somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাদাকালো যুগের রক্তলাল অপরাধ : বাঁকাউল্লার দপ্তর - বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম ক্রাইম কাহিনি

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাঁকাউল্লার দপ্তর
বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম ক্রাইম কাহিনি

সম্পাদনা - মাহবুবুল ইসলাম

হাবিলকে খুনের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রথম অপরাধের সূচনা করেছিল তার ভাই কাবিল৷সেই ছিল শুরু৷ তারপর থেকেই ছোট, বড়, নৃশংস, ঘৃণ্য নানা সময়ে, নানা অপরাধে রক্তাক্ত হয়েছে পৃথিবী আর কলংকিত হয়েছে মানুষের ইতিহাস৷ আর সেলুলয়েডের সাদাকালো ফিতায় প্রামাণ্য হয়েছে কিম্বা বইয়ের সাদা পাতায় কালো অক্ষরে বর্ণিত হয়েছে সেইসব অপরাধের উপাখ্যান৷

গোয়েন্দাপীঠ লালবাজার, কাঠগড়ার মানুষ কিম্বা মোস্ট ইনফেমাস মার্ডারস এর মত বইগুলোতে বিবৃত অপরাধের ঘটনাগুলো যেন আমাদের চেনাজানা সময়ের, পরিচিত গন্ডির, সমাজের কিম্বা সংস্কৃতির৷

তবে সেই সময়ের অপরাধের চিত্র কি ছিল, যে সময়ের ইতিহাস আমাদের কাছে কুয়াশাচ্ছন্ন? সুদূর অতীতের খুনীরা কেমন ছিল? সে সময়ে অপরাধের পেছনে মনস্তত্ব কি ছিল? কেমন ছিল সেই সময়ের আইন? আইনের বাহকেরা? গোয়েন্দারা? সেকেলে পুলিশী কৌশলই বা কতটুকু কার্যকর ছিল কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি কিম্বা টেকনোলজি ছাড়া?

বাঁকাউল্লার দপ্তর এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোজার জন্য সুদূর অতীতের দিকে মুখ করা ছোট্ট একটি জানালা৷ সেই যুগের অপরাধ আর গোয়েন্দা পুলিশের ক্ল্যাসিক দ্বৈরথের ক্ল্যাসিক একটি বই৷

সাদাকালো গোয়েন্দা -
ব্রিটিশ অধীনস্থ ভারতবর্ষে প্রথম পুলিশী ব্যাবস্থা চালু হয় উনবিংশ শতাব্দীতে৷সেই ব্যাবস্থারই একটি পদবী - দারোগা৷ যার ক্ষমতা, এখতিয়ার, সম্মান প্রতিপত্তি ছিল সেই আমলেই বেশ ঈর্ষণীয়৷ ইংরেজ কমিশনার সাহেব নিজেই যাচাই করে বাংলা মুলূকের শিক্ষিত আর চৌকস তরুণদের দারোগাগিরিতে ভর্তি করে নিতেন৷ সেই সময়েরই এক দারোগা বরকতউল্লাহ খা অথবা বাঁকাউল্লা খাঁ৷ তার বই অনুযায়ী তাকে চিত্রিত করা যায় অসাম্প্রদায়িক, সাহসী একজন মানুষ হিসেবে৷

তখন ঠগীদের যম হেনরী স্লীম্যান সাহেবের যুগ৷ কলকাতার এক মাদ্রাসায় উচ্চশিক্ষা শেষ হতে না হতেই বাঁকাউল্লা পরীক্ষা দিয়ে দারোগা পদে টিকে যান৷ আর এই বইটি তার চাকুরী জীবনে মুখোমুখি হওয়া বারটি রোমহর্ষক, অদ্ভুত আর সুকৌশলী অপরাধের কাহিনী৷

