দেশ এক ভয়াবহ দুর্যোগের সম্মুখীন......
দুর্যোগ মানেই বিপর্যয়!
বর্তমানে আমরা এক কঠিন দুর্যোগে পর্যুদস্ত।
সাধারণত দুর্যোগ দুই প্রকারঃ প্রকৃতির দুর্যোগ বনাম মানুষের তৈরি দুর্যোগ (Man-made disasters & Natural disasters)।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় হঠাৎ করেই আসে- মানুষকে বিপর্যস্ত করে ফেলে। এগুলোকে ঠেকানোর ক্ষমতা আমাদের হাতে সীমিত।
কিন্তু মানুষের তৈরি দুর্যোগ- যেমন যুদ্ধ, দমন-পীড়ন, দুর্নীতি, পরিবেশ ধ্বংস- এসব সচেতনভাবে সৃষ্টি করা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়তো একটা সময়ের জন্য ক্ষতি করে, আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ভাবেই সেই দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা যায়। কিন্তু মানবসৃষ্ট দুর্যোগ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধ্বংস ডেকে আনে।
একটা উদাহরণঃ
এক্সিম ব্যাংকঃ প্রাইভেট ব্যাংকিং খাতে একদা সারা জাগানো একটি ব্যাংকের নাম। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ১১ জন স্পনসর পরিচালকদের মধ্যে আমার সিনিয়র দুই বন্ধু ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ফজল বুলবুল এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক চৌধুরী খসরু (এনার্জিপ্যাক প্রতিষ্ঠাতা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক) সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন প্রখ্যাত পেশা ব্যংকার শাজাহান কবির- উল্লেখিত তিনজনই আমার অত্যন্ত সন্মানিত এবং আমিও তাদের স্নেহধন্য। তাদের আমন্ত্রণে শুরু থেকেই আমি এক্সিম ব্যাংকের সাথে ব্যবসা করি।
ফাউন্ডার এমডি শাজাহান কবির ইন্তেকাল করেন। এনামুল হক চৌধুরী খসরু মতভেদের কারণে তার শেয়ার বিক্রি করে চলে যান। নুরুল ফজল বুলবুল ভাইকে ষড়যন্ত্র করে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। ব্যাংকের সাথে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় ২০১৪ সালে। ২০১৮ সাল থেকে ব্যাংকটির একক কতৃত্ব নিয়ে নেন আর একজন ফাউন্ডার ডাইরেক্টর এবং ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার (নাসা গ্রুপ)। তিনিই ব্যাংকটা খেয়ে দেন।
এক্সিম ব্যাংকে আমার লেনদেন বন্ধ থামলেও ২০১৪ সাল থেকেই ব্যাংকে যৎসামান্য টাকা ছিলো। গত ৭/৮ মাস যাবত সেই টাকা তুলে একাউন্ট ক্লোজ করে দেওয়ার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করেও সফল হতে পারিনি। অনলাইন ব্যাংকিং সেবা বন্ধ হলেও যেকোনো শাখায় টাকা জমা দিতে পারবেন। কিন্তু অনলাইন ব্যাংকিং (যে ব্রাঞ্চে একাউন্ট খুলেছিলেন সেই ব্যাংক ছাড়া) কোনো টাকা তুলতে পারবেন না। চেকের মাধ্যমে সপ্তাহে ৫০০০/- বেশি টাকা দিচ্ছে না। এক্সিম ব্যাংকের ATM বুথ ডেবিট কার্ড নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে সিটি ব্যাংকের ATM বুথ থেকে ৫ হাজার টাকা উত্তলনে ৪৬০/- কমিশন কেটে নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্দেশনা দিয়েছে- 'পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কোনো গ্রাহক সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৫০০০/- টাকা উত্তলন করা যাবে'। একই সাথে রুগ্ন এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, এবং ইউনিয়ন ব্যাংক একীভূত করার নির্দেশ দিয়েছে।- এটা হলো Man made disasters এর জ্বলন্ত উদাহরণ!
একারণেই বলেছি- সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হলো মানুষের তৈরি দুর্যোগ। কারণ, এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব যদি আমরা লোভ, ক্ষমতার লালসা আর অন্যায় সিদ্ধান্ত থেকে নিজেদের নিবৃত্ত করতে পারি। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে যে দুর্যোগের মধ্যে ফেলে পালিয়ে গিয়েছে.... এই দুর্যোগ থেকে বাংলাদেশের মানুষ আগামী অর্ধশত বছরেও বের হতে পারবেনা।
প্রকৃতি কখনো শত্রু নয়, শত্রু হচ্ছে মানুষের অমানবিকতা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



