জীব সৃষ্টির শুরু হয় কাদার ভিতর থেকে। এমিবা ই সৃষ্টির প্রথম প্রাণী নয়। সৃষ্টির প্রথম প্রাণী অনড় অবস্থায় থাকে। সে কোন নড়াচড়া করতে পারে না। এই নড়াচড়া করতে না পারার মধ্যেই নিজেই নিজের সাথে প্রজনণের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। প্রায় তিন লক্ষ জনম অনড় অবস্থায় জন্ম মৃত্যুর আবর্তে ঘূর্ণায়মান থাকার পরে সে নড়াচড়া করতে পারার মত জীবে রুপান্তরিত হয়। এবং তার পরেও সে, তিন লক্ষ জনম নিজেই নিজের সাথে প্রজনণ করে বংশ বৃদ্ধি করে থাকে। এই ছয়লক্ষ জনম নিজেই নিজের সাথে প্রজনণ করে বংশবৃদ্ধি করার পরে, জীব আর নিজেই নিজের সাথে প্রজনণ করে বংশ বিস্তার করতে পারে না। তখন বংশ বিস্তার করতে প্রয়োজন হয় আরেকটি লিঙ্গের। এবং কাদার নিচেই আরও ছয় লক্ষ জনম জন্ম ও মৃত্যুর আবর্তে আবর্তিত হতে থাকে। মোট বারো লক্ষ জনম কাদার মধ্যে জন্ম মৃত্যুর আবর্তন শেষ করে জীব উভচর প্রাণীতে রুপান্তরীত হয়।
তখন সে কাদা ও পানির মধ্যে উভয় যায়গাতেই বিচরণশীল জীব হয়ে জন্ম নেয়। আর এভাবেই সে প্রকৃতির নিয়মে ১২ লক্ষবার জন্ম মৃত্যুর আবর্তন শেষ করে, এবং সে তখন শুধুমাত্র পানির জীব হয়ে যায়। তখন সে আর কাদার মধ্যে গেলে বেঁচে থাকতে পারে না। সে তখন শুধু মাত্র পনির মধ্যেই বাঁচতে পারে। এই পানির মধ্যে সে বারো লক্ষ বার জন্ম মৃত্যুর আবর্তন শেষ করে সে আবার উভচর প্রাণী হয়ে যায। সে তখন পানি ও ডাঙ্গায় সম-ভাবে বিচরণ ও জীবণ ধারণ করতে পারে। এভাবে উভচর অবস্থায় বারো লক্ষ জনম পাড়ি দেওয়ার পরে সে শুধু মাত্র ডাঙ্গার জীব হয়ে যায়। তখন সে আর পানিতে বাঁচতে পারে না। এই ডাঙ্গায় বারো লক্ষবার জন্ম মৃত্যুর আবর্তে আবর্তিত হওয়ার পরে সে আবার উভচর প্রাণীতে রুপান্তর হয়। তখন সে ডাঙ্গা ও আকাশে সম ভাবে বিচরণ করতে ও বেঁচে থাকতে পারে। এভাবে জীব ডাঙ্গ ও আকাশে উভচর ভাবে বারো লক্ষ বার জন্ম মৃত্যু আবর্তণ করে শুধু মাত্র আকাশের জীব হয়ে যায়। এই আকাশে বারো লক্ষবার জন্ম মৃত্যুর আবর্তণ শেষ হলে জীব মানুষ প্রজাতীর প্রাণী হয়ে জন্ম গ্রহন করে।
জীব বিবর্তনের ধারা ধরে মানুষ রুপে প্রথম জন্ম গ্রহনের পরেও, এক লক্ষ জনম পর্যন্ত তার বুদ্ধি পশুর মতই থাকে। সে পশুর মত খাটে, খায়, দায ঘুমায়। এর বাইরে সে আর কিছুই বোঝে না। সে পরের ক্ষতি করে নিজের আখের গোছাতেও একটুও দ্বীধা করে না এবং সে কোন এবাদতও করে না। সে শুধু বছরে দুই ঈদের নামাজ পড়ে। এভাবে এক লক্ষ জনম পাড়ি দেওয়ার পরে সে জ্ঞানের দ্বিতীয় স্তর খোলা নিয়ে জন্ম গ্রহন করে। তখন সে বুঝতে পারে আমাদের একজন সৃষ্টিকর্তা আছে তার এবাদত করতে হবে। তখন সে শুরু করে সপ্তাহে প্রতি শুক্রবারে নামাজের মত সাপ্তাহিক উপাসনা। এভাবে লক্ষ জনম পাড়ি দেওয়ার পরে সে শুরু করে প্রতিদিনে উপাসনা। তবে ১০০% নয়। সে প্রতিদিন এক দুই ওয়াক্ত নামাজের মত যেমন ফজর ও মাগরিবের নামাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে। এভাকে এক লক্ষ জনম পাড়ি দেওয়ার পরে সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী বা পূর্ণ কাল্পনিক স্রষ্টার উপাসনা শুরু করে।
