জুলাই ঘোষণা নিয়ে কেন এতো টালবাহানা হয়েছিল.....
জুলাই সনদ ঘোষণায় মোটামুটি সব পক্ষই খুশি। এনসিপি যদিও চেয়েছিল জুলাই ঘোষণা পত্র সংবিধানের অংশ হোক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপি'র প্রস্তাব মতোই এটি সংবিধানের তফফিলে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এনসিপি এটা নিয়ে অখুশি বলে মনে হচ্ছে।
কিন্তু যে অপ্রকাশিত কারণে গত কয়েক মাস ঘোষনাটি আটকে ছিল সেই সমস্যাটা সমাধান না করে বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই বাদ দেওয়া অংশটি হচ্ছে- "স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসরদের সহায়তায় গনহত্যা, ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা"- বিষয়টি ঘোষণা পত্রে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু সেখানে কঠোর আপত্তি জানায় জামাত। তাই এই ঘোষণাপত্রে উক্ত অংশ বাদ দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রস্তাবনায় যুক্ত করা হয়েছে-
''উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের সুদীর্ঘকালের ধারাবাহিকতায় এই ভূখণ্ডের মানুষ দীর্ঘ ২৩ বছর পাকিস্তানের স্বৈরশাসকদের বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং নির্বিচার গণহত্যার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করে জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।
যেহেতু, বাংলাদেশের আপামর জনগণ দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভূখণ্ডে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বিবৃত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে।"
ঘোষণাপত্রে অতীতের বেশকিছু লড়াই- সংগ্রামের ইতিহাস যুক্ত করা হয়েছে, এটাকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন বাদ দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন এই দেশের শিক্ষার্থীদের মনস্তত্ত্বে একটা বিপ্লব সৃষ্টি করে। এই তরুণরাই ২০২৪ সালে কোটা ফিরে আসার প্রেক্ষিতে আবারও রাজপথে নামে এবং হাসিনা গুলি করে মানুষ হত্যা শুরু করলে প্রতিরোধের মুখে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এছাড়া শাপলা চত্বরে গণহত্যা, মোদি বিরোধী আন্দোলনের হত্যাকাণ্ড, শহীদ আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড, যা ভারতীয় আধিপত্য ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই দেশের মানুষকে প্রতিবাদী করে তোলে। গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটের পাশাপাশি, ভারতীয় আগ্রাসনের বিষয়টা বাদ দিয়ে অসম্পূর্ণ জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সবার লড়াইয়ের স্বীকৃতি দিতে না পারা দুঃখ জনক!
রাত আটটায় প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচনের বিষয়ে সুস্পষ্ট রূপরেখা দিয়েছেন।
যাইহোক বড় একটা রাজনৈতিক ঝামেলা মোটামুটি "উইন-উইন পরিস্থিতি" মাধ্যমে শেষ হলো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


