ফ্যাসিবাদীতা একটা অসুখ......
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আমার বন্ধু যিনি বছর দুই আগে একটা প্রাইভেট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে অবসর নিয়ে এখন কানাডা-মালেশিয় বেগম পাড়ার বাসিন্দা- তার সাথে প্রায়ই কথকথা হয়।
স্বাভাবিক ভাবেই তিনি আওয়ামী সমর্থক একজন আঁতেলও বটে। প্রায়শই তিনি ফোন করে ইউনুস সরকারের চৌদ্দপুরুষ উদ্ধার করতে ভিডিও ফোন করেন। এবারের মোদি বাবুর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে দেখা করা নিয়ে সব আওয়ামী ভক্তদের মতো তিনিও খুব উচ্ছ্বসিত ছিলেন। এক কথায় ইউনুস সরকারের নিশ্চিত পতন দেখতে পাচ্ছিলেন। গতকাল এক পর্যায়ে জিজ্ঞেস করে- আমি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ অস্বীকার করি কিনা?
'আমি অস্বীকার করি' বলায় তিনি আমার শিক্ষা জ্ঞান বুদ্ধি নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করলেন! একপর্যায়ে তিনি আমার মানসিক অসুস্থতা বিষয়ে নিশ্চিত করে চিকিৎসার পরামর্শ দিলেন।
আমি বললাম- সব গোত্রে, সব দেশে সব সমাজে বাড়াবাড়ি বা টুকটাক বিশৃঙ্খলা তৈরি করা কিছু লোকজন থাকে, সেটাকে কোন একটা ‘বাদ’/নাম’ দেওয়া অবশ্যই উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কারণটা ভারত-আকাঙ্ক্ষা, তথা ভারত সরকারের ইচ্ছায় করা হয়েছে। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু আচরণকে জঙ্গিবাদ বলার কোন কারণ নাই। জংগীবাদের চরিত্র আরো অনেক কিছু রিকয়ার করে।
হাসিনা তার প্রেতাত্মা রেখে গেছে সর্বত্র। তারা এ পর্যন্ত বহুকিছুই করে দেখেছে, সাময়িক সময়ের জন্য কিছু সুবিধাও নিয়েছে। কিন্তু বেশীদিন বহির্বিশ্বে মনোযোগ ধরে রাখতে পারেনি। কারণ তারা সত্যটা এবার দেখতে পাচ্ছে, এবং সবশেষে তা প্রমাণ পাচ্ছে ড. মুহম্মদ ইউনুসের মাধ্যমে।
আগে-পরে তারা তাদের জঙ্গিগুটি বের করেছে, এ নিয়ে নিরলস কাজ করবার জন্য তাদের তো ‘র’ পত্রিকা প্রথম আলো-ডেইলী স্টার আছেই। সাথে ছিলো দেশের বেশীরভাগ মিডিয়া। সব মিলে এই মিশনে তারা মাঠে ছিল এবং আছে। এদের দুটো গুরুত্বপূর্ণ গুটি হলো সাম্প্রদায়িক সংখ্যালঘুত্বের মিথ আর জঙ্গিবাদের উত্থানের ফেইরিটেল।
এতোদিন বজ্রপাতে হিন্দু কারো মৃত্যু হলে মুসলিম দেশের সাম্প্রদায়িক বজ্রাঘাতে সংখ্যালঘুর মৃত্যু- টাইপ নিউজ করে। তো দেখা গেলো, হচ্ছেনা, সব মিথ্যে প্রমাণ হয়েছে। এখন তাদেরকে খেলতে হবে জঙ্গিখেলা। গোটা আওয়ামী দুঃশাসন কালে জংগী কার্ড খেলেই প্রতিপক্ষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে, গুম করেছে, জেল-জুলুম নির্যাতন করেছে।