রহস্যময় লেখক -
বাঁকাউল্লার এই ঘটনাগুলো কি তিনি নিজেই লিখেছেন কিনা কিম্বা না লিখে থাকলে কে অনুলিখন করেছেন, তাও এক রহস্য৷ ১৮৫৫ সালে এই দারোগা সাহেবের ঘটনার মত কিছু ঘটনা পুরান পুলিশি ফাইল থেকে নিয়ে ইংরেজীতে ছাপা হয়৷ ইতিহাস গবেষক শ্রী
অশোক ধর এর মতে এই বইয়ের লেখিক কালীপ্রসন্ন নামক একজন পুরনো আমলের লেখক, আবার আরেক গবেষক মৃণাল বসু বলেন, বাঁকাউল্লা আর বরকতউল্লাহ এক ব্যাক্তি নন।"সত্যি গোয়েন্দার সন্ধানে" শীর্ষক প্রবন্ধে তিনি লিখেন - এই গল্প গুলো আসলে মুন্সী বাঁকাউল্লা নামক সে যুগের এক এসিস্ট্যান্ট কমিশনারের গল্প৷তবে লেখক যেই হোক না কেন - গল্পগুলো সত্য আর সুলিখিত৷

সেকেলে অপরাধ -
আজ থেকে দেড়শ দুইশ বছর আগের কথা৷ লর্ড হেস্টিংসের আমল৷ সেই যুগের অপরাধের খুন খারাবীর ব্যাপকতা অনুধাবন করে বাঁকাউল্লা লিখেছিলেন - "সে বড় বিষম কাল৷ চুরি ডাকাতি জাল জুয়াচুরি খুন জখমের ত কথাই ছিল না৷ তখনকার লোক একটা মানুষের প্রাণনাশ করিতে মশকবধের দ্বিধাও অনুভব করিত না"৷- এ কথাগুলো যেন অতীতের আবরণে বর্তমান অস্থির সময়েরই প্রতিচ্ছবি৷

প্রতিশোধের ব্রত -
এক সমাবেশে নজরদারি করতে ছদ্মবেশে বাঁকাউল্লা দারোগা আস্তানা গাড়লেন এক ধর্মগুরুর আখড়ায়৷ ঘটনাচক্রে তার প্রতিবেশি হোল এক সম্ভ্রান্ত গৌরাঙ্গ ব্রাক্ষন হরিশচন্দ্র, যার ডানহাত বাহুমূল থেকে কাটা৷

হঠাত সে গ্রামে খুন হয়ে গেল এক নারী৷ খুনির হদিস নেই৷ মোটিভ অজানা৷ তারপর আরেকগ্রামে খুন আরেক তরুনী বিধবা৷ একই কায়দায় খুন৷ নিখুত ভাবে গলা কাটা৷সব খুনের আশেপাশে দেখা যেতে লাগল সেই হরিশ আর তার পাহাড়ী চাকরকে৷ তদন্তে
নামলেন বাঁকাউল্লা৷ ঘটনার ঘনঘটায় উন্মোচিত হোল প্রতিশোধ স্পৃহার এক ভয়ংকর আখ্যান৷ দীর্ঘ পরিকল্পনায় একে একে তিন বোন আর বোনের স্বামীকে হত্যা করে এক ব্যার্থ প্রেমিকের প্রতিশোধের ব্রত পালন করার কাহিনী৷

জালিয়াত মাফিয়া -
নবীন নবেসেন্ধা৷ এলাকার প্রভাবশালী গণ্যমান্য ধর্মভীরু একজন লোক৷ কিন্তু রাতের আধারে সে এক দুর্ধর্ষ জালিয়াত চক্রের প্রধান৷ উপরওয়ালার আদেশে এই মাফিয়া চক্রের পিছু নিলেন বাঁকাউল্লাহ৷ ছদ্ম পরিচয়ে ঢুকে পড়লেন নবীনের আস্তানায়৷ জান বাজি রেখে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও আইনের ফাক গলে ঠিকই বের হয়ে গেল সে৷ বলপ্রয়োগ কিম্বা পুলিশী কৌশলেও কাবু হোলনা নবীন৷ এ যাত্রা হেরে গেলেও হাল ছাড়লেন না দারোগা সাহেব৷ এই জালিয়াত চক্রের শেষ দেখতে অধ্যাবসায়ের জাল বিছালেন বাঁকাউল্লাহ৷

