AI... Fact Checker এবং Fact Findings.......
প্রযুক্তি মানুষকে কতটা বদলে দিয়েছে- এটা আজ আমাদের চারপাশেই দেখা যাচ্ছে। এক সময় ছবি ছিল স্মৃতির প্রতিচ্ছবি, কণ্ঠস্বর ছিল মনের গভীর অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু এখন এআই প্রযুক্তিতে ছবি হয়ে গেছে ভ্রম, কণ্ঠস্বর হয়ে গেছে ছদ্মবেশ। মাত্র কয়েক ক্লিকেই কাউকে অপরাধী বানানো যায়, বা নির্দোষকে কলঙ্কে ডুবিয়ে দেওয়া যায়। একটা এডিট করা ছবি, কণ্ঠস্বরের নকল- তার পরিণাম হতে পারে একটি জীবনের সর্বনাশ!
মানুষকে মানুষ হিসাবে চেনার উপায়ই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। কারো হাসি সত্যি না মিথ্যে, কারো কান্না আসল না কৃত্রিম- এসব বোঝার ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে প্রযুক্তি। সত্য-মিথ্যার সীমানা মুছে দিয়ে আমাদের ঠেলে দিচ্ছে এক অমানবিক অন্ধকারে।
প্রযুক্তির এই দানবীয় রূপ শুধু সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে না, মানুষের প্রতি মানুষের আস্থা ভেঙে দিচ্ছে। আত্মীয়, বন্ধু, সহযোদ্ধা- কাউকে আর নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করা যায় না। এক অদ্ভুত সন্দেহ ও অবিশ্বাসের দেয়াল গড়ে তুলছে এআই। অথচ, একটু সতর্ক হলেই- আসল/নকল বোঝা যায়।
যে প্রযুক্তি হতে পারে মানবসভ্যতার অগ্রগতির প্রতীক, আজ সেই প্রযুক্তিই আমাদের চোখের পানি। এ যেন সর্বনাশের এমন এক খেলা- যেখানে মানুষ হেরে যাচ্ছে, আর অমানবিকতা জিতে যাচ্ছে।
প্রশ্ন হলো- এই সর্বনাশের দায় নেবে কে? প্রযুক্তি নির্মাতা? অপব্যবহারকারী? নাকি সেই সমাজ, যে সমাজ যাচাই না করেই বিশ্বাস করে, শেয়ার করে, বিচার করে?
আসলে এই দায় কারও একার নয়- এটা এক সম্মিলিত ব্যর্থতা। প্রযুক্তি নির্মাতারা দায়ী, কারণ তারা সুরক্ষার আগে বাণিজ্যকে বড় করেছে। অপব্যবহারকারীরা দায়ী, কারণ তারা মানুষের আবেগকে অস্ত্র বানিয়েছে। আর সমাজ দায়ী, কারণ আমরা যাচাই না করেই রায় দিয়ে দিই।
মজার বিষয় হচ্ছে- যেমন বিজ্ঞানীরা এ আই বানিয়েছে, তেমন বিজ্ঞানীরাই ফ্যাক্ট-চেকার' বানিয়েছে। কিন্তু 'ফ্যাক্ট চেকার'/ ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং আসার আগেই সর্বনাশ হয়ে যায়!
সত্য-মিথ্যার মাতাল চক্রের সামনে এক মুহূর্তেই কেউ জীবন ধ্বংস করে দিল, আর ফ্যাক্ট-চেকার আসবে- মিটিং, রিপোর্ট, লোগো, একটি শীতল পৃষ্ঠা বলবে “ভুল”। কিন্তু তখন? যখন ঘর পুড়ে গেছে, When ashes still warm in the hand- কে ফিরিয়ে দেবে উঠোনের শিশুর হাসি, কে মুছে দেবে ভুক্তভোগীর লজ্জা?
সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হলো- যাকে নিয়ে মিথ্যা প্রচার হয়, তার জীবনের যে ক্ষত তৈরি হয়, সেই ক্ষতের ক্ষতিপূরণ কোনো ফ্যাক্ট-চেক বা ক্ষমা দিয়ে পূরণ হয় না। সত্য প্রমাণিত হলেও চরিত্রহত্যার ক্ষতচিহ্ন থেকে যায় সারাজীবন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



