ভোলার ঘটনা নিয়ে কয়েকঘন্টা পূর্বে সামুতে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। ঐ পোস্টে সামহোয়্যার ইন ব্লগের মোডারেটর "কাল্পনিক_ভালোবাসা" ভাই আমার উপর ইচ্ছেকৃত ভুল তথ্য উপস্থাপনের দায় দিয়ে স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, পোস্ট'টি সরিয়ে নিতে এবং সত্য ঘটনা উল্লেখ করে, ক্ষমা চেয়ে একটা পোস্ট দিতে। তা না করলে ব্লগ নীতিমালা অনুযায়ী আমার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উনার মন্তব্য চোখেপড়া মাত্রই আমি আমার পোস্ট সরিয়ে আবারো প্রথম আলো, ফেইসবুক, ইউটিউব ঘেটে মূলঘটনা জানবার চেস্টা করলাম। লক্ষ করলাম- প্রথম-আলো ততক্ষণে তাদের প্রতিবেদন কিছুটা আপডেট করে নিয়েছে।
লিংক: (নিচে আছে)
ফেইসবুকেও তখন মূল ঘটনা কিছুটা পরিষ্কারভাবে আসা শুরু হয়েছে; যা ব্লগে ঐ পোস্ট শেয়ারের পূর্বে আমার চোখে পড়েনি।
সময় বাড়ার সাথে সাথে মিডিয়ার কল্যাণে মূল ঘটনা আরো স্পষ্ট হয়েছে। তাই মডুর বক্তব্য মেনে ভুল তথ্যের পোস্ট উপস্থাপনের দায় নিয়ে
আমি অনুতপ্ত হচ্ছি!
দুঃখপ্রকাশ করছি!
ক্ষমাপ্রার্থনা করছি! এবং মূল ঘটনা স্বপ্ল বাক্য লিখবার চেষ্টা করছি। ভুলত্রুটি মার্জনীয়।
মূল ঘটনা: পুলিশের ভাষ্যমতে, বিল্পব চন্দ্র শুভ নামের এক ব্যক্তির আইডি হ্যাক করে মেসেঞ্জারে নবী(সঃ) কে নিয়ে কুটুক্তি করা হয়। এলাকার মানুষ'বিল্পব চন্দ শুভ'কে অভিযুক্ত ভেবে শাস্তির দাবীতে প্রতিবাদ শুরু করলে শুক্রবার সন্ধ্যায় 'বিল্পব চন্দ্র শুভ' বোরহানোদ্দিন থানায় জিডি করতে যান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ বিপ্লবকে থানা-হেফাজতে রাখে। এবং আইডি হ্যাকের প্রমাণ পাওয়ার শনিবারে হ্যাকের সাথে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার রাতে স্থানীয় এলাকাবাসী পুলিশের পারমিশন না নিয়েই 'কুটুক্তির প্রতিবাদে পরদিন (রবিবার) সকাল ১১টায় স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে মাইকিং করে'
পুলিশ বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মসজিদের ইমাম মাওলানা জালাল উদ্দিন, বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা মিজানকে পুলিশ অনুরোধ জানায় এবং সাধারণ মানুষ আসার আগে বিক্ষোভটি বন্ধ ঘোষণা করতে বলে। ঈমামগন সকাল ৯টায় মোনাজাতের মাধ্যমে সভা সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
তবুও মানুষ দলে দলে ঈদগাহ মাঠে জমায়েত হতে থাকে। এবং এক পর্যায়ে কিছু মানুষ পুলিশের উপর সহিংস আক্রমণ শুরু করলে, আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়। এবং এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ব্লগের সহ ব্লগার ও পাঠকদের বুঝবার সুবিধার্থে এবং সামুর দায়িত্বশীল মডুর দায়িত্বশীলতার দৃষ্টান্ত হিসেবে আমার লিখা "অভিযুক্ত ভুল তত্ত্বের পোস্টটিও" হুবহু নিচে উপস্থাপন করলাম। (মডুর আপত্তি থাকলে, বিনাপ্রশ্নে মুছে ফেলবো।)
" ফেইসবুক ও মিডিয়া ঘাটাঘাটি করে যেটা জানালাম, দু'একদিন পূর্বে 'Biplob Chandra Shuvo' নামের এক যুবক তার ফেইসবুক আইডিতে মহানবী (স.)কে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় কটূক্তি করে মেসেজ ও স্ট্যাটাস শেয়ার করে। ঐ মেসেজ ও স্ট্যাটাস ফেইসবুকে ভাইরাল হলে ফেইসবুকে প্রতিবাদ শুরু হয়। এবং স্থানীয় মুসলিম জনতা 'তৌহিদি জনতার' ব্যানারে রবিবার বেলা ১১টায় ভোলার বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়।
এমতাবস্থায় বিপ্লব চন্দ্র শুভ পরিস্থিতি আচ করতে পেরে (সম্ভবত শনিবার সন্ধ্যায়) থানায় আইডি হ্যাক হয়েছে মর্মে জিডি করতে গেলে তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়।
রবিবার সকালে 'ফাসির দাবীর স্লোগান দিতে পূর্বঘোষিত প্রতিবাদ কর্মসূচিতে দলে দলে লোক যোগ দিতে শুরু করলে পুলিশ তাড়াতাড়ি সমাবেশ শেষ করার তাগিদ দেয়। এতে পুলিশের সাথে তৌহিদি জনতার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এবং ঐ ঘটনায় এখম পর্যন্ত ৪ জন নিহত ও ৫০+ আহত হয়ে বিভিন চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন। view this linkএলাকার পরিবেশ এখনো উত্তপ্ত।
বিস্তারিত পড়ুন, এখানে (প্রথম আলো)
ঘটনার সংবাদ উপাত্ত পড়ে মনে পুলিশের দায়িত্ব কর্তব্য নতুন করে জানতে ইচ্ছে করছে। গণতান্ত্রিক দেশে মিছিল মিটিং করার অধিকার তো সবারই আছে। ভোলার তৌহিদি আমজনতাও ধর্মানুভূতিতে আঘাতের প্রতিবাদে একটা মিছিল বা সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল। পুলিশ বাধা না দিলে তারা হয়তো মিছিল মিটিং করে সমাবেশ শেষ করতো।
আমার জানামতে, নিরাপত্তার স্বার্থে ঐ সমাবেশ উপলক্ষে পুলিশের সতর্ক অবস্থা থাকবার কথা ছিলো। তা না করে নিরাপত্তার স্বার্থে মিছিল, মিটিং শুরুর পূর্বে বন্ধ করে দেওয়ার অপচেষ্টা কি বাড়াবাড়ি নয়?!
( অবশ্য আমজনতা যদি মানুষ হত্যা বা অন্যধর্মের মানুষদের ঘরবাড়ি, প্রতিষ্ঠানে হামলা করার মতো সহিংস কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে যেতো তাহলে ভিন্ন কথা ছিলো।)
দিনদিন দেশটা মগেরমুল্লুক হয়ে যাচ্ছে, মন্ত্রী, এম্পি, পুলিশ, আমলাকামলা, আমজনতা- যার যা ইচ্ছে তাই করছে!
নিরপরাধ চারজন ধর্মপ্রেমী সাধারণ মানুষ হত্যার দায় কি পুলিশ এড়িয়ে যেতে পারবে?! "
সবাই সর্বদা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন- এই কামনা।
শুভ ব্লগিং-
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ২:১৮