বিশ্বের প্রায় ২০-৩০ টা কোম্পানী, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনাগার যে ভাবে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে ....হয়ত খুব সহসাই সুখবর আসবে যে মানুষের শরীরের করোনা ভ্যাকসিন পরীক্ষার পর স্ট্রং ইমিউন রেসপন্স পাওয়া গেছে...। ওয়াশিংটন অন্গরাজ্য ভ্যাকসিন গবেষনা সবচেয়ে এগিয়ে আছে..।অলরেডি প্রথম সাইকেলে ইনজেকশন করা হয়েছে, প্রথম সাইকেল এর পর, দ্বিতীয় বার বুস্টার শট দেওয়া হয়েছে গত সপ্তাহে (অবশ্য বুস্টার শট দেওয়াতে আমার একটু সন্দেহ হচ্ছে যে প্রথম সাইকেলে হয়ত এত স্ট্রং রেসপন্স পাওয়া যায় নি যাতে বুস্টার দিতে হচ্ছে অথবা এন্টিবডি তৈরী হচ্ছে কিন্তু স্হিতিশীল না)...তবে আরো অনেক ভ্যাকসিন এ বুস্টার শট লাগে...টিটেনাস প্রতি ১০ বছর পর পর বুস্টার শট দিতে হয়..।
ইফেক্টিভ ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট তৈরী করেছে পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীর যেটা একটা স্কিন প্যাচ এর মাধ্যমে দেওয়া হবে...উনারা ইদুরে প্রয়োগ করে সফল হয়েছেন.....আশা করছি ইমার্জেন্সী বিবেচনায় সব ভ্যাকসিন গুলি কম রেগুলেশন এর মাধ্যমে তাড়াতাড়ি অনুমোদন পাবে...
আশার কথা হল করোনা ভ্যাকসিন তৈরী হলে, সেটা তার জিনোম বিন্যাস (single strand plus RNA) এর ফলে, খুব সহজেই মিউটেট হয়ে ভ্যাকসিনকে পরাজিত করতে পারবে না যেটা ফ্লু ভাইরাস করে থাকে যার জন্য প্রতি বছর ফ্লু ভ্যাকসিন নিতে হয় তাতেও ১০০% কাজ করে না..।যেমন এ বছরের ফ্লু ভ্যাকসিন মাত্র ২৮% ইফেক্টিভ...তার কারন ফ্লু ভাইরাস এর জিনোম হল -segmented genome। আট টা ডিফারেন্ট সেগমেন্টে সে তার জিন গুলিকে বিন্যাস করে রাখে....কারো শরীরে যখন দুইটা ফ্লু ভাইরাস ঢুকে, তখন দুজনেই মহা আনন্দে তাদের সেগমেন্ট গুলিকে নিজেদের মধ্যে অদল বদল করে নতুন বিন্যাস নিয়ে বের হয়ে আরেক জন কে এটাক করে তখন সেই ফ্লু ভাইরাস প্রায় সম্পুর্ন ডিফারেন্ট ...হয়ত ভ্যাকসিন বানানো হয়েছিল তার আগের বিন্যাস এর বিরূদ্ধে...নতুন বিন্যাস এর ফ্লুকে ভ্যাকসিন দ্বারা তৈরী এন্টিবডি চিনতেই পারে না....অনেকটা পুলিশ এর কাছএ চোর ধরার জন্য ক্রিমিনালের ছবি আছে কিন্ত ক্রিমিনাল মাথা কামিয়ে, দাড়ি/গোফ, প্লাস্টিক সার্জারী করে নিজের চেহারাই বদলায়ে ফেলল...।পুলিশ আর চোর ধরবে কিভাবে...চিনতেই পারে না!!!!!
কিন্তু করোনা ভাইরাস এর একটা মাত্র সেগমেন্ট জিনোমের....।সো নো অদল বদল...সামান্য কিছু পরিবর্তন হতে পারে তবে সেটা ফ্লু এর মত ব্যাপক না ...তাই একবার ভ্যাকসিন তৈরী হলে..।সেটা দীর্ঘস্হায়ী হবার সম্ভাবনাই বেশি.... করোনা তার চেহারা বদল করতে পারে না ফ্লু ভাইরাসের মত এত ইফিসিয়েন্টলি...
ফ্লু এর জিনোম আকা আছে ৮ টা পাতায়....যখন পাশাপাশি দুইটা ফ্লু ভাইরাস তার জিনোম কপি করতে যায় এই আট পাতা প্রায় mix (assortment) হয়ে নতুন স্ট্রেইন র ফ্লু হয়ে যায় কিন্তু করোনার জিনোম আকা আছে মাত্র একটা পাতায় ...পাশাপাশি দুটা করোনা ভাইরাস থাকলেও পাতায় পাতায় অদল বদল হওয়ার চান্স নাই বললেই চলে....যদিও হয় সেটা হতে হবে খুব সুক্ষ ভাবে ..। এক পাতার অংশ ছি্ড়ে, অন্য পাতাকে ঠিক সেই অংশই ছিড়ে অদল বদল করতে হবে যাতে জোড়া দেওয়ার পর আবার একটা পাতাই হয় আর সেটা হ্ওয়ার কোন সম্ভাবনাই নাই...তাই এক সেগম্যান্টের মাঝে কিছু মিউটেশন হয়ে থাকে কিন্তু সেটা ভ্যাকসিন কে অকার্যকর করতে অপরাগ বহুাংশে.....।
এখানে দেখুন কিভাবে সোয়াইন, বার্ড, মানুষের ফ্লু সেগমেন্ট অদল বদল করে, নতুন প্রজাতির ফ্লু তে পরিনত হল
এর অপজিটে দেখুন করোনার ভিতরে একটা সেগম্যান্টে জিনোম (আরএনএ)
অবশ্য আরেকটা প্রবলেম আছে এখনও...যদি এইডস রোগের ভাইরাস এইচআইভি এর মত মানুষের শরীরে যদি কোন স্ট্রং ইমিউন রেসপন্স না করে, তাহলে এইচআইভি তে যেমন এখনও কোন ভ্যাকসিন বের হয় নাই...করোনার ভ্যাকসিন ও অধরাই রয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:২০