আমার বয়স কত হল? সবাই বলে চব্বিশ ঘন্টায় এক দিন আর ৩৬৫ দিনে এক বছর হয়। সে হিসেবে খুব বেশি বয়স হয়ে গেছে তা বলা না গেলেও বয়সটা খুব কমও হয়নি। কিন্তু আমার পরিনতি হয়েছে কতটুকু তা কি আমি জানি? বয়সের হিসেব প্রতি বছরই খুব ঘটা করেই মনে রাখছি কিন্তু প্রকৃত অর্থেই আমি কতটুকু বড় হতে পারলাম সেই কথাটি আমার চিন্তারও বাইরে।
আমি আজ একটা খাটো মানুষ দেখলে তার দিকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে তাকাই। দেখ দেখ, লোকটা কী বেঁটে বলে শব্দবোমা মারি। কিন্তু আমার জানা নেই মানুষের প্রকৃত উচ্চতা পা থেকে মাথা পর্যন্ত নয়, বরং মাথা থেকে আকাশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। আজ আমি সদা সর্বদা একটা সুন্দর মুখশ্রীর পূঁজো করায় ব্যস্ত। কিন্তু আমি ভুলে গেছি শরীর তো একটা আকার মাত্র। একই খাঁচার উপর কিছু রক্ত মাংসের স্থান, পরিমান আর বর্ণের তারতম্যের কারনে আজ আমরা কেউ সৌন্দর্যের দেব-দেবী আর কেউ কেউ যেন দাস-দাসী থেকেও নগণ্যে পরিনত হয়েছি।
সেই যে কবে কবি লেখকেরা বলেছিলেন, সময় বলে কি কিছু আছে? বয়স বলে কিছু? আসলেও তো তাই। দিন, মাস, বছর এগুলো সবই তো আমাদের মনগড়া কল্পনা মাত্র। এ নিছক ব্যাপারগুলো আমাদের সামনে উন্মুক্ত হয় বটে তবে অন্য কারও মৃত্যু পরবর্তী সময়ে। কেউ মারা গেলে আমরা প্রথমে হয়ত ভাবি লোকটা এত বছর বেঁচে ছিল। কিন্তু তৎক্ষনাত পরবর্তী চিন্তাটা আসে চলে যাওয়া লোকটির আসল পরিনত বয়স সম্পর্কে। তখন কেও কেও বলে, আহা! বড় মাটির মানুষ ছিল। কেউ মুখে না বললেও মনে মনে বলে, মরে গিয়ে আমাদের শান্তি দিল! কিন্তু এসব ভাবনাও আমাদের দীর্ঘস্থায়ী হয়না কখনও। আমরা আবার এই হীনমন্য পার্থিবে ফিরে আসি। দিন, মাস, বছর গুনতে থাকি। আর ভাবতে থাকি আমার বয়সটা যেন কত হল? খুব বুড়িয়ে যাচ্ছি দিন দিন!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৩