এভাবে এক লক্ষ জনম পাড়ি দেওয়ার পরে, তার মনে হয় একজন গুরুর কাছে বায়াত হতে হবে। এবং সে মনে করে একজন গুরুর হাতে হাত দিয়ে বায়াত গ্রহন করলেই তার দায়ীত্ব শেষ। এবং সে জান্নাতী হয়ে যাবে। আর এভাবেই আরও এক লক্ষ জনম পাড়ি দেওয়ার পরে সে বুঝতে পারে যে, শুধু বায়াত গ্রহণ করলেই হবে না। গুরুর কাছ থেকে কিছু জানতে হবে। তাই তারা গুরুর কাছ থেকে কিছু জানে ও বই পড়ে কিছু জেনে তর্কবাগীশ হয়ে যায়। তারা কোন ধর্মীয় কর্ম করে না। শুধু তর্কে মানুষকে পরাজীত করার চেষ্টা করে। আর এভাবে একলক্ষ জনম পড়ি দেওয়ার পরে সে বুঝতে শেখার মত জ্ঞান নিয়ে জন্ম গ্রহন করে। এবং সে তখন তার গুরুর কাছে বিষয় সম্বন্ধে বুঝতে শুরু করে। এভাবে সে গুরুর কাছে জানা বিষয় বুঝতে বুঝতেই এক লক্ষ জনম পাড়ি দিয়ে ফেলে। এই জানা ও বুঝার অবস্থান পাড়ি দেওয়ার পরে সে বুঝতে পারে শুধু জানলে ও বুঝলেই হবে না। জানা ও বুঝা মত কাজ করতে। হবে। তখন সে গুরুর দেওয়া সাধনা করতে শুরু করে। আর এভাবেই এক লক্ষ জনম পাড়ি দেওয়ার পরে সে সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে। এবং সে জন্ম ও মৃত্যুর বাইরে চলে যায়। এটাই মুক্তি।
তাই, ইচ্ছে করলেই কাউকে তার চিন্তা ও চেতনার আমূল পরিবর্তন করে দেওয়া সম্ভব নয়। যদি সে প্রকৃতির নিয়মে চিন্তা ও চেতনা পরিবর্তনকারী স্বত্বা প্রাপ্ত না হয়ে থাকে। তবে যেমন একজন সুস্থ মানুষকে অজ্ঞানকারী ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে বা লাফিং গ্যাস প্রয়োগের মাধ্যমে তার চিন্তা ও চেতনার পরিবর্তন করা সম্ভব, ঠিক সে রকমই ধর্ম বস্তু প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষের চিন্তা ও চেতনার আমূল পরিবর্তন করে, একটা সুন্দর পৃথিবী গড়া সম্ভব। যেখানে সমস্ত মানুষকে ইসলাম ধর্ম প্রয়োগের মাধ্যমে, সকল মানুষ হতে ইসলাম বিরোধী সকল চিন্তা ও চেতনার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে একটা সূন্দর পৃথিবী গড়ার অঙ্গিকার নিয়ে, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে ধর্ম এর পথ চলা। যেখানে থাকবে না ধনি গরিবের বৈষম্য, থাকবে না মারামারি, কাটাকাটি, হিংসা, অহংকার ও ঘৃণা। যেখানে থাকবে সকলের সমান সুযোগ প্রাপ্তির এক সুন্দর পৃথিবী।
চলবে-
সত্য সহায়। গুরুজী।।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যাহার চিন্তা বাক্য ও কর্ম, নিজের, সমাজের, দেশের তথা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে নিযোজিত, সেই সত্য ও শান্তি ধর্মের লোক। তা সে যে সম্প্রদায়েরই হউক না কেন।
আর- যাহার চিন্তা বাক্য ও কর্ম, নিজের, সমাজের, দেশের তথা বিশ্ব অ-শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে নিযোজিত, সেই অ-সত্য ও অ-শান্তি ধর্মের লোক। তা সে যে সম্প্রদায়েরই হউক না কেন। সেরু পাগলার বাণী।