তেলমারা। এটা একটা সামাজিক ব্যাধি। এখন আমাদের জাতিগত অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। প্রত্যেকটা কাজে আমরা তেল মারি। খাস বাংলায় যাকে বলে চামচামি করি। আমাদের সমাজে অনেক লোক আছে যারা তাদের যোগ্যতার অতিরিক্ত পেতে চায় অথবা সহজে কিছু পেতে চায় ; তারাই এ তেল মারার কাজটা বেশি করে থাকে। এ ধরনের লোকদের পদে পদে দেখা যায়। আমাদের বেশিরভাগ নেতারা যেমন তেল মেরে নেতা হয়েছেন, তাই তারাও এসব তেল মারা চামচাদের পছন্দ করেন।
আমাদের পদ্মার পারের ক্ষতিগ্রস্থ জনগণ এবং তাদের সাথে যুক্ত শরীয়তপুরের আপামর জনতার কঠোর আন্দোলনের ফলে বাড়িবাঁধ প্রকল্প পাশ হলো। অথচ কিছু কিছু লোক তাদের অভ্যাস মত এখানেও তাদের নিজস্ব গ্রুপের নেতাদের ফলাও করে দেখাচ্ছে। যদিও এটা ছিল একটা আঞ্চলিক গণআন্দোলনের ফসল। তবে হ্যাঁ, সকলেই সহযোগিতা করেছে এটা ঠিক। তবে আমারা তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা পর্দার আড়ালে থেকে প্রকল্প পাশে আন্তরিক ভাবে সহযোগিতা করেছে।
কিছু দিন আগে তেলমারার একটা তেলেসমাতির কারবার দেখলাম। আমার এক ফেসবুক বন্ধু Mahbub Ullah Risco ভাই এর এক স্ট্যাটাসে। নলতা গ্রামে এক প্রাইমারি স্কুলে কয়েকটি কক্ষের নাম দিয়েছে “বঙ্গবন্ধু অফিস কক্ষ”, “বেগম ফজিলাতুন্নেসা শ্রেণী কক্ষ” ইত্যাদি। তেল মারতে যেয়ে তারা জাতির জনককে প্রাইমারির কক্ষে বন্দি করেছে। এসব চামচামি যদি অচিরেই বন্ধ না হয় তাহলে সাধারণ জনগণের ভিতর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হবে। ধিরে ধিরে দেশ থেকে গুণী জনের কদর উঠে যাবে। মানুষ ক্রিয়েটিভ কিছু করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। দেশে প্রকৃত দেশপ্রেমিক নেতা তৈরি হবে না। সবাই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে তেল মারার পিছনে দৌড়াতে থাকবে। কারণ এখন সর্ব ক্ষেত্রেই দায়িত্ব পালন না করে তেল মেরেই পদোন্নতি নেওয়া হয়। আমার এসব কথা অনেকের কাছেই ভালো লাগবে না। এখানে কোন তেল নেই, লেখাটা খুবই খসখসে।
তেল মারার গল্প সম্পর্কে সবাই কমবেশি ওয়কিবহাল। কারণ ইতোপূর্বে অনেক জ্ঞানী গুণী জন তেল মারার উপর বহু গদ্য পদ্য লিখেছেন। তেলমারা সম্পর্কে অনেক মুখরোচক কৌতুকও সমাজে প্রচলিত আছে। তারপর আমরা কেন যেন এ অভ্যাসটা ত্যাগ করতে পারছি না।
পরিশেষে বলব আমার এ লেখাটাকে কেউ তেলমারা হিসেবে নিবেন না।
______ কবির সরদার (০৩/০১/২০১৮)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



