somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

সেনাবাহিনীকে কেন্দ্র করে বিতর্ক, অভিযোগ ও বাস্তবতা.......

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেনাবাহিনীকে কেন্দ্র করে বিতর্ক, অভিযোগ ও বাস্তবতা.....

দুইদিন আগে এটিএন বাংলায় একটা মনোজ্ঞ টকশো দেখলাম। আলোচ্য বিষয় ছিলো- সেনাবাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা.....প্রধান আলোচক ছিলেন Abu Rushd A R M Shahidul Islam। বিষয়টা নিয়ে তিনি বরাবরের মতোই চমৎকার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বক্তব্য দিয়েছেন। আবু রুশদ এর বক্তব্যের আলোকে একই বিষয় নিয়ে আমিও চিন্তা ভাবনা করেছি, যা ফেসবুক ও ব্লগেএর বন্ধুদের সাথে শেয়ার করছিঃ-


বাংলাদেশে সেনাবাহিনী সবসময়ই রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে রাষ্ট্র নির্মাণের প্রতিটি অধ্যায়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেনাবাহিনীকে নিয়ে গালাগালি, হাইপ, অসভ্যতা, অশ্লীলতা ও ব্যক্তি আক্রমণ বেড়ে গেছে। এর পেছনে কিছু বাস্তব কারণ যেমন আছে, তেমনি আছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণাও। বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি স্তর স্পষ্ট হয়।

★★ প্রথমেই জানতে হবে- সেনাবাহিনীকে ঘিরে বিতর্ক কেন তৈরি হয়?

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ইতিহাসঃ স্বাধীনতার পর থেকে বারবার সামরিক হস্তক্ষেপ, অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক ভূমিকা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করেছে। এ কারণে মানুষ সেনাবাহিনীকে শুধু একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে দেখেনি; বরং কখনো তা হয়েছে ক্ষমতার অংশীদার।

ফ্যাসিস্ট শাসনের সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগঃ গত ১৬ বছরের স্বৈরশাসনে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা ও কিছু সিনিয়র অফিসারের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের সহযোগী হওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা প্রমাণিত সত্য। বিরোধী দল দমন, অন্যায় গ্রেফতার, নিখোঁজ-বিষয়গুলো সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক দায়ে ফেলেছে নিঃসন্দেহে!

সামাজিক মাধ্যমে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াঃ ফেসবুক-ইউটিউব -টুইটারসহ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সেনাবাহিনীকে নিয়ে অতি আবেগপ্রবণ, কখনো যাচাইহীন তথ্য ছড়ানো হয়। এগুলো অনেকে ব্যবহার করে সেনাবাহিনীকে অসম্মানিত করার জন্য, আবার অনেকে ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর প্রতি জনমনে ক্ষোভ উসকে দিতে।

★★ গালাগালি, হাইপ ও অসভ্যতা কার স্বার্থে?

বিদেশি এজেন্ডাঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী মিশনে বড় ভূমিকা রাখে। বিশ্বব্যাপী তাদের একটি সুনাম আছে। সেই সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে দেশি-বিদেশি কিছু শক্তি সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে।

দেশীয় রাজনৈতিক প্রপাগান্ডাঃ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সেনাবাহিনীকে টেনে আনা হয়। সরকারবিরোধীরা সেনাবাহিনীকে দায়ী করে, সরকার সেনাবাহিনীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে- ফলে আস্থা নড়বড়ে হয়েছে বললে ভুল বলা যাবেনা।

জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়ানোঃ একটি রাষ্ট্রকে দুর্বল করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো তার সেনাবাহিনীকে মানুষের চোখে সন্দেহজনক করে তোলা। এ ধরনের বিভ্রান্তি মূলত রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা দুর্বল করার ষড়যন্ত্র। যেমনটা দেখা গিয়েছিল বিডিআর ম্যাচাকারের সময় তাদের নিষ্ক্রিয়তায় এবং গত ষোলো বছর স্বৈরশাসকের সহায়তায়। এবং সম্প্রতি ভিপি নুরের উপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতনের বিষয়ে স্পিকটি নট ভুমিকায়।

গত ষোলো বছর যাবত একটা উপহাস্য জিজ্ঞাসা (অশ্লীল প্রশ্নটা বাদ দিয়ে আমি ভদ্র চিত ভাবে লিখলাম)- ''গোয়েন্দাদের কাজ কি?''

উত্তরঃ আমরা দেখেছি- গত ষোলো বছর এরা শুধুমাত্র 'বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে কল্পিত ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব এবং তথ্য' ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পায়নি।

আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর মধ্যে সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- DGFI, NSI এবং CID। এক কথায় বলতে গেলে গত ষোলো বছর এরা সবাই একই কাজ করেছে।
সংস্থাগুলো কার অধীনে?

