুলি করে মারার লাইভ শুটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল.....

কিন্তু, এই পরিস্থিতি অবশ্যই কাম্য নয়। পুলিশ-র‍্যাবের কাস্টডিতে নির্যাতন ও প্রাণহানি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের অপশাসনের অংশ। এই কালচার অবশ্যই অবাঞ্জনীয় ও বন্ধ করতে হবে। কুখ্যাত জাস্টিস মানিকের অন্ডকোষ হানি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। তাছাড়া মানিকের অন্ডকোষ কুকুরও খাবেনা- তাহলে ওটা ছিড়ে কী হবে! এসব ঘটনার পূনঃরাবৃত্তি যেন না হয়- এব্যাপারে বর্তমান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপামর জনসাধারণকেই এই অপকৃষ্টি থেকে উত্তরনের জন্য সচেতন হতে হবে ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে

শেখ হাসিনার অনুগত পুলিশ এবং প্রশাসন এখনও ক্ষমতায়- তারা এখনও শেখ হাসিনার হয়ে কাজের নাম অরাজকতা সৃষ্টি করেই চলছে। সেক্ষেত্রে ছাত্র-জনতা সম্মিলিত ভাবে প্রত্যেক গ্রামে গঞ্জে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তৈরি করতে হবে। এরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধীনে থেকে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সহযোগিতা করবেন।

গত ১৫ বছরে আওয়ামীজান্তার হাতে নিহত, আহত ও নির্যাতিতদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। বর্তমান মুক্তিযুদ্ধাদের তালিকা পুনরায় যাচাই করে সব ভূয়া মুক্তিযুদ্ধাদের নাম বাতিল করতে হবে। দেশজুড়ে আন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকা করে সেই তালিকা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পেশ করা হবে। এদেরকে রাষ্ট্রীয় ভাবে সম্মান ও জরুরী ভিত্তিতে চিকিতসার সুব্যবস্থা এবং ভাতা দিতে হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

ইতোমধ্যেই ছাত্র আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে "সন্ত্রাসী" সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, "বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নসহ নানা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।" সরকারের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, "গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে।"- এসব কারণ উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ক্ষমতাবলে যে আইনে আওয়ামী লীগ গত ১ অগাস্ট জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল, সেই একই আইনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হল।

বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি-ইতালীতে যেভাবে নাৎসি/নাজিদের নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তেমনি আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। এই আন্দোলনে সরাসরি বিপক্ষে যে বা যারা অবস্থান নিয়ে ছিল তাদের তালিকা করে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। সেই সাথে গত ১৫ বছর যে বা যারা সরকারের ছত্রছায়ায় রাজনৈতিক নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিল তাদের তালিকা তৈরি করে বিচারের সম্মুখিন করতে হবে। আগামী বিশ বছর আওয়ামী পরিবারের কাউকে সরকারি চাকুরীতে নিষিদ্ধ করতে হবে।

জরুরী ভিত্তিতে করণীয়ঃ
বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করা।
অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া শুরু করা।
দোষীদের বিচারের আওতায় আনা।
আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৭:৪৮
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×