কলংকমোচন -
সম্ভ্রান্ত বংশের প্রভাবশালী জমিদার রায় মহাশয়৷ তারই আপন বিধবা বোন গর্ভপাতের কলংকে কলঙ্কিনী৷ জনাকয়েক জেলে তাকে স্নানের সময় গর্ভবতী হিসেবে দেখেছে৷ প্রসবের সময় শিশুর কান্না শুনেছে চৌকিদার৷ পাওয়া গেছে সাতমাসের মৃত শিশুর গলিত লাশ৷ মাটিচাপা দেবার রাজসাক্ষীও আছে৷ এখন শুধু কলংকীনির বিচারের অপেক্ষা৷কিন্তু চৌকস দারোগা বাঁকাউল্লাহর পুলিশী মনে খটকা লাগল৷ কিন্তু এতসব চাক্ষুস প্রমাণের বিপরীতে কিভাবে এক নারীর নিষ্পাপতা আর জমিদার বংশের মান রক্ষা করবেন দারোগা সাহেব?

দেয়ালে গাঁথা প্রতিবাদ -
রূপনগরের প্রতাপশালী আর অত্যাচারী জমিদার ব্রজেন্দ্রবল্লভ রায় দেওয়ানজি৷তার এলাকায় তার কথাই আইন৷ প্রজাদের প্রাণপণ খাটনির ফসল প্রায় পুরোটাই যায় জমিদারের কোষাগারে খাজনার নামে৷ তারপর গরীব প্রজারা নিজেদের ফসলই সুদে কর্জ করে জমিদারের কাছ থেকে৷ এভাবে বাড়তে থাকে সুদ আসলের দুষ্টচক্র৷

একদিন অনাহারে অর্ধাহারে থাকা প্রজাদের ভেতর বিদ্রোহ জেগে উঠল, প্রতিবাদের ভাষা সৃষ্টি হোল সাহসের স্ফুলিংগে৷ তাদের বুদ্ধি আর সাহস দিয়ে পাশে ছিলেন একজন বেণীমাধব ঘোষ৷ ফলশ্রুতিতে জমিদারের চক্ষুশূল৷ একদিন থানায় বিচারপ্রার্থী হয়ে ফেরার সময় জমিদারের পেয়াদারা তুলে নিয়ে গেল মাধবকে৷ পাচ দিনেও আর খুজে পাওয়া গেলনা তাকে৷

তদন্তের ভার পরলো বাঁকাউল্লাহর কাধে৷ শুরুতেই পদে পদে বাধা, সেই আমলের চার হাজার টাকার প্রলোভন! কনস্টেবলকে ব্রাক্ষন জ্যোতিষ পন্ডিত আর নিজে তল্পিবাহক সেজে ঢুকে পড়লেন জমিদারের প্রাসাদে৷ জ্যোতিষের অশুভ ভবিষ্যদ্বাণী ফলে যেতে লাগল আর জমিদারের বুকে চেপে বসতে লাগল আশংকার মেঘ !

ওদিকে জংগলের ধারে প্রাসাদের দেয়াল ঘিরে শেয়াল কুকুরের জটলা ! মৃতদেহের গন্ধ পেয়েছে তারা ...

ধাঁধা -
বৃদ্ধ পিতামহ বাপ মা হারা ছোট্ট বালিকা হারাণীর যাবতীয় সম্পত্তি একজন বিশ্বস্ত অনুচরের জিম্মায় রেখেছিলেন নিরাপত্তার জন্য৷ সেই সম্পদ এতিম বালিকাকে বুঝিয়ে দেবার আগেই ডাকাতের হাতে খুন হয়ে গেলেন বৃদ্ধ! ভরনপোষনের দায়ে সম্পদের খোজে গেলে সেই জিম্মাদার বের করে এক রহস্যময় ত্রিকোণ ছেড়া কাগজ! যার একপাশে লেখা এক অদ্ভুত ধাঁধা! ধাঁধার উত্তর মিলিয়ে দিতে পারলেই জিম্মাদার হারাণীর হাতে তুলে দিবে তার সম্পদ ! আর উত্তর পাওয়া যাবে ছেড়া কাগজের বাকি অংশে !