DGFI (Directorate General of Forces Intelligence): তিন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত এটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে, কার্যত সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এর নেতৃত্বে থাকেন একজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। তবে তিনি এবং তার বাহিনী সেনাবাহিনী প্রধানের কাছে জবাবদিহি করেন না। জবাবদিহি করেন প্রধানমন্ত্রী কিম্বা তার পক্ষে তার সামরিক উপদেষ্টার কাছে।
ডিজিএফআই বাংলাদেশের প্রধান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা, যার কাজ হলো-জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা হুমকি পর্যবেক্ষণ করা, তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা এবং দেশ ও সামরিক বাহিনীর সুরক্ষার জন্য কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করা। এটি বিদেশী সামরিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়াবলিও পর্যবেক্ষণ করে থাকে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা কার্যক্রমেও ভূমিকা রাখে।


NSI (National Security Intelligence): এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে, বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ সরকারের একটি বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা, যার প্রধান কাজ হলো জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই সংস্থাটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়ন করে থাকে। এর মধ্যে সন্ত্রাস দমন, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স (প্রতি-গোয়েন্দা), রাজনৈতিক গোয়েন্দা কার্যক্রম, এবং VIP ও VVIPদের নিরাপত্তা বিধান অন্তর্ভুক্ত হলেও গত ষোলো বছর শুধুমাত্র রাজনৈতিক কাজে তথা বিএনপি-জামাত ঠ্যাংগাতেই ব্যবহারের অভিযোগ ষোল আনা।

অর্থাৎ, উভয় গোয়েন্দা সংস্থাই সরাসরি সরকারের নীতিগত নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। কাজেই শুধু সেনাবাহিনীকে দায়ী করলে পুরো চিত্র পাওয়া যায় না- কারণ নির্দেশ আসে রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ থেকেই।

CID (Criminal Investigation Department) বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ একটি বিশেষ শাখা। যার প্রধান কাজ হলো সন্ত্রাসবাদ, খুন, এবং সংগঠিত অপরাধের মতো জটিল ঘটনাগুলো তদন্ত করা, অপরাধী শনাক্ত করা এবং অপরাধের জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা। সিআইডির মূল লক্ষ্য হলো দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে রাখা। সিআইডি একটি বিশেষায়িত বিভাগ, যা অন্যান্য পুলিশ ইউনিটগুলোর চেয়ে আরও জটিল ও বিশেষায়িত অপরাধগুলোর তদন্ত করে থাকে।

★★ অভিযোগ মিথ্যা নয়, তবে দায় একতরফা নয়।
সেনাবাহিনীকে ঘিরে যে অভিযোগগুলো আছে, যেমন- কতিপয় সদস্যদের বিরুদ্ধে অপহরণ, গুম, দমননীতি ইত্যাদির পেছনে কিছু বাস্তবতার শেকড় আছে। তবে এগুলো শুধুই সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ। রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না থাকলে এই সংস্থাগুলো এককভাবে এমন কাজ করার সুযোগ পায় না। ফলে, দায় শুধু সেনাবাহিনীর নয়; দায় মূলত শাসক গোষ্ঠী এবং তাদের রাজনৈতিক ব্যবহারের।

★★ করণীয় ও পথনির্দেশঃ
সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক খেলার বাইরে রাখা জরুরি।
গালাগালি, অশ্লীলতা নয়- যৌক্তিক সমালোচনা ও তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ হওয়া উচিত। জনগণের আস্থা ফেরাতে সেনাবাহিনীরও পেশাগত স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা প্রদর্শন করা প্রয়োজন।

উপসংহারঃ
সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাই সবার আগে বাহিনীর সদস্যদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। রাজনৈতিক স্বার্থে বা ষড়যন্ত্রমূলক কারণে তাদের ঘিরে গালাগালি, অপপ্রচার ও বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে- সেগুলো বন্ধ করে তাদেরকে আস্থার যায়গা ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করতে হবে। তবে এটাও সত্য যে, সেনাবাহিনী যদি বারবার রাজনৈতিক খেলায় ব্যবহৃত হয়, তবে জনগণের আস্থা হারানো অনিবার্য। তাই একদিকে যেমন বাহিনীকে নিরপেক্ষ ও গণমুখী হতে হবে, অন্যদিকে নাগরিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে যাতে অশ্লীলতা, হাইপ ও গালাগালির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা না হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১১
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×