রাশিয়ার মতো ভুল আর কেউ না করুক.....
রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করলো তখন আমেরিকান এমব্যাসিসহ সকল ইউরোপিয়ান এমব্যাসি কিয়েভ থেকে পোল্যান্ডে সরিয়ে নেয়। কারণ, তাদের ধারণা ছিল কয়েক দিনের মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেন দখল করে নিবে এবং কিয়েভের পতন হবে।
রাশিয়া কিয়েভের কাছে প্রায় পৌঁছেও গিয়েছিল, কিন্তু কোন এক অজানা কারণে সুযোগ থাকা সত্বেও রাশিয়া কিয়েভের উপর সাঁড়াশি আক্রমণ না করে শহরটি দখল করলো না। পুতিন হয়তো ভেবেছিলো ইউক্রেন, রাশিয়ার কাছে সারেন্ডার করে রণেভঙ্গ দিবে। এমনিতেই ইউক্রেন রাশিয়ার আন্ডারে চলে আসবে।
রাশিয়া, খোদ ইউক্রেনের পূর্বে-দক্ষিণে অনেক আক্রমণ করে অনেক ভূখণ্ড দখল করে নিলেও পশ্চিমে কিয়েভের সাথে পোল্যান্ডের রেল লাইনটি ধ্বংস না করে সম্পুর্ণই অক্ষত রাখলো। ফলতঃ ন্যাটো পোল্যান্ড থেকে ট্রেনে করে মানবিক সাহায্যের নামে ভারী অস্ত্র পাঠাতে শুরু করলো।
পশ্চিমারা যখন বুঝলো পুতিন কিয়েভ দখল করবে না, তখন তারা আবার এম্ব্যাসিগুলি কিয়েভে ফেরত নিয়ে গেলো। অন্যদিকে ভারী ভারী অস্ত্র এবং মার্সেনারির ছদ্দবেশে ব্রিটিশ ও আমেরিকান কমান্ডো ফোর্স পাঠাতে লাগলো। এতে ইউক্রেন নতুন শক্তি পেয়ে রাশিয়াকে পিছু হটতে বাধ্য করে এবং পরবর্তীতে রাশিয়ার পক্ষে আর কিয়েভ দখল করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ন্যাটো নতুন নতুন টেকনোলোজির অস্ত্র সরবরাহ করে ইউক্রেনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে। একই সাথে বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ইউক্রেন সোলজারদের ট্রেনিং দিয়ে তাদেরকে শক্তিশালী করে।
পুতিন সুযোগ থাকার পরেও যখন তার দুর্বল শত্রুকে নির্মূল করলো না, তখন শত্রু ইউক্রেন সময় পেয়ে নতুন শক্তি সঞ্চয় করে একের পর একটা আক্রমণ করে রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজ ডুবিয়ে দেয়। দুইদিন আগে ইউক্রেন রাশিয়ার উপর যে আঘাত হেনেছে, তাতে ৪০টি বোমারু বিমান ধ্বংসের দাবী করেছে, যা বিশ্ব মিডিয়ায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এক দিনের আক্রমণে একটি দেশের ৪০ টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস যুদ্ধের ইতিহাসে আর নাই। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জাপান পার্ল হার্বারে এমন ভয়ানক এটাক করলেও অর্থের বিচারে গতকালের এই এটাকই সবচেয়ে বড় ক্ষতি। রাশিয়া হয়তো এই ক্ষতি থেকে উদ্ধার পেয়ে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না। আমার ধারণা পুতিনকে পশ্চিমারা এবার শেষ করে দিবে।
আসলে শত্রুকে অনুকম্পা দেখালে এবং তাকে নির্মূল না করলে, সে ঘুরে দাঁড়াবেই। এবং যখন দাঁড়াবে তখন শত্রুই তাকে নির্মূল করে দিবে- এটাই যুদ্ধের নীতি।
রাশিয়ার মতো পাকিস্তানও একই ভুল করেছে।