শুরু হোল বাঁকাউল্লাহর খুনে ধাঁধার উত্তর মেলাবার পালা...

চোর খুজতে ডাকাত –
নামকরা উকিল প্রাণবল্লভ সেনের বাড়িতে বড় অংকের টাকা চুরি হয়েছে৷ অস্বীকার করলেও চুরির দায় পড়ল এতিম ভাতৃপুত্র প্রবোধের ঘাড়ে৷

সে আমলে হাতে হাতে ডাক বিলি হোত৷ তাদের বলত ডাক হরকরা৷ প্রায়ই মানি অর্ডার থাকত তাদের ঝোলায়৷ তাই নিরাপত্তার জন্য দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা করত তারা৷এমনই এক হরকরার দল ডাকাতের কবলে পড়ল৷ ডাকাতদের ফেলে যাওয়া চিঠির স্তুপে পাওয়া গেল একটি চিঠি! প্রেরিত হয়েছে সেই উকিলবাড়ি থেকে!

বাঁকাউল্লাহ পিছু নিলেন হরিদাস নামের এক ধূর্ত খুনে ডাকাতের!

সিন্দুকে মস্তকবিহীণ শব -
বাজারে এক মুদি দোকানের পাশে সাজ সরঞ্জাম আর বড় সড় এক সিন্দুক সহ যাত্রাপালার এক দল এসে হাজির হোল৷ একটা সময় একে একে গায়েব হয়ে গেল সবাই; রেখে গেল সিন্দুক টা৷ পিপড়ার সাড়ি আর সিন্দুক থেকে আসা দুর্গন্ধ - চারপাশে লোক জড়ো করে ফেলল৷ বৃদ্ধ মুদি দোকানি উপায়ান্তর না দেখে থানায় খবর দিল৷ পুলিশ এসে সিন্দুক ভাঙ্গতেই ভেতরে দেখা গেল মস্তক বিহীন এক সম্ভ্রান্ত যুবকের মৃতদেহ !

দৃশ্যপটে হাজির এক ধার্মিক সাধু আর তার চ্যালা! নাকি তারা এক পেশাদার খুনী আর জেলভাঙ্গা ডাকাত? বাঁকাউল্লার কঠিন চ্যালেঞ্জ৷

বহুরূপী ডাকাত -
খা সাহেব বাঁকাউল্লার প্রতিবেশী তাতি পরিবার৷ বখাটে তরুন গোপাল, বিধবা কন্যা সুখময়ী আর স্ত্রী রেখে তারন তাতি পরলোকগত৷
সেই গোপাল তিন মাস ধরে নিখোজ ! ধর্মের বোনের দাবীতে সুখময়ীর বাঁকাউল্লার পায়ে পড়ে অনুরোধ; ভাই কে খুজে এনে দিন!

সেই গোপালের খোজে বের হতেই কে যেন মাথায় বাড়ি দিয়ে বেহুশ করে দিল দারোগা সাহেবকে৷ জ্ঞান ফিরে পেয়ে পিছু নিলেন এক সফেদ দাড়ি ওয়ালা বৃদ্ধের৷ ছুটলেন পূণ্যস্থান কাশীর দিকে৷ নদীপথে উঠল ভয়ানক ঝড়৷ সহযাত্রী এক জটাধারী জ্ঞানী সাধু, সাথে বহু অনুচর৷ আবারো পেছন থেকে আঘাত৷ বাঁকাউল্লাকে ফেলে গেল জল উঠে যাওয়া চরে৷ গোপাল কে খুজতে গিয়ে কি গোলে পড়লেন খা সাহেব?

স্বর্ণশ্বাপদ –
জলঙ্গী নদীতে আতংকের ঢেউ উঠেছে৷ একের পর এক মানুষকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কিছু একটা আর অবিকৃত লাশ ভেসে উঠছে কিছু কাল পরে৷ দিনে দুপুরে চারদিকে মানুষের সামনে থেকে হঠাত ডুবে যাচ্ছে গ্রামের মেয়েরা৷ কিন্তু লাশের গা থেকে নিখোজ হয়ে যাচ্ছে পরিধেয় গয়না৷ জাল ফেলে নৌকায় টহল দিয়েও কোন কিছু চিহ্নিত করা যাচ্ছেনা৷ এ কেমন ভয়ানক রহস্যময় কুমীর?