প্রথম আলো-ডেইলী স্টার ও হাসিনার দোসররা আগেও ভারতদাস ফ্যাসীবাদকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিচারবহির্ভূত নানান হত্যাকান্ডকে যেমন জঙ্গি দুশমন নিধন হিসেবে দেখাতো আর নাটক সাজাতো, তেমন চেষ্টাই তারা শুরু করেছে আবারো ফ্যাসীবাদ ও ইন্ডিয়ার যৌথ পুনর্বাসনের জন্য। সেই লক্ষ্যে তাদের স্ট্রঙ্গেস্ট মেনডেশাস প্রপাগান্ডাটাই হলো জঙ্গিবাদের গল্প, তাদের শেষ কড়ি। সিমস লাইক দে স্টার্টেড টু মুভ দেয়ার কুইন-নাইট আউট অব ডেসপারেশন।
এদের মানসিকতার বীভৎসতা প্রকাশ পেল যখন দেখলাম যে, ইস্যু বানানোর জন্য তারা নিজেরা নিজেদের লোকদের মাইরা ফেলছে। তারপর বিরোধীদের দোষ দিয়া ইচ্ছামতো গ্রেফতার আর নির্যাতন করছে। বার বার এইগুলি দেখার পর থেকে তাদের সম্পর্কে কিছু জানার আগ্রহ হারায়ে ফেলছি। এত অন্ধতা নিয়া আর কোনো রাজনৈতিক দল পৃথিবীর বুকে বিরাজ করে কিনা আমার জানা নাই।
প্রসঙ্গত বলা যায়- 'কথার কথা'!
যেমন- "হাজার বছর বেঁচে থাকো"/ "শতবর্ষী হও"- মানুষ কদাচিৎ 'শতবর্ষী' হলেও 'হাজার বছর' কেউ বেঁচে থাকে না। তবুও আমরা 'হাজার বছর' বেঁচে থাকার দোয়া করি।
আসলে সব কিছুরই আক্ষরিক তরজমা করলে তার অর্থ সঠিক হয় না, তবুও আমরা আমাদের সুবিধাজনক ভাবে কথার কথাকেই আক্ষরিক অর্থে অনুবাদ করে ফায়দা হাসিলের ধান্ধা করি।
যেমন কদিন আগে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের গুরু মোদিজিকে ট্রাম্প সাহেব বলেছেন- "ভারত ডিপ স্টেইট নিয়ে "হান্ড্রেড অফ ইয়ার্স " যাবৎ খেলছে"! - এর আক্ষরিক বাংলা অর্থ করে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর গং আউলাঝাউলা লাগিয়েছে!
যেখানে বাংলাদেশের সৃষ্টিই হয়েছে মাত্র ৫৩ বছর আগে, তাহলে ভারত বাংলাদেশ নিয়ে কি করে একশ বছর যাবৎ শয়তানি খেলা খেলছে!
এ ক্ষেত্রে "হান্ড্রেড অফ ইয়ার্স" মানে একশ বছর ধরলে ট্রাম্পের কথা মনে হবে পাগলের প্রলাপ!
আওয়ামী কুবুদ্ধিজীবিদের মধ্যে শাহবাগের অন্যতম দুই পাণ্ডা ইন্টেলেকচুয়ালও একই আক্ষরিক তর্জমা করে বলছে- "ট্রাম্প মনে হয় অংকে কাঁচা, নয়তো ওর ডিমেনশিয়া হয়েছে, নইলে ট্রাম্প কি করে একশ বছর বললো!"
ওদের কে বোঝাবে- সবকিছুর আক্ষরিক তরজমা করতে নাই রে পাগলা!
প্রকৃতপক্ষে ট্রাম্প বলতে চেয়েছে- যুগ যুগ ধরে ভারত বাংলাদেশ নিয়ে তলে তলে খেলছে সেটা আমরা জানি মোদী কাহা!
তাই, আপনাদের মোদী দুলাভাই কিম্বা মোদি বাবা-কাহা যাহাই বলেন- তার মুখ শুকায়া কুত্তার পুটকির মতো হয়ে গিয়েছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৪৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



