ঘড়ির কাটায় রাত তিনটে দশ মিনিট ঘুমাতে পারছে না মেয়েটি, লিখছে তার আবেগের কথাগুলো। ভালবাসার কথা নয় কারন একদিন ছেলেটি মেয়েটিকে বলেছিলো এটা ভালবাসা নয় শুধুই আবেগ। আবেগ যেদিন ফুরিয়ে যাবে মেয়েটির প্রতি ছেলেটির ভালবাসাও ফুরিয়ে যাবে। তাই মেয়েটির সত্যিকারের ভালবাসা ছেলেটি বুঝলো না আবেগ বলে দূরে ঠেলে দিলো মেয়েটির ভালবাসাকে। কাছে আসার একবারও চেষ্টা করলো না। অথচ দীর্ঘ ছয় বছর কেটে যাচ্ছে মেয়েটির আবেগ এখনো শেষ হচ্ছে না। ভালবাসা আর আবেগের ব্যাখা মেয়েটি জানে না শুধু জানে সে একটি ছেলেকে ভালবাসে । যে ছেলেটি না কোনদিন তার সাথে ভাল করে কথা বলেছে , না কোনদিন তার সাথে দেখা করেছে । কারণ মেয়েটির ভালবাসা ছিলো একতরফা ।
ভালবাসে ছেলেটিকে অথচ মুখ ফুটে ছেলেটির সামনে যেয়ে কখনো বলতে পারতো না ভালবাসি তোমাকে। একটি মেয়ে হয়ে একটি ছেলেকে কি করে বলবে ভালবাসি । ভালবাসে খুব অথচ লজ্জায় বলতে পারতো না । কি করে বলবে, যে মেয়েটি ভাল করে কোনদিন কোন ছেলের সাথে কথা বলেনি , স্কুল কলেজ জীবনে যার কোন ছেলে বন্ধু ছিলো না । অথচ সে মেয়েটিই একদিন একটি ছেলের প্রেমে পড়ে গেল। ধীরে ধীরে ছেলেটির প্রতি দূর্বল হয়ে পড়লো। মেয়েটির এখন অনেক ছেলে বন্ধু । এখন সে অনেক ছেলেদের সাথে মিশে , কথা বলে কিন্তু কারও প্রেমে পড়ে না। কাউকে ভাললাগলেও ভালবাসতে পারে না। সামাজিকতার কথা, পরিবারের কথা ভেবে মেয়েটি বিয়ের কথা ভাবলেও মন থেকে কোন ছেলেকে মেনে নিতে পারে না।
তার ভাবনায়, কল্পনায় তার অস্তিত্ব জুড়ে যেন ছেলেটির ছায়া। অথচ ছেলেটি বিয়ে করে অনেক সুখে আছে। হয়তো কোন বন্ধুদের সাথে মেয়েটিকে নিয়ে গল্প করে আর হেসে উড়িয়ে দেয় এই বলে একটি মেয়ে তাকে অনেক ভালবাসতো । ওহ মেয়েটির ভালবাসা তো ছেলেটির কাছে আবেগ। ছেলেটির কাছে মেয়েটির প্রশ্ন সত্যি যদি এটা ভালবাসা না হয় শুধুই আবেগ হয়ে থাকে তবে ছয় বছর হয়ে যাওয়ার পরও কেন মেয়েটি ছেলেটিকে ভুলতে পারে না। আজও কেন ছেলেটিকে নিয়ে ভাবে , ছেলেটিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে । ছেলেটির জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে অঝোরে কাঁদে। তবে কি মেয়েটির আবেগ এখনো কাটেনি। প্রতিদিন ছেলেটির আইডিতে যেয়ে একবার হলেও ছেলেটিকে দেখে। ফেসবুক আইডি খোলে ছেলেটির সাথে পরিচয় হবার পর । এরপর মেয়েটি ছেলেটির আইডিতে যেয়ে লাইক দিত আর মাঝে মাঝে কমেন্ট করতো । শুভকামনা অথবা ভালো কোন কমেন্ট। তাতেই মেয়েটি দূর থেকে শান্তি পেত। কিন্তু তাতেও ছেলেটির সমস্যা। কি আর করা অপশন একটা আছেই তো। একদিন মেয়েটিকে আইডি থেকেও ব্লক করে দেয়। মেয়েটি বাধ্য হয়ে আরেকটি আইডি খোলে । সেখান থেকেও ব্লক। কি অপরাধ মেয়েটির, নিস¦ার্থভাবে ছেলেটিকে ভালবাসে হয়তো এটাই মেয়েটির সবচেয়ে বড় অপরাধ।
আবেগ থাকলে মেয়েটি ছেলেটিকে বিয়ের পরও বিরক্ত করে যেত। কিন্তু না যেদিন মেয়েটি শুনলো ছেলেটি বিয়ে করেছে সেদিন থেকে সে আর ছেলেটিকে বিরক্ত করে না । মাঝে মাঝে মেয়েটি যখন কষ্ট সহ্য করতে পারে না তখন সে তার বন্ধুদের নাম্বার থেকে ফোন দেয় । ছেলেটি হ্যালো বললেই কেটে দেয়। কারণ মেয়েটি শুধু ছেলেটির ভয়েস শুনলেই শান্তি পায়। তারপরও কি বলবে এটা ভালবাসা নয় আবেগ। মাঝে মাঝে মেয়েটি বলে তার ভালবাসার মানুষ যদি তার কাছে কোনদিন ফিরে আসে তবে সে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে তার ভালবাসার মানুষটিকে গ্রহণ করবে।
কিন্তু মেয়েটি তা কখনোই করবে না কারণ একটি মেয়ে হয়ে আরেকটি মেয়ের সংসার সে কখনো ভাঙ্গবে না । দূর থেকেই সারাজীবন ছেলেটিকে ভালবেসে যাবে। আর লুকিয়ে লুকিয়ে ছেলেটির জন্য চোখের পানি ফেলবে। মেয়েটি ছেলেটিকে শুধু একটা অনুরোধ করে ছিলো তার ফেসবুক আইডিতে যেন মেয়েটিকে ব্লক না করে। কিন্তু ছেলেটি তাও শুনলো না । মাঝে মাঝে মেয়েটি চিৎকার করে কাদে তাও ছেলেটিকে অভিশাপ দেয় না। সবসময় ছেলেটির জন্য দোয়া করে আল্লাহ যেন তাকে ভালো রাখে সুস্থ রাখে। মেয়েটির জন্য ছেলেটির ভালোবাসা সারাজীবন থেকে যাবে । কিন্তু ছেলেটি কখনোই মেয়েটির ভালবাসা বুঝবে না। ভালথাকুক সকলের ভালোবাসার মানুষ।
সর্বশেষ একটি কথাই বলবো .. প্রেমের পাখি সবার বুকে মানে না পোষ অবুঝের মতো তোমাকেই কেন বা দেব দোষ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




