৩) ভ্রমন করতেঃ
মানুষ কয়েকটি কারনে দেশ ভ্রমন করেন।তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঐতিহাসিক স্থান, ধর্মীয় স্থাপনা,লেক,হ্রদ,সমুদ্র সৈকত,বন-জঙ্গল,পাহাড়-পর্বত,মিউজিয়াম,জলপ্রপাত,সভ্যতা,স্থাপত্য কীর্তি,প্রাচীর,ব্রীজ,শহর,টাওয়ার,বিল্ডিং,রোড,কালচার-সংস্কৃতি,আবহাওয়া-জলবায়ু দর্শন করা ।সকলের রুচি ও আকর্ষন এক নয় । নতুনত্ব বা পরিবর্তন আনার জন্য ,একঘেয়েমী দুর করতে এবং নির্মল আনন্দ পেতে মানুষ ভ্রমন করেন ।তুলনামুলক আর্থিকভাবে শক্তিশালী দেশের ধনীরা বেশী দেশ ভ্রমন করেন । উন্নত বিশ্ব বিশেষ করে ইউরোপ,আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের মানুষ বছরের ৯মাস কাজ করে ।বাকী প্রায় ৩ মাস ভ্রমন করেন । ঐ ৯ মাসে অল্প করে হলেও শুধু মাত্র ভ্রমনের জন্য কিছু টাকা সঞ্চয় করেন । দেশ ভ্রমন করা অনেকের নিকট নেশার মত ।দেশ ভ্রমন মানুষের জ্ঞানার্জনের অন্যতম মাধ্যম । দেশ ভ্রমনের মাধ্যমে মানুষের যে জ্ঞান অর্জিত হয় সেটা স্থায়ী ও উপভোগ্য হয় ।অনেক বিখ্যাত পর্যটক আছেন যারা বিশ্বের অনেক দেশ ভ্রমন করেছেন ও দেশ আবিস্কার করেছেন ।এখানে মরোক্কোর পর্যটক ইবনে বতুতার নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য ইতিহাস জানার জন্য ।পুর্বে মানুষ অনেক কষ্ট করে দেশ ভ্রমন করতেন । পায়ে হেটে,ঘোড়ায় চড়ে,নৌকা বা জাহাজে করে । ঐসব ভ্রমন ছিলো খুবই ঝুকিপুর্ন ।বিশ্বের বিখ্যাত সব স্থান দর্শনে মানুষ ভ্রমনে যান ।কেউ যান যুক্তরাষ্টের নিউইয়র্ক,লাসভেগাস ও স্ট্যাচু অব লিবার্টি ,কানাডার নায়াগ্রা জলপ্রোপাত ,ফ্রান্সের লুভর মিউজিয়াম ও আইফেল টাওয়ার,ইংল্যান্ডের ব্রিটিশ মউজিয়াম ও টেমস নদের লন্ডন ব্রীজ,সুইজারল্যান্ডের স্বাস্থ্যকর পরিবেশের পরশ নিতে,ইটালির কলোসিয়াম,বিখ্যাতসিল্করোড, ক্যারাবিয়ান দ্বীপ,জেরুজালেম,ইউরোপের ভলগা নদী, কাস্পিয়ান সাগর,ব্রাজিলের বিস্তীর্ন প্রাকৃতিক আমাজন জঙ্গল,পেরু-কলম্বিয়ার ইনকা সভ্যতা, মধ্য আমেরিকার মায়া সভ্যতা, আফ্রিকার প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্র দেখতে কঙ্গো- জায়ার -নামিবিয়া- বতসোয়ানায়,মিশরের নীলনদ -পিরামিড,সেইন্ট মার্কস ব্যাসিলিকা ইটালি,হালং বে ভিয়েতনাম,নৃশংস এ্যাটমে ক্ষতিগ্রস্থ হিরোসিমা-নাগাসাকি জাপান,ক্রোশিয়ার নৈসর্গিক দৃশ্য,ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেল,আজমির শরীফ ভারত,পোটালা প্যালেস তিব্বত,জডার্নের ডেড-সী,আরবের পবিত্র মক্কা-মদিনা,বিশ্বের সর্বোচ্চ বিল্ডিং দুবাইয়ের বুর্জখলিফা,ইরাকের হযরত আলীর(রাঃ)মাজার,ভারতের তাজমহল,তীর্থ স্থান গয়া-কাশি,নেপালের হিমালয় পর্বত,চীনের প্রাচীর,বাংলাদেশের দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত-সুন্দর বন,থাইল্যান্ডের ফুকেট -পাতায়া,মালয়শিয়ার ল্যাংকাউ ,ইন্দোনেশিয়ার বালি ও ইস্ট জাভা দ্বীপ,পাপুয়া নিউগিনির সংস্কৃতি, ফিজির সংস্কৃতি,মেক্সিকোর ঐতিহ্য, রেডইন্ডিয়ান জাতি,এস্কিমোজাতি,অস্ট্রেলিয়ার অপেরা হাউজ দেখা সহ প্রচুর রিসোর্ট আছে যা দেখতে লোক বিদেশ ভ্রমনে যান ।একঘেয়েমী দুর করতে,বাস্তব জ্ঞানার্জন ও নির্মল আনন্দ পেতে তাই মানুষ বিদেশে যায় । সাধারণত অনুকুল আবহাওয়া ও নিরাপদ সময় ভ্রমন করে থাকেন ।এ ছাড়া পিপাসা মিটাতে পর্যটকরা প্রাই সারা বছর ভ্রমন করেন । বাংলাদেশের ও অনেক ব্যক্তি অনুরুপ বিদেশ ভ্রমন করেন প্রতিনিয়ত ।