গতমাসে ভারত পাকিস্তানকে এটাক করলে, পাকিস্তান নতুন টেকনোলোজি দিয়ে ভারতকে গোহারা হারিয়ে দেয় এবং ব্যাপক ক্ষতি করে। আকাশে পাকিস্তান একছত্র সুপ্রিমেসি প্রতিষ্ঠা করে। ভারত তার ক্ষতি এবং সামরিক শক্তির দুর্বলতা প্রকাশ পাওয়ায় দ্রুত ট্রাম্পের মাধ্যমে যুদ্ধ বিরতি করতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানের উচিত ছিল তার চির শত্রু ভারতকে যখন বাগে পেয়েছে তখন আরো ব্যাপক ভাবে ভারতের সকল এয়ার বেইসকে ধ্বংস করে দেয়া যেভাবে ইউক্রেন রাশিয়ায় করেছে। কিন্তু তারা করলো না যুদ্ধ বিরতি মেনে নিয়ে।
ফলে ভারত নতুন জীবন পেলো এবং সুযোগ পেলো তাদের সামরিক শক্তিকে নতুন করে ঢেলে সাজাবার।
আমেরিকা, ইয়াহুগুষ্টি, ব্রিটেন, ফ্রান্স সকলেই এগিয়ে এসেছে ভারতকে অত্যাধুনিক টেকনোলোজি এবং নতুন আধুনিক অস্ত্র সাপ্লাই দিয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কামিয়ে নেয়ার এই অপূর্ব সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য। আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে ভারতের সামরিক শক্তি এমন পর্যায়ে যাবে তখন যুদ্ধ লাগলে এখন পাকিস্তান যে মোড়লগিরি করার সুযোগ পেয়েছে, সেটা আর কোনোদিন পাবে না। তখন পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতি চাইলেও কেউ এগিয়ে আসবে না।
কারণ, পাকিস্তানের পরাজয় মানে- চাইনিজ টেকনোলোজির পরাজয় পশ্চিমা টেকনোলজির জয়।
অতএব পশ্চিমরা চাইবেই যেভাবেই হোক পাকিস্তানকে পরাজিত করতে।
ভারত, তাদের এই লজ্জাজনক পরাজয়ের প্রতিশোধ ঠিকই নেবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে।
তখন পাকিস্তানের অবস্থা আজকের রাশিয়ার মতো অবস্থা হবে বলে আমি মনে করি। এমনকি পাকিস্তান তখন টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে সোভিয়েত রাশিয়ার মতো।
এবার ফিরে তাকাই বাংলাদেশের দিকে। গত ১৭ বছরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীরা যেহারে বিএনপির নেতা, কর্মী সমর্থকদেরকে গুম-খুন করে প্রায় নিশ্চিন্হ করে দিয়েছিল, গত ৫ই অগাস্টের পর বিএনপির সুযোগ এসেছিল তার প্রতিশোধ নেয়ার। তাদের উচিত ছিল ছাত্র জনতার সাথে মিলেমিশে সর্বশক্তি দিয়ে গত ১৬ বছরের প্রতিটি নির্যাতন এবং অত্যাচার এবং বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলায় যে হয়রানি এবং মানসিক নির্যাতন করেছে তার বদলা নিয়ে আওয়ামীদেরকে শায়েস্তা করার।
কিন্তু বিএনপি সুযোগ থাকার পরও তারা হয়ে গেল 'মানবিক পুতিন', 'মহাত্মা গান্ধী'! হয়তো ভেবেছে- আওয়ামী লীগ এমনিতেই ধরা দিবে কিম্বা তারা একেবারেই শেষ হয়েগেছে!
কিন্তু তারা জানে না, এই অঞ্চলের মোড়ল ভারত যাদেরকে জায়গা দিয়ে, আশ্রয় দিয়ে পালছে এবং ট্রেনিং দিচ্ছে, তারা যখন ফেরত আসবে তখন বিএনপির অবস্থা আজকের রাশিয়ার মতো হবে।
সব ভেঙে চুরমার করে দিবে। বিএনপি আবার কোনদিন দাঁড়াতে পারবে কিনা সন্দেহ।
বিএনপি নেতারা ভুলে গিয়েছে, "সাপের বিষ দাঁত রেখে কখনো খেলতে নাই। সুযোগ পেলে সাপ ছোবল দিবেই"- ইউক্রেনের মতো।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ শাফি হক ভাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৩:২৯