জলঙ্গীর তীরে হাজির হলেন বাঁকাউল্লাহ৷ সাথে গয়নায় মোড়ানো চার জন ছদ্মবেশী নারী গোয়েন্দা৷ জ্যান্ত টোপ ফেলে শিকারীর চোখে নদীতে লক্ষ রাখছেন লুকিয়ে থাকা খা সাহেব৷

ওই তো !! দূরে দেখা যাচ্ছে কালো এক খুনে কুমীরের অবয়ব...

নৃশংসতার আখ্যান -
কৃত্তিমতার আধিক্যহীণ সময়ে, পুরনো যুগের মানুষদের সহজ জীবন যাপনের চিত্রে মনে হয় - সেই সময়ের মানুষগুলোও যেন সাদা কালোর মতই নিস্তরংগ !!

অথচ ইতিহাসের কালো অধ্যায় গুলো পড়লে বোঝা যায় - নৃশংসতায় আর কূট কৌশলে কোন যুগের মানুষই কোন যুগ থেকে কম যায়না৷

প্রতাপশালী নীলকর সাহেব জন্সন আর তার দেশী কর্মচারীদের সাথে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ আরেক জমিদার নরহরিবাবু আর তার প্রজাদের সাথে৷ এর মধ্যেই নীলকর সাহেবের প্রধান কর্মচারী উমোকান্তকে ডুবিয়ে হত্যার চেষ্টা ব্যার্থ হোল৷দন্ডপ্রাপ্ত হোল জমিদারের বেশ কয়েকজন প্রজা৷

খর্বশক্তির জমিদার জমির দখল বজায় রাখতে মরিয়া৷ এদিকে নীলকর জন্সনও লাঠিয়াল পাইক পেয়াদা জড়ো করে শক্তিশালী আঘাত হানতে উদ্যত৷

এই দ্বন্দের মাঝেই রচিত হোল নৃশংসতা, লোভ আর ষঢ়যন্ত্রের কালো এক অধ্যায়৷

কালী মন্দিরে বলি দেয়া হোল ছয় সাত বছরের পরিচয়হীন এক নিষ্পাপ শিশুকে৷খড়িকাঠে পড়ে রইল রক্তে প্লাবিত হয়ে যাওয়া ছিন্ন মস্তক দেহ আর নৈবেদ্য সাজিয়ে রাখা থিকথিকে রক্তে মাখা শিশুটির কাটা মাথা৷

মন্দিরে আটক জমিদার নরহরি বাবু আর তার সাঙ্গপাঙ্গ, বাইরে ঘেরাও নীলকর সাহেব আর তার পাইক পেয়াদা৷

কে দায়ী এই পিশাচ কর্মে? জমিদার আর নীলকরের দ্বন্দে এই হতভাগ্য শিশুটির ভূমিকা কি?

উপসংহার –
এরপর কখনো বাঁকাউল্লা পিছু নেন একদল বর্বর ডাকাতের; যারা প্রতিবেশী বৃদ্ধ গৃহস্বামীকে ফুটন্ত ঘিয়ের কড়াইয়ে ফেলে আর বৃদ্ধাকে মশালের আগুনে ঝলসে লুটে নিয়েছিল তাদের জমানো সম্পদ৷ অল্পের জন্য খুন হয়ে যাওয়া থেকে বেচে ফিরেই আবার কখনো পিছু নেন টাকাভর্তি সিন্দুক লুটে নেয়া জলদস্যুর৷

এভাবেই শেষ হয় দারোগা বাঁকাউল্লার দুর্ধর্ষ অভিযানের বারোটি অধ্যায়৷

চিরায়ত সাহিত্য আর ক্রাইম থ্রিলারের অসাধারণ যুগলবন্দী এই বইটি বই পড়ুয়াদের জন্য অবশ্যপাঠ্য৷
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×