৪) ট্রেনিং নিতেঃ
সরকারী বেসরকারী পযর্অয়ে জ্ঞানার্জন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য মানুষ বিদেশে যান ।ট্রেনিং প্রচলিত পড়া লেখার মত হলেও মুলত পুথিগত বিদ্যার চেয়ে প্রয়োগিক দিকটা বেশী ।ট্রেনিং সাধারনত নির্দিষ্ট লোককে ও নির্দিষ্ট কাজে তুলনামুলক স্বল্প সময় দেওয়া হয় ।বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চতর গবেষনা ও শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করে দক্ষতা অর্জন করার জন্য ট্রেনিয়ের এর ব্যবস্থা করা হয়।অর্জিত দক্ষতা বাস্তবে প্রয়োগের দ্বারা দেশ-জাতির সেবা করা ও মানব কল্যান করা হচ্ছে ট্রেনিং এর উদ্দেশ্য । ট্রেনিং এর অন্যতম বিষয় হচ্ছে বিজ্ঞান প্রযুক্তি,চিকিৎসা,কৃষি-খাদ্য,শিক্ষা,অর্থনীতি,পরিবেশ,মানব সম্পদ উন্নয়ন,ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা, কারিগরী দক্ষতা,প্রচার মাধ্যমের উন্নয়ন,সাংবাদিকতায় দক্ষতা,কলকারখানা-ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়ন,মার্কেটিংয়ে দক্ষতা,আন্তর্জাতিক রিলেশন উন্নয়নে,ভাষা গবেষনা, শিক্ষা গবেষনা,,আবহাওয়া-জলবায়ু গবেষনা,সুষ্ঠভাবে দেশ পরিচালনা,সমাজ উন্নয়ন,পল্লী উন্নয়ন, প্রখর কুটনৈতিক জ্ঞান,নৌ বিদ্যা,সমরাস্ত্র বিদ্যা,আকাশ বিদ্যা,ব্যাংক-বীমা বিষয়ে দক্ষতা,বিনোদনের মানোন্নায়ন ,শিল্প-সংস্কৃতির উন্নয়ন,চলচিত্র উন্নয়ন,খেলাধুলার দক্ষতা,ব্যবসা-বানিজ্যের উন্নয়ন,পরমানু গবেষনা,ক্ষেপনাস্ত্র উন্নয়ন, টেলিযোগাযোগ ও কমিউনিকেশন উন্নয়ন,মহাকাশ গবেষনা,বস্ত্র গবেষনা,আমলা ও নিবাহীদের দক্ষতা ,সশস্ত্রবাহিনীদের প্রশিক্ষন,সমবায়ের উন্নয়ন, আভ্যন্তরীন নিরাপত্তা কর্মীদের প্রশিক্ষন,ফায়ার সার্ভিস–সিভিল ডিফেন্সের উন্নয়ন,বিদ্যুৎখাতের উন্নয়নে,অবকাঠামো উন্নয়নে,খনিজ সম্পদ উন্নয়নে,জলজ সম্পদ ও সুপেয় পানির উন্নয়নে,আইন বিষয়ে প্রশিক্ষন সহ প্রচুর বিষয় আছে যা অর্জন করতে মানুয় বিদেশে যায় ।প্রশিক্ষনের খরচ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী সাধারণত বহন করে ।সরকারী কাজে গেলে সরকার বহন করে ।অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দাতা গোষ্ঠী বহন করেন ।কিছু ক্ষেত্রে জাতিসংঘ সাহায্য করে থাকে ।এ ছাড়া দেশী বিদেশী এন,জি,ও মাঝে মধ্যে দক্ষতা অর্জনে বিদেশে ট্রেনিং নিতে কর্মীদের পাঠান ।ব্যক্তিগত ভাবেও সামান্য কিছু লোক ট্রেনিং নিতে বিদেশে যান । কারন ট্রেনিং প্রাপ্তদের সুযোগ সুবিধা স্বাভাবিক ভাবে একটু বেশীই থাকে । বাংলাদেশ থেকে একটি বড় অংশ তাই প্রতিনিয়ত ট্রেনিং নিতে বিদেশে যায় ।
বাকী অংশ--৩ (পরবর্তীতে)--- চলবে ----
বিদেশ নিয়ে যত কথাঃ বাকী অংশ---৩ (পর্ব-১)
পুর্বের অংশ দেখতে নিম্ন লিঙ্ক
বিদেশ নিয়ে যত কথাঃ ১ম অংশ ( পর্ব-১ )
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৪