somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

অন্ধকার থেকে আলোয়....

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অন্ধকার থেকে আলোয়....

'গুরু' শব্দটি 'গু' এবং 'রু' এই দুটি সংস্কৃত শব্দ দ্বারা গঠিত। 'গু' শব্দের অর্থ অন্ধকার এবং 'রু' শব্দের অর্থ যা অন্ধকারকে দূরীভূত করে। অর্থাৎ গুরু হলেন যিনি অন্ধকারকে দূর করেন।

তাইবলে গুরু আর শিক্ষকের অর্থ কিন্তু একই না।

গুরু হলেন তিনি, যিনি আমাদের তৃতীয় নয়ন অর্থাৎ "উপনয়ন" উন্মোচন করেন। আমি অক্ষয়কুমার সেন বাংলা পদ্যে "শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-পুঁথি" পড়ে জেনেছিলাম, "আমি ততক্ষণ পর্যন্ত মাতৃদর্শন লাভ করিনি, যতক্ষণ না আমার গুরু তোতাপুরি আমার তৃতীয় নয়ন উন্মোচন করেছিলেন"।

পৃথিবীর বাকি জীবজগতের সাথে মানুষের পার্থক্যই ঠিক এই জায়গাটিতেই। মানুষই একমাত্র ষড়রীপুকে জয় করে "আমি"কে জানতে সক্ষম। আর "আমি"কে জানা মানেই ঈশ্বরকে জানা। বাইরে কোথাও খোঁজা বৃথা। 'আমি' সম্পর্কে ইমাম গাজ্জালী (রঃ) তার কিমিয়ায়ে সাদ'ত গ্রন্থে লিখেছেন- "আমি মানে একজন মানুষ নয়, প্রতিটি মানুষের আত্মা হচ্ছে আমি"।

গুরু আমাদের জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার মিলনের পথ দেখান। তিনি শুধু বয়ে যাওয়াটা শেখান। বয়ে যাওয়ার পথটি শিষ্যকে নিজেকেই তৈরি করতে হয়। যে গুরু অহংবোধে শিষ্যের থেকে সাবমিশন চান, তাঁর গুরু হয়ে ওঠা হয় না। আবার যে শিষ্য সেই আত্মসমর্পণে দ্বিধাগ্রস্ত হন, সে আদর্শ শিষ্য হতে পারেন না।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, গুরুলাভ না করলেই বা ক্ষতি কি? না ক্ষতি নেই, অসংখ্য বিষয় আছে, ক্ষেত্র আছে, বই আছে নিজেকে উন্নত করার জন্য।

একটি উদাহরণের সাহায্যে বলিঃ
আমি, আপনি বা আমরা অনেক বই পড়ে (এখানে জানার মাধ্যম হিসাবে বইকে নিলাম) অনেক কিছু জানলাম। জানার পরেই যে অনুভূতিটি পাঠকের মধ্যে প্রাথমিকভাবে দেখা দিল, আমরা অর্থাৎ পাঠক যে জানি- সেটা তো অপরকে জানাতে হবে। যথারীতি সেই পথেই এগোলাম। দেখলাম আমার পান্ডিত্যে পৃথিবীর নব্বই ভাগ মানুষ বাহ্ বাহ্ করলেন, কিন্তু দশভাগ সে ভাবে তো প্রশংসা করলেন না। ঠিক এই জায়গাটা থেকে জন্ম নিল দুঃখ এবং সেই পথেই ক্রোধের সৃষ্টি। ষড়রীপুর একটি মোক্ষম রীপু এই ক্রোধ। সেই পথেই অহংবোধ হুঙ্কার ছাড়তে লাগলো (সশব্দে নাও হতে পারে)। আমার এই এতো জানা-বোঝার নেট রেজাল্ট হলো BIG ZERO । তার কারণ অহংবোধ এসে আত্মদর্শনে বাধা সৃষ্টি করলো, এই আমিত্বকে অতিক্রম না করলে "আমি" কে দেখা যায় না!

মানুষ-জনের মধ্যে আধ্যাত্মিকবোধ জাগিয়ে তোলার কোনরকম মহৎ উদ্দেশ্যে এই লেখা নয়। দিনমান যে বা যারা কাউকে "আমার গুরু" বলে মাতম করেছেন, তাঁদের সশ্রদ্ধভাবে আমার তরফ থেকে এইটুকু জানালাম।

পরিশেষে বলি, ফ্যাসিবাদের দোসর, সমর্থক হয়ে শিক্ষক কিম্বা গুরু হওয়া লজ্জার। গুরুর চাইতে মানুষ হওয়া শ্রেয়। লোকজনের তৃতীয় নয়ন উন্মোচন হোক্ না হোক্, মানবিক দৃষ্টি যেন সদা জাগ্রত থাকে। তাহলেই তো লোকজনদের "মানুষ" বলে সম্বোধন করলে ভালো লাগবে। আপনার সম্মান বাড়বে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৫৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×